টাকার সাথে মানুষের মনুষ্যত্ব, সম্পর্ক ও ভালোবাসার পার্থক্য কী?

টাকার সাথে মানুষের মনুষ্যত্ব, সম্পর্ক ও ভালোবাসার পার্থক্য কী? মানুষের মনুষ্যত্ব, সম্পর্ক আর ভালোবাসার সাথে টাকার তুলনা করতে গেলেই ঝামেলায় পড়ে যাবেন। এগুলোর পার্থক্য হলো একদম বিপরিতধর্মী।

১. আপনি টাকা দিয়ে মনুষ্যত্ব কিনতে পারবেন না। কারণ এটা মানুষের স্বভাবের উপর নির্ভর করে। টাকা দিয়ে জামা জুতা বদলানো যায় কিন্তু স্বভাব না।

২. টাকা দিয়ে ভালোবাসা কেনা যায়না তবে মাঝেমধ্যে মাইর কেনা যেতে পারে। মনে করেন কাউকে এক হাতে টাকা দিলেন আর অন্য হাতটা ধরে বললেন “আমি তোমার ভালোবাসা চাই,”তখন মাইর নিশ্চিত পাবেন। মাইর দেয়ার পর অপরাধবোধ থেকে যদি কারো অন্তরে ভালোবাসা জন্ম নেয় তা ভিন্ন ব্যাপার। তখন যদি টাকা দিয়ে কোন গিফট কিনে দেন তাহলে কিন্তু তিনি খুশিই হবেন।

৩. সম্পর্ক… খুব নাজুক একটি ব্যাপার। খুব যত্নে রাখতে হয়। একটু এদিক সেদিক হলে মা মেয়ের সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যায়। এই একটি জায়গায় টাকাটা সমান ভাবে প্রয়োজন। আপনার সাথে সম্পৃক্ত প্রতিটি মানুষের চাহিদা পূরনের জন্য, তাদের ভালো রাখার জন্য টাকা আপনার লাগবেই।

জানেন… টাকা না থাকলে বাবার সম্মান থাকেনা, সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের আদর থাকেনা। এমনটা কিন্তু হওয়ার কথা ছিলোনা অথচ হচ্ছে। আমরা এখন এগিয়ে যাওয়া নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত আর কিছুই আমাদের চোখে পড়েনা। ছেলে ভাবে, আমার বন্ধুর বাবার কতো টাকা। রেজাল্ট নিয়ে ওর ভাবতে হয়না। টেনেটুনে পাস করেই বাবার ব্যবসায় ঢুকে যাবে। আমার কি হবে? আমিও কি বাবার মতো ধুঁকে ধুঁকে চলবো? বন্ধুদের গাড়ি থাকবে আর আমার থাকবেনা? অথচ গাড়ি ছাড়াই বেশির ভাগ মানুষ দিনের পর দিন যাতায়াত করে এবং তারা সুখেই আছে। বাবা-মা ভাবেন, মেয়ের জামাইরা ছেলেদের চেয়ে ভালো। কতো খেয়াল রাখে। টাকা খরচ করে দু’হাতে।

ছেলেগুলো অপদার্থ হয়েছে। এই-যে অপদার্থ ছেলেগুলো, এরাই আপনার। আপনার ছেলেদের যদি একটা কুঁড়েঘর থাকে, ওই কুঁড়েঘরটাই আপনার নিজের। মেয়ের জামাইয়ের কোন কিছু আপনার না। মেয়ের জামাইয়ের যা কিছু আছে তা নিয়ে তার বাবা গর্ব করবেন, আপনি না।

আপনি যদি ছেলেদের ভবিষ্যতের কথা ছেলেরা জন্মানোর পরেই ভেবে নিতেন তাহলে অবস্থা হয়তো আরেকটু বেশি ভালো হতো। আল্লাহ সবার জন্য রিজিক নির্ধারণ করে দিয়েছেন, কারো কম আবার কারো বেশি। যার যা আছে তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়, তাহলে আর অন্যের কি আছে আমার কি নেই তা নিয়ে আফসোস করে হায়হায় করতে হয়না।

ডিম ভাজতে যেমন তেল, লবন, ডিম, ফ্রাইপ্যানের দরকার হয়। জীবনটাও তেমন। টাকা, ভালোবাসা, সম্পর্ক সবকিছুই লাগে। দ্বিধায় পড়ে গেলে একটা ডিম ভেজে খেয়ে নিবেন। ডিম ভাজার সময় কি কি দরকার হলো আর ভাজার পরে কি কি দেখা যাচ্ছে তা একটু খেয়াল করবেন। দেখবেন, সব দ্বিধা চলে গেছে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!