হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। রবিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তাকে গ্রেফতারের সময় প্রায় দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিল। আশঙ্কা ছিল তাকে গ্রেফতারের পর মাদরাসার শিক্ষার্থী ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়বে পুলিশ। তবে তা হয়নি। খুব স্বাভাবিকভাবেই মামুনুল হককে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে পুলিশ। তবে মামুনুল হককে নিয়ে আসার সময় হেফাজতের কর্মীরা মাদরাসার সামনে বিক্ষোভ করে।
দুপুর পৌনে ২টার দিকে মামুনুল হককে গ্রেফতারের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মো. হারুন-অর-রশিদ।
ডিসি হারুন বলেন, মোহাম্মদপুর থানার একটি ভাঙচুর ও নাশকতার মামলায় তদন্ত চলছিল। তদন্তে হেফাজত নেতা মামুনুলের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সুস্পষ্ট হওয়ায় আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
এছাড়া বায়তুল মোকাররম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হাটহাজারীর ঘটনার পর থেকেই তিনি নজরদারিতে ছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে আপাতত মোহাম্মদপুর থানার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
তাকে আদালতে নেওয়া হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আগামীকাল সোমবার তাকে আদালতে নেওয়া হবে। তবে রিমান্ড চাওয়া হবে কি না তা ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, মামুনুলের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে তাণ্ডবের ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া, সম্প্রতি দেশজুড়ে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়েরকৃত অনেকগুলো মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুল হক।
যে মামলায় গ্রেফতার হলেন মামুনুল হক
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের পর তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয়েছে। আজ রবিবার ( ১৮ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পর মামুনুল হককে প্রথমে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে কিছু সময় রাখার পর তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয়। এর আগে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ২০২০ সালে মোহাম্মাদপুরে একটি ভাঙচুরের মামলায় মামুনুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা আছে মতিঝিল, পল্টন, নারায়ণগঞ্জে।
পরে সেগুলো সমন্বয় করা হবে। কাল সোমবার মামুনুলকে আদালতে তোলা হবে।এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, মামনুল হককে দীর্ঘদিন ধরেই নজরদারিতে রাখা হচ্ছিল।
তেজগাঁও পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, মামুনুলকে তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক মোদিবিরোধী আন্দোলনের সময়ও সহিংসতা করায় একাধিক মামলায় মামুনুল হকের নাম রয়েছে। প্রথমে তাকে পুরনো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।