বাপ্পি, সাইমন, আসিফ এবং মাহী’র ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’

আফজালুর ফেরদৌস রুমনঃ সিনেমার এই মন্দার সময়ে যেখানে এফডিসির অনেক প্রতিষ্ঠিত এবং স্বনামধন্য প্রযোজনা সংস্থা হাত গুটিয়ে নিয়েছে সেখানে নতুন প্রযোজক পিয়াল হোসেন তার প্রথম সিনেমা ‘স্বপ্নবাজি’ মুক্তির আগেই দ্বিতীয় সিনেমার ঘোষনা দিয়েছেন।

অবশ্য প্রযোজক হিসেবে নতুন হলেও আমাদের মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ২০ বছর ধরে ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন পিয়াল। তার প্রযোজিত দ্বিতীয় সিনেমা ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’ এ পরিচালক হিসেবে আছেন এই সময়ের অন্যতম আলোচিত এবং দক্ষ নির্মাতা সৈকত নাসির।

কিছুদিন আগেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানা গিয়েছিল প্রথম বারের মতো একটি সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন এই সময়ের আলোচিত অভিনেতা বাপ্পি এবং সাইমন। অবশেষে জানা গেলো সেই সিনেমাটিই হচ্ছে ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’। প্রযোজক পিয়াল জানালেন, ‘আমরা সাইমন আর বাপ্পীকে নিয়ে একটি সিনেমা করতে চাই। এখন গল্প লেখার কাজ চলছে। দুজনই যার যার জায়গা থেকে জনপ্রিয়। তাই সেভাবেই সিনেমার গল্প লেখা হচ্ছে। তবে সিনেমায় বাপ্পি এবং সাইমন থাকলেও গল্পটি তিন নায়ক এবং একজন নায়িকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। বাপ্পি এবং সাইমন ছাড়াও ইউ গট দ্য লুক প্রতিযোগিতা থেকে উঠে আসা মডেল আসিফ আহসান খানও থাকবেন আরেকজন নায়ক হিসেবে।

২০১০ সালে ইউ গট দ্যা লুক বিজয়ী আসিফ তার পড়ালেখা সম্পন্ন করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেখান থেকে ফিরে আবারো মিডিয়াতে কাজ করা শুরু করেন আসিফ। একজন সফল র‍্যাম্প মডেল হিসেবে এরইমধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। এবার সিনেমায় নিজের অবস্থান তৈরী করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন আসিফ। ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’ সিনেমার গল্পটি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যাতে পর্দায় তিনজনের গুরুত্বই সমান থাকে।

সিনেমার নায়িকা হিসেবে এখন পর্যন্ত মাহিয়া মাহী কে ভাবা হচ্ছে। পিয়ালের প্রযোজনায় প্রথম সিনেমা ‘স্বপ্নবাজি’ সিনেমার প্রথম লটের শ্যুটিং শেষ হয়েছে। সেই সুত্র ধরে মাহীর সৌন্দর্য্য এবং চরিত্রের সাথে মিশে আবার অদ্ভুত সুন্দর অভিনয় দক্ষতা মুগ্ধ করেছে পিয়ালকে। তাই নিজের প্রযোজিত দ্বিতীয় সিনেমাতেও নায়িকা হিসেবে মাহীকে নিয়েই কাজ করতে চান তিনি।

অন্যদিকে ২০১৪ সালে ‘দেশা-দ্যা লিডার’ সিনেমা দিয়ে পরিচালক হিসেবে যাত্রা শুরু করেন নির্মাতা সৈকত নাসির। এরপরে ‘পাষান’ নামে আরো একটি আলোচিত সিনেমা উপহার দেন তিনি। সম্প্রতি নিরব-বুবলীকে নিয়ে তার পরিচালিত ‘ক্যাসিনো’ সিনেমার শ্যুটিং সম্পন্ন করেছেন। এই মুহুর্তে কাজ চলছে নব্বই দশকের গ্যাং কালচার নিয়ে ‘আকবর- ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন ঢাকা’ সিনেমার শ্যুটিং। এই সিনেমায় অভিনয় করছেন ইমন-ববি।

সবকিছু ঠিক থাকলে এপ্রিলে কাজ শুরু করবেন ‘মাসুদ রানা’ সিনেমার। একের পরে এক বিগ বাজেটের ভিন্নধর্মী কনটেন্ট নিয়ে সিনেমা পরিচালনার মধ্য দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের আলাদা একটি স্বকীয় জায়গা তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে সৈকত নাসির। তাই ‘লাইফ ইজ বিউটিফুল’ সিনেমা দিয়েও নিজের দক্ষতার ছাপ রাখবেন তিনি একথা বলা যায় নিঃসন্দেহে।

বিভিন্ন গণমাধ্য সুত্রে জানা যায়, সিনেমা নির্মান করার জন্য আমেরিকায় নিজের একটি বাড়ি বিক্রি করেছেন পিয়াল। এই বিষয়ে জানতে চাইলে পিয়াল জানান, আমি সবসময়ই অর্থকড়ির চেয়ে প্যাশনকে গুরুত্ব দিয়েছি। সিনেমার প্রতি ভালোবাসাটা আমার ভিতরে ধারণ করি সবসময়ই। সফল হই বা লোকসান করি যাই হোক এই কাজটাকে আমি একটু বেশি এনজয় করছি।

সিনেমা কোটি টাকা বিনিয়োগ করা এখন অনিশ্চিয়তা, বলা যায় এটা একটা লটারির মতো। এই ইন্ডাস্ট্রিতে এখন টাকা ফেরত আসার সম্ভাবনা কম। সেজন্য যেমন কাজ করলে নিশ্চয়তা আসবে তাই করার চেষ্টা করছি। দর্শকদের পরিতৃপ্তির জন্য কোথাও কোনো ছাড় দিচ্ছিনা। ‘স্বপ্নবাজি’ সিনেমার ড্রেসের জন্যই বাজেট ১৯ লাখ টাকা। এতেই বোঝা যায় যে, ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির গল্প তুলে ধরতে কোনো কার্পন্য রাখেননি তিনি।

একের পর এক হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে আমাদের সিনেমার দর্শক। তবুও দিনবদলের স্বপ্ন দেখে সিনেমাপ্রেমী কিছু মানুষ। ধুকতে থাকা আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নতুন কিন্তু দক্ষ এবং স্বপ্নদেখা তরুনদের হাত ধরেই ফিরে পাবে সোনালি দিন এটাই কামনা। শুভকামনা রইলো এই নবীনদের জন্য।

Leave a Comment

error: Content is protected !!