যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটি নির্বাচনে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং প্রথম মুসলিম নারী কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েছেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মেয়ে শাহানা হানিফ।
মঙ্গলবার নিউ ইয়র্ক সিটি নির্বাচনে সিটি কাউন্সিলের ৩৯তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে নির্বাচিত হন শাহানা। এই কাউন্সিলেই পড়েছে ব্রুকলিনের বাংলাদেশিসহ স্প্যানিশ ও ইহুদি অধ্যুষিত কেনসিংটন, পার্ক স্লোপ এবং সেন্ট্রাল ব্রুকলিন।
বোর্ড অব ইলেকশন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটের ৮৯ শতাংশ পেয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী শাহানা হানিফ। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির উইনকোফ পেয়েছেন মাত্র ৮ শতাংশ ভোট।
শাহানার বাবা মোহাম্মদ হানিফ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা। তার পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশের চট্টগ্রামে।
নির্বাচনে যারা কাজ করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে শাহানা বলেছেন, “আমি খুবই খুশি এবং গর্বিত নিউ ইয়র্ক সিটির পাঁচশ বছরের বেশি সময়ের ইতিহাসে প্রথম মুসলমান সদস্য হিসেবে এবং ডিস্ট্রিক্ট ৩৯ এ প্রথম নারী হিসেবে জয়ী হতে পেরে।”
সর্বশেষ আদমশুমারী অনুযায়ী নিউ ইয়র্ক সিটিতে মুসলমানের সংখ্যা ৭ লাখ ৬৯ হাজার। শাহানা বলছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সংহত করাই হবে তার লক্ষ্য।
“ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা ইতোমধ্যে বর্ণ-বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মোর্চা গঠন করেছি, ধর্ম এবং জাতিগত সম্প্রীতির বন্ধনকে সুসংহত করার পথে রয়েছি।
“আমরা তেমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে চাই যেখানে সকলেই নিরাপদে পথ চলতে সক্ষম হবে। শিক্ষায় থাকবে না কোনো বৈষম্য।”
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সিটি কাউন্সিলের নতুন এই সদস্য বলেন, “ভয়ঙ্কর যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা দূর করতে সক্ষম হব সকলে আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে।
“আমরা এমন একটি সিটি গড়তে চাই যেখানে অভিবাসীরাও নিজের নিরাপদ আবাস ভূমি ভাবতে সক্ষম হবেন। নির্বাচন শেষ হয়েছে বলে নীরব হয়ে থাকলে চলবে না। সকলকে সজাগ ও সরব থাকতে হবে নিজ নিজ অধিকারের প্রশ্নে।”
শাহানা হানিফের বিজয়ে উল্লাস করেছেন নিউ ইয়র্কে বসবাসরত প্রবাসীরা। দলমত-নির্বিশেষে সকলেই তাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এ নির্বাচনে সিটি মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন এরিড এডামস। তিনি হবেন এই সিটির ইতিহাসে দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ মেয়র।