কিন্ডারগার্টেন-স্কুল, তোয়াক্কা নেই নিয়ম-নীতির

মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতিতে অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও থামানো যাচ্ছে না যত্রতত্র কিন্ডারগার্টেন গড়ে তোলার প্রবণতাকে। বরং এই পরিস্থিতিতে অনুমোদনহীন এসব প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা লাগামহীনভাবে বেড়েছে।

সরকারের সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, সাড়ে ৩০০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল অনুমোদন পেলেও গজিয়ে উঠেছে হাজার হাজার। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ছোট পরিসরে শুরু করলেও এখন স্কুল অ্যান্ড কলেজ নাম দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কার্যক্রম।

বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি এসব কিন্ডারগার্টেনের কোনো কোনোটি ইংরেজি মাধ্যমও চালু করেছে। সেখানে প্লে-গ্রুপ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে। অথচ অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানেরই সর্বোচ্চ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর কথা।

ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠান পাড়া-মহল্লায় চটকদার ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আসছে। এসব বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হয়ে অভিভাবকরাও তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তুলে দিচ্ছেন কিন্ডারগার্টেনগুলোর সংশ্লিষ্টদের হাতে। অস্বাস্থ্যকর ঘিঞ্জি পরিবেশে চলছে ক্লাস-পরীক্ষা। নেই পর্যাপ্ত শিক্ষকও।

যারা এসব কিন্ডারগার্টেনে পাঠদান করছেন, তাদের অধিকাংশই আবার কলেজপড়ুয়া। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কথা বলে দিনের পর দিন তাদের দিয়েই চলছে ক্লাস-পরীক্ষা।

জানা গেছে, পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনে এসব কিন্ডারগার্টেনের অনুমোদন না থাকলেও অন্য স্কুলের নামে তারা রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নিজেদের শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষায় বসাচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভুঁইফোঁড় এসব স্কুলে ভর্তি হয়ে কোমলমতি শিশুরা শিক্ষাজীবনের শুরুতেই যথাযথ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনভিজ্ঞ শিক্ষক, সঠিক সিলেবাসের অভাব এবং উপযুক্ত গাইডলাইন না থাকায় মানসম্মত শিক্ষার ছিটেফোঁটা পাচ্ছে না তারা। ফলে উচ্চস্তরে গিয়ে ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। দ্রুত এ সংক্রান্ত আইন বাস্তবায়ন না হলে কিন্ডারগার্টেনের নামে লাগামহীন ‘শিক্ষাবাণিজ্য’ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না।

ইচ্ছেমতো ভর্তি ফি, টিউশন ফি আদায়

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর উত্তর শ্যামলীর ১৮৬ ভূঁইয়া গলিতে গড়ে তোলা হয়েছে ‘কর্ডিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। চারতলা একটি আবাসিক ভবনের নিচতলা ভাড়া নিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। অন্ধকারাচ্ছন্ন চারটি কক্ষে চলে ক্লাস-পরীক্ষা। বাংলা ও ইংরেজি, দুই মাধ্যমই চালু রয়েছে এখানে। সারা বছরই শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়।

স্কুলের ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, টিনশেড বাড়ির মতো সারিবদ্ধ চারটি কক্ষ। সেখানেই দুটি শিফটে প্লে-গ্রুপ থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হয়। মোট শিক্ষার্থী তিন শতাধিক। তবে শিক্ষক মাত্র সাতজন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী। শ্রেণিকক্ষ ছোট হওয়ায় শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসতে হয়। ইচ্ছেমতো ভর্তি ফি, টিউশন ফি নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ। পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বাইরেও তিন থেকে পাঁচটি বই অতিরিক্ত পড়ানো হয়। সেজন্য বাড়তি ফিও আদায় করা হয়।

কর্ডিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি বিষয়ের ক্লাস করান মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার। তিনি এইচএসসিতে পড়া অবস্থায় এ স্কুলের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। আইরিন আক্তার নামে অন্য একজন শিক্ষক অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি ষষ্ঠ থেকে এসএসসি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গণিত, বিজ্ঞান, রসায়ন, বায়োলজি, উদ্ভিদবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা বিষয়ের ক্লাস নেন।

আইরিন আক্তার বলেন, ‘সপ্তাহে পাঁচদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সাত থেকে আটটি ক্লাস নিতে হয়। মাসে বেতন হিসেবে পাঁচ হাজার টাকা পাই। তবে এ স্কুলে ক্লাস করানোর চেয়ে টিউশনি করিয়ে বেশি টাকা আয় হয়। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে টিউশনি করিয়ে ৮-১০ হাজার টাকা আয় হয়।’

স্কুলের শ্রেণিকক্ষে বসে কথা হয় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে। ক্লাসে কী পড়ানো হয় জানতে চাইলে রুমা জানায়, সে নিয়মিত স্কুলে আসে। প্রতিদিন ক্লাস করে।

গাদাগাদি করে বসায় ক্লাসে পড়া বুঝতে পারে না জানিয়ে রুমা বলে, ‘স্যার-ম্যাডামরা অনেক কিছু পড়ায়। তবে আমরা বুঝতে পারি না। শিক্ষকরা পড়ানোর সময় সবাই হইচই করে। একটু পেছনে বসলেই আর স্যারদের কথা বোঝা যায় না। পরে প্রশ্ন করলেও স্যাররা আর বুঝিয়ে দেন না।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানের অফিসে গেলে মো. খলিলুর রহমান নামে একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি নিজেকে কর্ডিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ পরিচয় দেন। তিনি বলেন, ‘স্কুলে জায়গা কম বলে দুই শিফটে ক্লাস নেওয়া হয়। সকালে বাংলা মিডিয়ামের প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ক্লাস করানো হয়। বিকেলের শিফটে ইংরেজি মাধ্যম ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হয়।’

নিজেরাই পাঠ্যক্রম তৈরি করেন জানিয়ে খলিলুর রহমান বলেন, ‘১৪ বছর ধরে স্কুলটি চলছে। তবে এখনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে আমরা আগারগাঁও আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে জেএসসি ও এসএসসি রেজিস্ট্রেশন করিয়ে থাকি। অনুমোদিত আরেকটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাধ্যমে এইচএসসির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করাই। কাগজপত্র অনুযায়ী শিক্ষার্থী আমাদের প্রতিষ্ঠানের নয়। তবে ক্লাস-পরীক্ষা এখানেই হয়।’

ঠিক একইভাবে মিরপুর-১১ নম্বরের ১৪ নম্বর সড়কে চলছে ‘মীরপুর ইম্পীরিয়্যাল স্কুল’। লোভনীয় অফারে সেখানে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে। প্লে-গ্রুপ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত চালু রয়েছে সেখানে। স্কুলটিতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে স্কুলটির কোনো অনুমোদন নেই। শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন আশপাশের কয়েকজন নারী এবং এইচএসসি ও অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরজুড়ে এখানে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। ইচ্ছেমতো নিজেরাই তৈরি করেন সিলেবাস। ফিও নির্ধারিত নয়। যার থেকে যেমন খুশি অর্থ আদায় করা হয়। তবে প্রাথমিকে সর্বনিম্ন ৮০০ টাকা এবং মাধ্যমিকে এক হাজার ৪০০ টাকা টিউশন ফি আদায় করা হয়ে থাকে। খেলাধুলার জায়গা না থাকলেও ফি রয়েছে। এছাড়া আইডি কার্ড, সেশন চার্জ, নোট-গাইড ফি আদায় করা হয়।

‘মীরপুর ইম্পীরিয়্যাল স্কুল’র অনুমোদন না থাকায় জেএসসি ও এসএসসি শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করানো হয় এমপিওভুক্ত ‘মিরপুর আদর্শ বিদ্যা নিকেতনে’। গেল বছর স্কুলটি থেকে জেএসসিতে ১১২ জন ও এসএসসিতে ৫৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। সবাই মিরপুর আদর্শ বিদ্যা নিকেতনে রেজিস্ট্রেশন করেছিল।

স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল করিম নিজেই দখল করে আছেন অধ্যক্ষ পদ। তিনি বলেন, ‘মিরপুর এলাকায় কয়েকশ স্কুল আছে, যাদের কোনো অনুমোদন নেই। তারা ফ্ল্যাট বাড়ি ভাড়া করেই কার্যক্রম চালাচ্ছে। সেগুলোতে প্লে-গ্রুপ থেকে এইচএসসি পর্যন্ত পড়ানো হচ্ছে। এখানে আপাতত এসএসসি পর্যন্ত চালু করেছি।’

রেজাউল করিম বলেন, ‘ভালো কয়েকটি স্কুলের সিলেবাস দেখে আমরা সিলেবাস তৈরি করে থাকি। শিক্ষার্থী ভর্তিতে কখনোই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করি না। এখানে টিউশন ফিও কম নেওয়া হয়। ফলে শিক্ষার্থী সংকট হয় না। সরকারিভাবে তাদের প্রাথমিক থেকে নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় ১৮ বছর ধরে স্কুলটি চলছে। অনেক চেষ্টা করেও কোনো ধরনের অনুমোদন মেলেনি। সরকারের সব শর্ত পূরণ করেছি। তবুও অনুমোদন মিলছে না।’

টিনশেডের চারটি কক্ষে ক্লাস নেওয়া হলেও মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি তার।

‘দেশে ৬০ হাজারের বেশি এমন স্কুল গড়ে উঠেছে’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীতে অসংখ্য এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজে ভালো মানের শিক্ষক ও শিক্ষার অনূকূল পরিবেশ না থাকায় শিক্ষার্থী ভর্তি হয় না। অথচ কৌশলে সেসব প্রতিষ্ঠান অনুমোদন করিয়ে নিয়েছে। তারা এমপিওভুক্ত হওয়ায় যেসব সুবিধা পাচ্ছে, তা টিকিয়ে রাখতে অনুমোদনহীন স্কুলগুলো থেকে শিক্ষার্থী ধার করছে। অন্য স্কুলের শিক্ষার্থী দিয়ে তারা শর্তপূরণ করে বছরের পর বছর স্কুল চালাচ্ছে। অধীনস্থ এসব স্কুলগুলোকে অনুমোদনপ্রাপ্তরা ফিডিং স্কুল নামে অভিহিত করে থাকে। শুধু মিরপুরেই এ ধরনের অর্ধশতাধিক স্কুল-কলেজ রয়েছে।

সরকারি নজরদারি না থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ খোদ বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহজাহানের।

তিনি বলেন, ‘সারাদেশে আগে হাতে গোনা ৫০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল খুঁজে পাওয়া যেতো না। এখন দেশে ৬০ হাজারের বেশি এমন স্কুল গড়ে উঠেছে। সেখানে দুই কোটি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। কিন্ডারগার্টেন মূলত প্রাথমিক শিক্ষার জন্য। অথচ সেখানে অবৈধভাবে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘অনুমোদনহীন এসব স্কুল যুগ যুগ ধরে চললেও দেখার কেউ নেই। থানা পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাও জানেন না, তার এলাকায় কতটি কিন্ডারগার্টেন চলছে। সেগুলোর মধ্যে কতটির অনুমোদন আছে, কতটি অবৈধ কিছুই জানা নেই তাদের। অনুমোদন ছাড়া স্কুলগুলোতে সরকারিভাবে পাঠ্যবই বিতরণ করা হচ্ছে। এতে তারা আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ বন্ধ করতে একাধিকবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে (ডিপিই) জানানো হলেও তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত এমন ভুঁইফোঁড় স্কুলের সংখ্যা বাড়ছে।’

‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান’

অবৈধভাবে অলিগলিতে গড়ে ওঠা কিন্ডারগার্টেন-স্কুলের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘এ পর্যন্ত সারাদেশে সাড়ে তিনশোর মতো কিন্ডারগার্টেন-স্কুলকে অস্থায়ী-স্থায়ীভাবে প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকটি অনুমোদনের জন্য যাচাই-বাছাই চলছে। শর্ত পূরণ হলে তাদের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ঢাকা মহানগরসহ জেলা শহরের অলিগলিতে অনুমোদন ছাড়া কিন্ডারগার্টেন স্কুল গড়ে উঠছে। সেখানে মাধ্যমিক পর্যন্ত চালু করার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আইন না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষা আইনের খসড়ায় এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। আইন বাস্তবায়ন হলে অবৈধ স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অন্ধকার ফ্ল্যাট বাড়ির মধ্যে দুই-তিনটি রুমের মধ্যে গড়ে ওঠা কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষার্থীরা কী শিখছে জানলে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব জি এম হাসিবুল আলম বলেন, ‘যেসব স্কুলের অনুমোদন নেই তাদের তো জবাবদিহিও নেই। নিজেদের ইজচ্ছামতো চালায়। এগুলো মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বানানো হয়েছে। সারাদেশে এদের সংখ্যা নির্ণয় করা হচ্ছে। অতিসত্বর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হবে।’

শেখানোর প্রক্রিয়া শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের সহনীয় হওয়া উচিত

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জন্মের পর থেকে শিশুরা বাড়িতেই থাকে। যেটুকু শেখার তা পরিবার থেকেই শেখে। কিন্ডারগার্টেনে তাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শুরু হয়। স্কুলে পা দিলেও তাদের মনে পারিবারিক পরিবেশই বিরাজ করে। অনুকূল পরিবেশই তাদের শিক্ষাজীবনের মূলভিত্তি। ফলে সেখানে শিক্ষার পরিবেশ, শেখানোর প্রক্রিয়া শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সহনীয় হওয়া উচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ তারেক আহসান বলেন, ‘কিন্ডারগার্টেনে যে মানের শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছেন, তাদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে সবসময়ই প্রশ্ন উঠেছে। তারা না বুঝেই বাচ্চাদের অতিরিক্ত চাপ দেন। মুখস্ত বিদ্যার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। ক্লাসে যখন তারা বাচ্চাদের পড়ান, পাঠ্যবই রিডিং পড়ানোই যেন তাদের একমাত্র কাজ। হাতে-কলমে শেখানোর বিষয়গুলোও তারা লাইন বাই লাইন মুখস্ত করান। ক্লাসে নিরানন্দ পরিবেশে তারা পড়িয়ে থাকেন।’

তিনি বলেন, ‘এসব স্কুলে শিশুদের ওপর রীতিমতো টর্চার (নিপীড়ন) করা হচ্ছে। অথচ এর ছিঁটেফোটাও ধারণা করতে পারছেন না অসচেতন অভিভাবকরা। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। ২০১৩ সালে প্রণীত শিক্ষা আইন বাস্তবায়ন করা গেলে, তা বহুলাংশে বন্ধ করা সম্ভব হবে।’

সূত্রঃ মুরাদ হুসাইন, নিজস্ব প্রতিবেদক জাগো নিউজ

Leave a Comment

error: Content is protected !!