তালিকা পাঠান নিজেরাই জেলে যাব: বাবুনগরী

গ্রেপ্তারে অভিযান না চালিয়ে অভিযুক্তদের তালিকা পাঠাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, তিনিই নিজেই সবাইকে নিয়ে জেলে যাবেন।

সাম্প্রতিক তাণ্ডব ও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে অবস্থানকে ঘিরে সহিংসতার মামলায় সংগঠনের ১৬ জন নেতা গ্রেপ্তারের পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটির প্রধান।

বৃহস্পতিবার পাঠানো এই বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘দেশের নিম্ন আয়ের গরিব মানুষকে আর হয়রানি ও কষ্ট না দিয়ে আমার কাছে তালিকাটা পাঠান, আমি অভিযুক্তদের সকলকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে জেলে চলে যাব; একজন পুলিশও পাঠাতে হবে না।’

বাবুনগরী বলেন, ‘গণপ্রতিরোধ ও প্রতিবাদ ছাড়া সহজে আলেম ওলামাদের গ্রেপ্তারের জন্য লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে সরকার সমগ্র দেশবাসীকে কষ্ট দিচ্ছে।

নিজেরা কারাগারে যাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর বিনিময়ে আপনারা লকডাউন তুলে নিন। লকডাউনের অজুহাতে জোর, জবরদস্তি করে যে সকল মাদ্রাসা ও হেফজখানা বন্ধ করে কুরআন-হাদিসের চর্চা বন্ধ করে দিয়েছেন, ওগুলো খুলে দিন, যাতে কুরআন-হাদিসের ব্যাপক চর্চার বরকতে দেশের উপর আল্লাহর রহমত নাযিল হয়।’

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আরও বেশি মানুষের মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউন দেয়া হলেও বাবুনগরী দাবি করেন, তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

লকডাউন প্রথমে দেয়া হয় ৫ এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত দেয়া হয় কঠোর লকডাউন। এরপর তা তারও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়।

তাণ্ডবে দুঃখ প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে উল্টো সুর

গত সোমবার রাতে ভিডিও বার্তায় ২৬ মার্চ তাণ্ডবের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করলেও এই বিবৃতিতে আবার উল্টো কথা বলেন বাবুনগরী। হেফাজতের আন্দোলন সব সময়ই শান্তিপূর্ণ ছিল দাবি করে তিনি বলেন, ‘ভবিষতেও তাই থাকবে।’

‘বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করা দেশবাসীর সাংবিধানিক অধিকার’-এ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কোনো সরকারই জনগণের এই মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। কথিত তাণ্ডব ও ভাঙচুর -এর অভিযোগে সারাদেশে গত আট বছরে যত মামলা হয়েছে, তার সবই অবৈধ, ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা।’

রিমান্ডের পরিবেশ নিয়ে আপত্তি

যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদেরকে যে পরিবেশে রাখা হয়েছে, সেটি গ্রহণযোগ্য নয় বলেও দাবি করেন হেফাজত আমির। বলেন, ‘আমার এই সকল সহকর্মী হযরতগণ হাজতের নোংরা পরিবেশে স্বাচ্ছন্দে গোসল করতে, অজু করতে, নামাজ আদায় করতে, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করতে, সেহরি খেতে ও ইফতার করতে পারছেন না। এসব জুলুম, বর্বরতা, মানবতার অপমান দেখে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নাখোশ হবেন।

‘এই রমজান মাসে রিমান্ডে নেয়া আলেম ওলামাদেরকে বিধর্মী এবং অবিশ্বাসীদের দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করাবেন না। তারা এই সকল হযরতদের সঙ্গে খুবই নিষ্ঠুর ও অপমানজনক আচরণ করছে। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন এসব বরদাস্ত করবেন না।’

Leave a Comment

error: Content is protected !!