দেশের ১২টি প্রেক্ষাগৃহে ‘গন্ডি’

আফজালুর ফেরদৌস রুমনঃ গতকাল মুক্তি পেয়েছে এই বছরের বহুল প্রতীক্ষিত ‘গন্ডি’ সিনেমা। ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভুবন মাঝি’ খ্যাত নির্মাতা ফাখরুল আরেফিন খান এই সিনেমা নিয়ে রুপালি পর্দায় ফিরছেন প্রায় তিন বছর পরে। নানা কারণেই ‘গন্ডি’ সিনেমা নিয়ে দর্শকদের মাঝে একটা আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

দুই বাংলার নন্দিত দুই শক্তিশালী অভিনয় শিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা ও ফেলুদা খ্যাত অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী এই সিনেমায় জুটি বেঁধে আসছেন প্রথমবারের মতো। আগ্রহের অন্যতম কারণ ভিন্নধর্মী এক গল্পের আভাস পাওয়া গিয়েছে এই সিনেমায়। ভিন্নধর্মী কনটেন্ট, দক্ষ অভিনেতা-অভিনেত্রী, দক্ষ পরিচালকের মুন্সিয়ানা সব মিলায়ে ‘গন্ডি’ এই দুঃসময়ে এসে আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য এক সুবাতাস হিসেবে গণ্য হবে বলে আশা করা যায়।

গত বছরেই সিনেমাটির শুটিং শেষ হয়েছে। মুক্তির কিছুদিন আগেই সিনেমার পরিচালক ফাখরুল আরেফীন খান ‘গন্ডি’র প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রথমে প্রকাশ করা হয়েছে সিনেমার গান। ‘গন্ডি ছাড়িয়ে বন্ধু দুজন’ শিরোনামের গানটি গড়াই ফিল্মসের ইউটিউব চ্যানেলে ও ‘গন্ডি’ সিনেমার অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে প্রকাশ করা হয়েছে গত ২৯ শে নভেম্বর। গানটির কথা লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের গীতিকার বিশ্বরাজ ভট্টাচার্য। এর সুর-সঙ্গীত করেছেন লয় এবং দীপ। গানটিতে কন্ঠ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের তরুণ কণ্ঠশিল্পী দীপ।

দেশের মোট ১২টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেয়া হয়েছে ‘গন্ডি’। মুক্তির পরে এখন পর্যন্ত যারা যারা সিনেমাটি দেখেছেন তারা সকলেই ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সিনেমাটির। শেষ বয়সে এসেও দুটি মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ একটি সম্পর্কের নানাদিক এই প্রথমবার যেন তুলে ধরা হলো আমাদের দেশে। ভিন্নধর্মী এই গল্পটাই যেন সিনেমার প্রান।

সাথে সব্যসাচী, সুবর্ণা মোস্তফা, মাজনুন মিজান, অপর্না ঘোষ, ঋদ্ধি, আমান রেজা সহ প্রতিটি অভিনেতা অভিনেত্রীর দক্ষ এবং মন জয় করা অভিনয় যেন সিনেমাটিকে আলাদা একটি জায়গায় নিয়ে গেছে। আর পরিচালক ফাখরুল আবেদিনের মুন্সিয়ানা এবং এরকম পুরোপুরি নতুন একটি প্লট নিয়ে কাজ করার সাহসের প্রশংসা না করলেই নয়। সাথে দেবজ্যোতি মিশ্রের মিউজিক ও প্রশংসার দাবিদার। এক কথায় বলা যায় ‘গন্ডি’ পরিবারের গল্প, সমাজের গল্প, দুটি মানুষের বন্ধুত্বের গল্প।

সিনেমাটিতে সব্যসাচী’র ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাজনুন মিজান। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমি এই সিনেমায় সব্যসাচী দা’র ছেলের চরিত্রে আছি যে কিনা সপরিবারে প্রবাসে বসবাস করেন। জীবন সায়াহ্নে বাবার জীবনে একটা ক্রাইসিসের সৃষ্টি হয়, সেখানে আমাদের একটা ভূমিকা ছিলো। কী ভূমিকা ছিলো, কী করেছি, সেসব জানতে হলে প্রেক্ষাগৃহে যেতে হবে সবাইকে। সুন্দর একটি গল্পে সুস্থ ধারার একটি ছবি হচ্ছে ‘গণ্ডি’। এমন একটা গল্পে অভিনয় করতে পেরেছি তার জন্য নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আশা করছি দর্শক প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি দেখে আনন্দ পাবেন।

সিনেমা পরিচালনার পাশাপাশি সংলাপ এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন ফাখরুল আবেদিন নিজেই। প্রযোজনায় ফাখরুল আবেদিন এবং ইশরাত সুলতানা। চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে রানা দাসগুপ্ত। সংগীত পরিচালক হিসেবে আছেন দেবজ্যোতি মিশ্র এবং লয়-দ্বীপ। রোমান্টিক কমেডি ঘরানার গন্ডি সিনেমার কাহিনী ৫৫ ও ৬৫ বছর বয়সী দুজন নারী-পুরুষের বন্ধুত্ব নিয়ে। অবসরে থাকা এই দুজন মানুষের বন্ধুত্ব কেমন হয়।

পরিবার ও আশপাশের মানুষ বিষয়টি কিভাবে নেন এটাই উঠে এসেছে এই চলচ্চিত্রে। সিনেমাতে এই দুটি প্রধান চরিত্রেই অভিনয় করেছেন সুবর্ণা-সব্যসাচী। এছাড়া আরও অভিনয় করেছেন ঋদ্ধি, শুভাশীষ ভৌমিক, মাজনুন মিজান, অপর্ণা ঘোষ, আমান রেজা প্রমুখ।

Leave a Comment

error: Content is protected !!