প্রশংসিত ‘বাসায় থাকুন’ ক্যাম্পেইনে বাংলাদেশের মুনিম

আফজালুর ফেরদৌস রুমনঃ সারাবিশ্ব এই সময়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এক ভয়াবহ সময় পার করছে। চীনের উহান শহরে করোনার উৎপত্তি হলেও এর প্রভাব পড়েছে সারাবিশ্বে। দেখতে দেখতে এককথায় পুরো অচল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী।

তবুও করোনার প্রকোপ থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা কোনো দেশই। এরই মধ্যে ত্রিশ হাজারের বেশি মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে এই ভাইরাস। চীন থেকে শুরু হলেও এই ভাইরাসের কারনে আমেরিকা এবং ইউরোপের ইতালি এবং স্পেন এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে।

যেহুতু এখনো কোন প্রতিষেধক আবিস্কার করা যায়নি তাই করোনা মোকাবেলা করার জন্য সারাবিশ্ব লকডাউন নীতিতে চলছে। সব জনগনকে বাসায় থাকতে বলা হচ্ছে যাতে নতুন করে কেউ আক্রান্ত না হয়। ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলো বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান বা আমাদের বাংলাদেশে লকডাউন মানছেন না অনেকেই।

এমনকি হোম কোয়ারেন্টান ব্যাপারটাও প্রবাসীরা মানছেন না। বলা যায় তার কারনেই এই ভাইরাস আজ মহামারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তাই সারাবিশ্বের মানুষকে সচেতন করার জন্য সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষরা নিজ উদ্যোগে এগিয়ে আসছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে নানা রকম ক্যাম্পেইন চালাচ্ছেন সচেতন নাগরিকেরা। ব্যাপারটা এখন কোনো একটি বা দুটি দেশের মধ্য আটকে নেই, সারাবিশ্বেই ঘরে থাকার প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর জন্য নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউ এইচ ও) এর আইসিটি বিভাগ এবং ইউনেস্কোর ‘বাড়িতে থাকুন, নিরাপদে থাকুন এবং জীবন বাঁচান’ নামক ক্যাম্পেইন এরই মধ্যে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সাধারন মানুষদের সচেতন করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর থেকে ‘বাড়িতে থাকার’ আহবান জানিয়ে লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে সবাই অনুরোধ করছেন বিশ্ববাসীকে ঘরে থাকার জন্য।

‘বাড়িতে থাকুন, নিরাপদে থাকুন এবং জীবন বাঁচান’ নামক ক্যাম্পেইনের আন্ডারে ঢাকা থেকে এই কাজটি করছেন মডেল, ডিজাইনার এবং সম্প্রতি অভিনেতা হিসেবে নাম লেখানো মুনিম এহসান। এই বিষয়ে তার অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে তিনি জানান, যেহেতু আমরা জানি যে এই ভাইরাসটি বিশ্বজুড়েই একটি শক্তিশালী চেইন হিসেবে তার প্রভাব বাড়িয়ে তুলেছে। সারাবিশ্বে ১০ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে প্রান হারিয়েছেন।

যেহুতু ওষুধ আবিস্কার করা যায়নি এখনো। তাই কেবলমাত্র আমরা নিজেকে অন্য সকলের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ভাইরাসের চেনটি ভেঙে ফেলতে পারি। তাই এই সময়ে এসে ঘরে বসে থাকার চেয়ে মহৎ আর কোনো কাজ হতে পারেনা। তাই ‘বাসায় থাকুন’ নামক এই হোম ক্যাম্পেইনটির মাধ্যমে প্রত্যেককে কেবল ঘরে থাকার জন্য উৎসাহিত করার একটাই উদ্দেশ্য রয়েছে যাতে আমরা নিজেকে এবং আমাদের প্রিয়জনকে বাঁচাতে পারি। তারই অংশ হিসেবে আমি বিশ্বজুড়ে আমার বন্ধুদের এই প্রচারণা সমর্থন করার জন্য বলেছি। ইতিমধ্যে বিশ্বের প্রায় আট দেশের বিভিন্ন বয়সের, নানান পেশার মানুষ এই ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য আমার পাশে দাড়িয়েছেন। এই প্রচারনার জন্য যারা আমাকে সহায়তা করছেন প্রত্যেকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার একমাত্র হাতিয়ার হচ্ছে বাসায় থাকা, কিছু সময় পরে পরে সাবান পানিতে মিনিমাম বিশ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, হাচি-কাশি শিষ্ঠাচার মেনে চলা এবং সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা। এই সাধারন কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই ভয়াবহ ভাইরাসের থেকে নিজেকে এবং নিজের কাছের মানুষদের বাচানো যাবে। তাই সবাই বাসায় থাকুন, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখুন এটিই হওয়া উচিত একমাত্র উদ্দেশ্য। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, দেশের জন্য এবং আগামীর প্রজন্মের জন্য আজ এই ঘরে থাকা ক্যাম্পেইন সফল করতেই হবে আমাদের।

Leave a Comment

error: Content is protected !!