পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চুক্তি: প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

প্রেক্ষাপট: পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত অঞ্চল। মোগল আমল থেকে (১৬৬৬ থেকে ১৭৬০ সাল) যা কর্পাসমহল নামে পরিচিত ছিল এবং ব্রিটিশ আমলে তা Chittagong Hill Tracks সংক্ষেপে CHT নাম ধারণ করে। অঞ্চলটি পার্বত্য ও জঙ্গলাকীর্ণ হওয়ায় দুটি কারণে বিভিন্ন উপজাতিরা অত্র অঞ্চলে আগমন করে এবং বসবাস শুরু করে।

প্রথমত দুর্গম ও বিশেষ ব্যবস্থায় বসবাস, চাষাবাদ, জীবিকা অর্জন ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত নিচু ও ভালো ভূপ্রকৃতি, চলাচলের উপযোগী বিধায় দুর্গম পাহাড়ে বসবাসে অভ্যস্ত বিশেষ সম্প্রদায়ের লোকেরা ত্রিপুরা, মিজোরাম, আসাম, আরাকান ইত্যাদি অঞ্চল থেকে এই অঞ্চলে এসে প্রথম বসবাস শুরু করে। দ্বিতীয়ত আরকান রাজ্যের অস্থিরতা, যুদ্ধবিগ্রহের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে আগমন। এর মধ্যে ১৭৮৪ সালে বার্মার (মধ্যবার্মা) রাজা বাদপায়ার আরাকান রাজ্য আক্রমণ ও রাজ্য দখল অন্যতম। এই যুদ্ধের ফলে অনেক উদ্বাস্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয় নেয়।

বিশেষ করে, আরাকান থেকে খুমি, চাকমা ও মারমাদের আগমন উল্লেখযোগ্য। ইংরেজ শাসনামলে (১৭১০ সাল থেকে) এই দুর্গম অঞ্চলে খাজনা আদায়ের জন্য চাকমা সার্কেল, মারমা সার্কেল ও বোমাং সার্কেল নামে তিনটি ভাগে বিভক্ত করে এবং প্রত্যেক সার্কেলে একজন করে চিফ নির্ধারণ করে দেয়, যা ব্রিটিশ আমলের রাজ্য প্রথারই শামিল।

পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর, ১৯৪৭ সালে স্নেহ কুমার চাকমা রাঙ্গামাটিতে ভারতের পতাকা উড়িয়েছিলেন। আবার ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানো হয়েছিল। চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় (বর্তমান চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের পিতা) পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিস্তানে চলে যান। পাকিস্তানে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ ও পরবর্তী সময়ে মন্ত্রিত্বও পান।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ সালে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) গঠন করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে পিসিজেএসএস শান্তিবাহিনী নামে সশস্ত্র শাখা প্রণয়ন করে এবং গোপনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, তত্কালীন বিডিআর, পুলিশ, আনসারসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ১৯৭৬ সাল থেকে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হয়—যা একটি স্বাধীন দেশের ভেতর থেকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ও দেশদ্রোহিতার শামিল। ফলে বহু দেশপ্রেমিক সেনাসদস্য, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, নিরপরাধ বেসামরিক ব্যক্তিবর্গের (আনুমানিক ৩০ হাজার) প্রাণহানি ঘটে।

শান্তিবাহিনী একদিকে যেমন স্থানীয় বাঙালি ও উপজাতিদের জুলুম, নির্যাতন, চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছিল, অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে নিজেদের বিপথে যাওয়ার পথকে আরো সুগম করেছিল। প্রাথমিকভাবে নবগঠিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দুর্গম অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, প্রতিকূল পরিবেশ ও ম্যালেরিয়া, কাউন্টার ইন্সারজেন্সি অপারেশন ইত্যাদি কারণে সেনাবাহিনীসহ নিরাপত্তা বাহিনীর হতাহতের পরিমাণ বাড়তে থাকে।

কিন্তু পরবর্তী সময়ে সরকারের সঠিক দিকনির্দেশনা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালি জনগণের সমর্থন এবং সর্বোপরি কাউন্টার ইন্সারজেন্সি অভিযানে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা ও উপর্যুপরি আক্রমণের মুখে টিকে উঠতে না পেরে শান্তিবাহিনী সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়। সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে তত্কালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা পার্বত্য চুক্তি হিসেবে পরিচিত এবং এই চুক্তির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ ২২ বছরের সশস্ত্র সংগ্রামের কিছুটা পরিসমাপ্তি ঘটে।

পার্বত্য চুক্তি

পার্বত্য চুক্তির চারটি অধ্যায়, সাধারণ, পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ, পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এবং পুনর্বাসন, সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শন ও অন্যান্য বিষয়াবলি। চুক্তিটি পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের স্বতন্ত্র জাতিসত্তা এবং বিশেষ মর্যাদাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। পার্বত্য চুক্তির পর শান্তিবাহিনীর কিছুসংখ্যক সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে। আর্থিক ক্ষতিপূরণসহ জীবিকা অর্জনের জন্য বহু প্রাক্তন শান্তিবাহিনীর সদস্যকে পুনর্বাসন করা হয়।

ইতিমধ্যে সাত শতাধিক অস্ত্র সমর্পণকৃত শান্তিবাহিনীর সদস্যকে পুলিশে চাকরি প্রদান করা হয়েছে। প্রায় ৫০ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত উপজাতিকে তাদের স্বীয় বাড়িতে পুনঃস্থাপন করা হয়। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৩২টি বিষয়াবলির ২২টি জেলা পরিষদকে হস্তান্তর করা হয়েছে। নতুনভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়েছে। পক্ষান্তরে পার্বত্য চুক্তির বিভিন্ন ধারা-উপধারা নিয়ে পাহাড়ি-বাঙালি ও সচেতনমহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন, ১৯৯৮; পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন, ২০০১; পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন (সংশোধিত), ২০১৬ ইত্যাদি প্রণয়ন করা হয়। সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার, উপজাতিদের অংশগ্রহণ, পুলিশ ফোর্স গঠনসহ পার্বত্য চুক্তির বেশির ভাগ (৭২টি ধারার ৪৮টি) ধারা বাস্তবায়ন হলেও কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন ভূমিসমস্যা সমাধান, কার্যকরী জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদ গঠন ইত্যাদি বিষয়ে যৌক্তিক ও আইনগত জটিলতার সৃষ্টি হয়।

চলমান পরিস্থিতি

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ভূকৌশলগত রাজনীতি বহুদিনের পুরোনো। এ অঞ্চলকে পৃথকীকরণ জনগোষ্ঠীর ভারসাম্য বিনষ্টিকরণ এবং ধর্মান্তঃকরণের এই অপচেষ্টা সবই চলমান। পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের চাকরির অভিজ্ঞতায় অনেক কিছু প্রত্যক্ষ করেছি, সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিভক্তিকরণের রাজনীতি কখনো উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার সহায়ক নয়। এই ধারা পরবর্তী প্রজন্মকে পথভ্রষ্ট করতে সহায়ক হচ্ছে এবং হবে, যদি না এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

পার্বত্য অঞ্চল ভূমির প্রকৃতিগত গঠন অনুযায়ী বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ভিন্নতর। দুর্গম ও জঙ্গলাকীর্ণ হওয়ায় এই অঞ্চল বাংলাদেশের মূলধারা ও অন্যান্য জেলা থেকে পিছিয়ে পড়েছিল। তাই বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার। সেই সঙ্গে জাতিগত বৈশিষ্ট্য, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের অধিকারও নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ সরকার।

২০১১ সালে চট্টগ্রামের ২৪ পদাতিক ডিভিশনে চাকরির সুবাদে অনন্য ও বিস্ময়কর এক অভিজ্ঞতা হয়েছিল। স্বচক্ষে দেখেছি বাংলাদেশের স্বনামধন্য কিছু ব্যক্তি, সুশীল সমাজ, INGO, NGO ও বামপন্থি লোকজন টাকার বিনিময়ে কীভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দোহাই তুলে সরকারের ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন। গুইমারার এলাকায় এক ছোট মেয়ের গায়ে লাল রং মাখিয়ে ছবি তুলে তাকে অত্যাচার করা হয়েছে বলে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর কটাক্ষ করা হয়েছিল। ঐসব তথাকথিত মানবাধিকার কর্মীকে যখন সব প্রমাণসহ ঘটনার মূলচিত্র দেখানো হলো, তখন সেসব দেশদ্রোহীদের ষড়যন্ত্র নিমেষেই চুকিয়ে যায়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের আরেকটি মূল সমস্যা হলো ভূমিসমস্যা। পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী সরকার ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন ২০০১ আইন ও তার সংশোধন করে দিয়েছে। ভূমি কমিশন গঠন করা হলেও বিভিন্ন আইনি জটিলতা, কমিশন চেয়ারম্যানের (একমাত্র বাঙালি) ক্ষমতা, ভূমিজরিপ করার সিদ্ধান্ত, বাঙালি ও উপজাতি জনগোষ্ঠীর সুষম প্রতিনিধিত্ব, জমির প্রকৃতি, জমির মালিকানা নির্ধারণ, ইত্যাদি বহুবিধ কারণে কমিশন অদ্যাবধি কোনো কাজ করতে পারেনি এবং ভূমি সমস্যারও সমাধান হয়নি। সরকার সারা বাংলাদেশের ভূমি জরিপ করতে পারলেও বিভিন্ন বাধার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমিজরিপ এখনো করতে পারেনি।

আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও রয়েছে দ্বিধাবিভক্ত পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। মতানৈক্যের মূল কারণ অর্থ-সম্পত্তি ও তত্সম্পর্কিত ক্ষমতা লাভ। চাঁদাবাজির ব্যাপ্তি পাহাড়ি নিরীহ কলাবিক্রেতা থেকে শুরু করে দোকান, যানবাহন, বাঁশবিক্রেতা, কন্ট্রাক্টর, কৃষক, পেশাজীবী পর্যন্ত বিস্তৃত। একসময় এই চাঁদার টাকা অঞ্চলভিক্তিক প্রতিনিধির মাধ্যমে উত্তোলিত হলেও বর্তমানে চাঁদা আদায়ের নতুন মাধ্যম হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে বিকাশ, নগদ ও রকেটের মতো প্রযুক্তি।

১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তির অধিকাংশ ধারা বাস্তবায়ন করার কথা ছিল সরকারের, যার অধিকাংশ ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। পক্ষান্তরে চুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দুটি ধারা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়। এক. সব অস্ত্র জমা দেওয়া। দুই. সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা। দুটি শর্তের মধ্যে তারা একটি শর্তও পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করেনি।

বিপরীতে পার্বত্য চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সংখ্যা কমে যাওয়াতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, ঐ সব অঞ্চলে এই আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সুযোগ নিচ্ছে চাঁদাবাজির। জেএসএস শীর্ষ নেতারা অধিপত্য বিস্তার ও চাঁদা আদায়ের দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে চারটি সশস্ত্র গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। জেএসএস (মূল), জেএসএস (সংস্কার), ইউপিডিএফ (মূল) ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)। চাঁদা আদায়ের দ্বন্দ্বে এই সশস্ত্র গ্রুপগুলো সুযোগ পেলেই অন্য দলের কর্মী-সমর্থকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে।

প্রত্যাশা

এক-দশমাংশে এই পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা কোনো পরিস্থিতিতেই আপস করা যায় না। বাংলাদেশের কোনো অংশকেই বিদেশি সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল করতে দেওয়া যাবে না। একই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরের কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে পাহাড়ি সন্ত্রাসী অথবা পার্শ্ববর্তী দেশের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে হাত মিলাতে দেওয়া যাবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত উপজাতিদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ধর্মীয়, সামাজিক সত্তা রয়েছে। তাদের সত্তার শুধু স্বীকৃতি নয়, চর্চারও সুযোগ দিতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সব জনগোষ্ঠী মিলেমিশে থাকতে হবে। প্রত্যেকে বাংলাদেশের নাগরিক এবং সবার সমান অধিকার থাকবে। পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী যে কোনো নাগরিকের যেমন বাংলাদেশের অভ্যন্তরের যে কোনো সম্পদের মালিক হওয়ার অধিকার আছে, বাংলাদেশের যে কোনো নাগরিকেরও পার্বত্য অঞ্চলে বৈধভাবে সম্পত্তি ক্রয়ের অধিকার রয়েছে। কেননা বাঙালিরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশকে স্বাধীন করেছে।

নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। আঞ্চলিক ক্ষুদ্র বা স্বীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে সব আঞ্চলিক রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষিত সমাজ, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, ধর্মীয় নেতাসহ সব সচেতন নাগরিককে। প্রত্যেকের একটাই লক্ষ্য হওয়া দরকার—কীভাবে সবাই সবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ অঞ্চলের অবকাঠামোগত, সাধারণ নিরীহ মানুষ অস্ত্রের ঝলকানি দেখতে চায় না। ঘুষ, চাঁদা দিতে চায় না। মুখ ফুটে তাদের মনের কথা বলতে চায়। স্বীয় উত্পাদিত পণ্য নির্বিঘ্নে, নিশ্চিন্তে, ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে চায়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পেতে চায় সব নাগরিক সুবিধা। তবেই হবে আমাদের শান্তির পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা সোনার বাংলাদেশ।

লেখক:
মেজর জেনারেল মো. নাঈম আশফাক চৌধুরী
এসবিপি, ওএসপি, এসইউপি,
পিএসসি, পিএইচডি (অব.)

Leave a Comment

error: Content is protected !!