ঈশ্বরগঞ্জে লাম্পি স্কীন রোগের প্রাদুর্ভাব। সপ্তাহের প্রতি কর্মদিবসেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক তাদের লাম্পি স্কিন ডিসিসে (LSD) (পিণ্ডময় চর্ম রোগ) আক্রান্ত গরু-বাছুরের চিকিৎসা নিতে উপজেলা প্রাণী হাসপাতালে ভিড় করছেন। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিন কৃষক নির্ভর করছেন পল্লী চিকিৎসকদের ওপর।
এ রোগের প্রাদুর্ভাবে গরু-বাছুরকে সুস্থ করতে ব্যয়বহুল চিকিৎসায় বেগ পেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ ভাইরাসবাহিত এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করার ওপর জোড় দিচ্ছেন। এ চিত্র ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার।
জানা গেছে, প্রায় দুই বছর পূর্বে সুদূর আফ্রিকায় প্রথম এ রোগের আক্রমন লক্ষ্য করা যায়। পরে ভাইরাসবাহিত এ রোগটি আমাদের দেশে ছড়ায়। বর্তমানে উপজেলার ১১ ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে লাম্পি স্কিন রোগ আক্রমন করেনি। আক্রান্ত গরু-বাছুরের সংখ্যা প্রায় কয়েক হাজার। আক্রান্ত গরু সুস্থ হলেও শরীরের দাগ মুছতে সময় লাগে দীর্ঘদিন। এমতাবস্থায় লোকসানের বোঝা বইতে হচ্ছে অনেককে।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ওই রোগে আক্রান্ত গরুর প্রথমে জ¦র আসে এবং সমস্ত শরীরে গুটি গুটি আকারে ফুলে যায়। গুটি ফেটে গেলে নিয়মিত চিকিৎসার পরও সুস্থ হতে দেড় থেকে দুইমাস সময় লাগে। গত ঈদের আগে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০টি আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা দিতে হয়েছে। ঈদের পর আক্রান্তের হার কিছুটা কমেছে।
উপজেলার পস্তারি গ্রামের আল মামুন বলেন, ‘গরুর চিকিৎসা করতে প্রাণী হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ডাক্তার ওষুধ লিখে দিছে কিন্তু দাম ম্যালা’।
দত্তপাড়া গ্রামের ইন্নছ আলী ও নওপাড়া গ্রামের খাইরুল ইসলাম জানান, ‘ভাই গরুর চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়েছে। আবারো হাসপাতালে ডাক্তারকে দেখালাম’।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু হানিফ জানান, এ উপজেলায় লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আমরা নিয়মিত চিকিৎসার পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করার ওপর জোর দিচ্ছি।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ হাসপাতালে চিকিৎসার মূল দায়িত্বে থাকা ভেটেরিনারি সার্জনের পদটি দীর্ঘদিন যাবৎ খালি থাকার পরও আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। আর আক্রান্ত গরুকে আলাদা করে রাখতে, বিশেষ করে জীবাণুবাহী মশা-মাছির মাধ্যমে সুস্থ গরু যাতে আক্রান্ত না হয় এ ব্যাপারে নিয়মিত নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।