‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ!’

‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ!’ বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাশে ক্ষতবিক্ষত গীতাঞ্জলি হাতে মুখে টেপ আঁটা অবস্থায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ভাস্কর্য স্থাপন করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার সকালে সেই ভাস্কর্যটি সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর শিক্ষার্থীরা সেই স্থানে ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ’ নামে একটি ব্যানার টানিয়ে দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থীর উদ্যোগে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওই ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছিল। ভাস্কর্যে রবি ঠাকুরের মুখে আঁটা ছিল টেপ, হাতে ছিল গীতাঞ্জলি বই, যা পেরেক মেরে বন্ধ করে রাখা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, মানুষের বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্নের প্রতিবাদে এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুক্তচিন্তা ও সৃজনশীলতার প্রতীক। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মানুষকে ভাবতে ও কথা বলতে বাধ্য করবে— এমন চিন্তা থেকে তারা এই ভাস্কর্য নির্মাণ করেছিলেন। ভাস্কর্যটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরিয়ে নেয়ায় তারা ক্ষোভ জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ছাড়া কোনো ভাস্কর্য ঢাবিতে স্থাপন করা যাবে না। শিক্ষার্থীরা এভাবে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথে ঠাকুরের ভাস্কর্য নির্মাণ করে তাকে অপমান করেছেন। এ কারণেই ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি না নিয়ে কারা কবিগুরু রবি ঠাকুরকে নিয়ে রসিকতা করার চেষ্টা করছে, আমরা সেটি জানার চেষ্টা করছি। এটি রবীন্দ্রনাথকে অসম্মান করার একটি কৌশল। যারা এ কাজ করেছে, তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয়। এটি সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ভাস্কর্যটি নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘কে বা কারা ভাস্কর্যটি সরিয়েছে, আমরা জানি না। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরও জানেন না বলে আমাদের জানিয়েছেন। আমরা সন্ধ্যায় থানায় যাব।’

Leave a Comment

error: Content is protected !!