ঈশ্বরগঞ্জে অফ-সিজনে তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা

ঈশ্বরগঞ্জে অফ-সিজনে তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ঈশ্বরগঞ্জে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অফ-সিজনে তরমুজ চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। তরমুজ গ্রস্মকালীন ফল হলেও ঈশ্বরগঞ্জে অফ-সিজনে তরমুজের ব্যাপক চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো।

উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে পতিত জায়গায় সর্জান পদ্ধতিতে উপজেলার বড়জোড়া গ্রামে প্রায় ১০একর জমিতে সুগার কুইন জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে।

সরেজমিন মাঠে গিয়ে দেখা যায় কৃষকের তৈরী মাচার নিচে শতশত তরমুজ ঝুলে রয়েছে। তরমুজের ওজন রক্ষার্থে নেট ব্যাগ দিয়ে মাচার সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। বালাই মুক্ত রাখতে তরমুজ বাগানে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ বসানো হয়েছে। এতে পোকা মাকড়ের হাত থেকে তরমুজ গুলো রক্ষা পাবে এবং ফলগুলো হবে বিষ মুক্ত। লতানু গাছের তরমুজ গুলোর গায়ের রং কালো, ভিতরে টকটকে লাল। খেতে খুব সুস্বাদু।

উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সোহেল রানা জানান, সারা বছর জল ও স্থলে পতিত জায়গায় মাটি কেটে বেড তৈরী করে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজের চারা রোপন করা হয়।  চারা গুলো বেড়ে উঠার জন্য বেডের পাশে পানির উপর মাচা তৈরী করে দেয়া হয়। চারা রোপণের ৩০দিনের মাথায় ফুল ও ফল ধারণ করে এবং ৪৫থেকে ৫০দিন পর ফল পরিপক্ক হয়।

হারুয়া ব্লকের বড়জোড়া কলিয়াকান্দা গ্রামের কৃষক হেলিম মড়ল জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে আমরা ছয়জন কৃষক মিলে উপজেলায় সর্বপ্রথম মালচিং পেপার ব্যবহার করে তরমুজ চাষ শুরু করেছি। মালচিং পদ্ধতি কৃষকদের শাক সবজি উৎপাদনে একটি আধুনিক প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সবজি জাতীয় ফসল আবাদ করলে আগাছা হয়না। গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। পোকা মাকড়ের আক্রমণও কম হয়। গাছ সুস্থ সবল হয়, ফলন হয় বেশি।

তরমুজ চাষী সামিরের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ৭০শতক জমিতে সিনজেনটার সুগার কুইন জাতের তরমুজের চারা রোপন করেছেন। রোপনকৃত গাছ গুলোতে তরমুজ ধরতে শুরু করেছে। প্রতি ১০ শতক জমিতে তরমুজ চাষে ব্যয় হয়েছে ১৫হাজার টাকা। এতে আয় হবে প্রায় ৫০হাজার টাকা। এ হিসেব অনুযায়ী তিনি ৭০শতক জমি থেকে ৩লক্ষ ৫০হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তরমুজ চাষী আমানুল্লাহ জানান, জমিতে ধান পাট চাষ করতে যে খরচ হয় তরমুজ চাষে খরচ হয় তার অর্ধেক মুনাফা হয় বেশি। তাই তিনি ৪৫শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তাকে অনুসরণ করে একই গ্রামের কৃষক শাহ জাহান ১০শতক, শফিকুল ইসলাম ৩৩শতক, নজরুল ইসলাম ১০শতক ও নিজগাঁও এর শান্ত মিয়া ৪০শতক জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, তরমুজ একটি অর্থকরী ফসল। এই ফল ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। তরমুজে ৯৬শতাংশই পানি। এ ফলে ম্যাগনিশিয়াম, পটাসিয়াম, ভিটামিন এ, সি, ভিটামিন বি-৬ এর চমৎকার উৎস যা মস্তিস্ক সচল রাখে। অর্থনৈতিক ভাবে বেকার যুবক ও কৃষককে স্বাবলম্বী করে তুলতে তরমুজ চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।#

Leave a Comment

error: Content is protected !!