ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে তরুণদের করণীয়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে তরুণদের করণীয়। নিয়ন্ত্রণযোগ্য হলেও বিশ্বে প্রতিদিনই বাড়ছে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পৃথিবীতে মোট মৃত্যুর নবম কারণ এ রোগটি।

সম্প্রতি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দেয়া লকডাউন নিষেধাজ্ঞা ও বাসা থেকে কাজ করার ফলে বেশিরভাগ মানুষের জীবনযাপনেই অনেক পরিবর্তন এসেছে। কিছু মানুষ জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন, কিন্তু কেউ কেউ বাসায় থেকে দীর্ঘসময় কাজ করার ফলে শারীরিক কার্যক্রম কমে গেছে। সেই সঙ্গে অপর্যাপ্ত ঘুম, বাড়তি মানসিক চাপ ও অনিয়মিত খাবারের ধরনের কারণে ওজন বেড়ে যাওয়া ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়েছে অনেকের।

এ অবস্থায় এটা জানা জরুরি যে, কারা ঝুঁকিতে আছেন, এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো কী এবং পূর্বপ্রস্তুতি নিতে হবে কীভাবে।

বর্তমানে তরুণ ও মধ্যবয়সীদের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার যেসব রিস্ক ফ্যাক্টর আছে সেগুলো হলো: পরিবারে কারো ডায়াবেটিস থাকা, শারীরিক পরিশ্রম কম করা, ধূমপান করা, অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করা, অপর্যাপ্ত ঘুম, বাড়তি মানসিক চাপ, উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা, উচ্চ কোলেস্টেরল, এবং পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রম বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকা।

বারবার প্রস্রাবের বেগ আসা ডায়াবেটিসের একটি লক্ষণ, কারণ এ সময়ে শরীর বাড়তি গ্লুকোজ বের করে দিতে চায়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে যেহেতু বারবার প্রস্রাবের সমস্যায় ভুগতে হয় ফলে তৃষ্ণাও পায় বেশি।

শরীরের বিভিন্ন কোষে যেহেতু চিনির পরিমাণ কমে যায় ফলে শরীরও শক্তি পায় কম। ফলে ক্লান্তি ও অবসাদ বেশি হয়।

আবার ডায়াবেটিসের কারণে যেহেতু কোষগুলো পর্যাপ্ত গ্লুকোজ শোষণ করতে পারে না, শরীর শক্তি গ্রহণ করে জমে থাকা চর্বি থেকে।ফলে ওজন অনেক কমে যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগেই নিতে পারেন কিছু পূর্বপ্রস্তুতি। খাবারের তালিকা থেকে পরিশোধিত শর্করা ও চিনি বাদ দিয়ে দিন। এগুলো শরীরে চিনির পরিমাণ বাড়াতেই থাকে, যেটা পরবর্তীতে ডায়াবেটিস ডেকে আনে। পরিশোধিত শর্করার পরিবর্তে জটিল শর্করা যেমন গোটা শস্যদানা, ওটমিল ও শাকসবজি যোগ করুন খাবারের তালিকায়।

সিগারেট পান করা ছেড়ে দিন। সিগারেটের কারণে ইনসুলিন তৈরিতে বাধা সৃষ্টি হয়।ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। ধূমপান ছাড়লে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।

নিয়মিত ব্যায়ামও ভালো কাজ দেয় এক্ষেত্রে। শারিরীকভাবে সচল থাকা এবং বেশিক্ষণ বসে না থাকা কাজে আসতে পারে। হাঁটা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, যোগব্যায়াম করতে পারেন দিনে অন্তত ৩০ মিনিট।

অনেক বেশি পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।তাতে ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে আর পেটও ভালো থাকবে। খাবাবে পর্যাপ্ত আঁশ থাকলে ইনসুলিন অকেজো হয়ে পড়া রোধ করে এবং রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

একটু সচেতন থাকলে তরুণ বয়সেই নিজেকে অসুস্থতার বেড়াজালে দেখতে হবে না।

Leave a Comment

error: Content is protected !!