ভারতে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ

করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত ভারতে জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রথম দফায় ১০ হাজার ইনজেক্টেবল অ্যান্টি-ভাইরাল, ওরাল অ্যান্টি-ভাইরাল, ৩০ হাজার পিপিই কিটস এবং কয়েক হাজার জিংক, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-সি পাঠানো হবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতে করোনা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতির প্রেক্ষাপটে দেশটির জনগণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ভারতকে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তার মধ্যে থাকছে প্রায় ১০ হাজার অ্যান্টিভাইরাল ইনজেকশন ও মুখে গ্রহণের ওষুধ, ৩০ হাজার পিপিই, কয়েক হাজার জিংক, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ট্যাবলেট।

ভারতে মানুষের মৃত্যুতে গভীর দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই সংকটময় সময়ে বাংলাদেশ তার ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের পাশে আছে। ভারতের প্রতি বাংলাদেশ সংহতি জানাচ্ছে। মানুষের জীবন বাঁচানোর সম্ভাব্য সব উপায়ে সহায়তা দিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভারতের জনগণের দুর্ভোগ যাতে লাঘব হয়, সে জন্য বাংলাদেশের জনগণ প্রার্থনা করছে। প্রয়োজনে ভারতকে আরও সহায়তা দিতে বাংলাদেশ আগ্রহী।

করোনায় দিশেহারা ভারতে অক্সিজেন আর চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। বিপর্যস্ত ভারতের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। এরই মধ্যে কয়েক দিন আগে জরুরি ভিত্তিতে ৬ শ’র বেশি মেডিকেল ইকুইপমেন্ট, ৪৯৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ভেন্টিলেটরসহ বিভিন্ন সুরক্ষাসামগ্রী পাঠিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।

ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুরের পাঠানো মেডিকেল সহায়তা ভারতে পৌঁছেছে। করোনা মোকাবিলায় ভারতে সহায়তা পাঠাচ্ছে রাশিয়া। এক ফোনালাপে পাশে দাঁড়ানোয় রুশ প্রেসিডেন্টকে ভ্লাদিমির পুতিনকে এ জন্য ধন্যবাদও জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিউজিল্যান্ড, ফ্রান্সসহ অন্যান্য দেশও ভারতের বিপদে পাশে দাঁড়াতে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।

গেল কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় বুধবারও (২৮ এপ্রিল) করোনায় ভারতে তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় চার লাখ। এর মধ্যে শুধু মহারাষ্ট্রেই একদিনে মারা গেছে রেকর্ড এক হাজার মানুষ। আর তাই রাজ্যটিতে নতুন করে লকডাউনের মেয়াদ ১৫ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৪৫৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ৬৪৭ জন। ভারতে করোনার ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত দেশটিতে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ৮৩ লাখ ৬৮৮ হাজার ৯৬৭ জন এবং মারা গেছেন দুই লাখ চার হাজার ৮১২ জন। আক্রান্তের দিক থেকে দেশটি বিশ্বে দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।

দেশটিতে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৬ জন এবং বর্তমানে আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছে ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৮ জন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!