শিশুর সাথে শিশুর তরে—শরীফুল্লাহ মুক্তি

শিশুর সাথে শিশুর তরে। করোনা মহাসঙ্কটে থমকে আছে গোটা দুনিয়া। পৃথিবীবাসী এখনও জানে না এর শেষ কোথায় বা কিসে এর থেকে মিলবে মুক্তি। করোনার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের কোমলমতি শিশুরা- আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম। শিশুর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, নিয়মিত ক্লাসগুলো বন্ধ। অনলাইনে, টিভি-রেডিওতে কিছু ক্লাস হচ্ছে বটে তবে তা যথেষ্ট নয়।

এগুলো শুধু নিয়ম রক্ষার প্রচেষ্টা মাত্র। তাছাড়া শিশুদের বাহিরে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই- সারাদিন বদ্ধ ঘরে অবস্থান। অনেকেই বাসায় স্মার্টফোনে ইন্টারনেটে বা টিভিতে স্যাটেলাইট চ্যানেলে বেশিরভাগ সময় কাটাচ্ছে। আবার শিশুরা নিজেরাও এভাবে যে অলস সময় পার করে খুব ভালো আছে তা বলা যাবে না। দুঃসহ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে কোমলমতি শিশুরা। ফলে অনেক শিশু মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে।

শিশুরা স্বর্গের ফুল। তাদের হাসিতে যেন মুক্তো ঝরে। তাদের হাসিমুখ দেখলে অনাবিল প্রশান্তিতে ভরে ওঠে অন্তরাত্মা। আজকের শিশুরাই আগামীর বাংলাদেশের ধারক ও বাহক। জন্ম দেবে এক গৌরবময় ও ঐতিহ্যপূর্ণ অধ্যায়। তাই শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত পরিবেশ- যেখানে শিশু নিজেকে নিজের মতো করে তৈরি করার সুযোগ পায়। শিশুর মন হলো মুক্ত বিহঙ্গের মতো, কোনো কিছুতেই বাধ মানতে চায় না। তারা নীড় বাঁধতে চায় আকাশে। আমাদের দায়িত্বশীল আচরণের জন্য একটি শিশুর জীবন সাফল্যের আলোকে উদ্ভাসিত হতে পারে। আবার আমাদের দায়িত্বহীন আচরণ বা অজ্ঞতার কারণে একটি শিশুর সারাটা জীবন গহিন অন্ধকারের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হতে পারে। তাই এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।

শিশু কাদামাটির মতো। কাদামাটিকে সহজেই যে কোনো আকৃতি দেয়া যায়। কাদামাটি দিয়ে যেমন দুর্গার মুর্তি গড়া যায় তেমনি অসুরও তৈরি করা যায়। কাদামাটি দিয়ে যেমন সুন্দর ফুলদানি গড়া যায়, আবার তামাক খাওয়ার কলকিও তৈরি করা যায়। শিশু বয়সের যত্ন ও পরিচর্যা একটি শিশুকে যেমন সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখড়ে নিয়ে যেতে পারে, আবার তেমনি শিশু বয়সের অযত্ন ও অবহেলা একটি শিশুকে ধ্বংসের চরম সীমায়ও নিয়ে যেতে পারে। এর পেছনে কাজ করে শিশুর মেধার যথাযথ বিকাশ হচ্ছে কি-না বা মেধা কোন্ দিকে ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর। শিশুর মেধার সঠিক ও যথাযথ বিকাশ খুবই জরুরি। মাদার তেরেসা একবারই পৃথিবীতে আসবেন এমন নয়। প্রত্যেক কন্যাশিশুই মাদার তেরেসার মতো হতে পারে, হতে পারে শিরিন এবাদির মতো বিশ^শান্তির দূত। কোনো শিশু মায়ের পেট থেকে আইনস্টাইন হয়ে জন্মায় না, তাকে আইনস্টাইন হওয়ার সুযোগ করে দিতে হয়।

প্রতিটি শিশুই সম্ভাবনাময়, প্রতিটি শিশু অনন্য। একটি সুন্দর সমৃদ্ধ আগামী পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য দরকার প্রাণ প্রাচুর্যে ভরপুর সুস্থ সুন্দর শিশু। ওরাই একদিন বড় হয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে এ পৃথিবীকে। মানব সভ্যতা-সংস্কৃতি বিকাশের ধারা ও শান্তি নির্ভর করছে আজকের শিশুর ওপর। শিক্ষা প্রতিটি শিশুর জন্মগত মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশের সংবিধানসহ আন্তর্জাতিক সনদসমূহেও এ বিষয়টি স্বীকৃত। শিশুকে তার শেখার ধরন বুঝে তার ধারণ-ক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষা দিতে হবে। ভীতিহীন পরিবেশে, আনন্দের মাঝেই সকল শিশু শিখতে চায়। কঠোর শাসন, নিয়ন্ত্রণ, প্রতিকূল পরিবেশ শিশুর শিক্ষাজীবনকে অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দেয়। মনের আনন্দই শিশুর অন্তর্নিহিত শক্তির মূল উৎস। তাই আনন্দঘন ও শিশুবান্ধব পরিবেশ ছাড়া শিশুর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানো অসম্ভব। শিশুদের জন্য আনন্দমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। ফুলের মতো নিষ্পাপ শিশুদের নিয়ে প্রত্যেকটি বিদ্যালয়কে স্বর্গের ফুলবাগান হিসেবে তৈরি করতে হবে। শিশুর শৈশব কলুষমুক্ত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত না হলে তার সোনালী ভবিষ্যৎ কিছুতেই আশা করা যায় না। শিশুর শেখার জন্য আনন্দঘন পরিবেশ নিশ্চিতের পাশাপাশি তার সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সে শিশু একদিন কালজয়ী বিশেষজ্ঞ হতে পারবে।

ছোট বেলায় সুষম ও পুষ্টিকর খাবার থেকে যদি কেউ বঞ্চিত হয়Ñ তার বিরূপ প্রভাব সারাজীবন তাকে বয়ে বেড়াতে হয়। শিশুর শরীর ও মেধা বিকাশের বুনিয়াদ গঠন হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায়ই। এই সময়টাতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক গঠন যথাযথ হওয়া জরুরি। তাই পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি শিশুর খাদ্য ও পুষ্টি, সুস্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতাবোধ, শৃংখলাবোধের প্রতিও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। বাড়িতে তাদের সুষম খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল চালুকরণসহ শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক মননশীলতা বিকাশের দিকে আমাদের নজর দেয়া অত্যাবশ্যক। অবুঝ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য রক্ষার্থে আমাদের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে।

প্রতিটি শিশুর নিজস্ব পছন্দ থাকে। তারা তাদের পছন্দ অনুসরণ করেই শিখতে চায়। কেউ দেখে, কেউ স্বাদ নিয়ে, কেউ স্পর্শ করে বা নাড়াচড়া করে, কেউ নাচ-গানের মাধ্যমে, কেউ আঁকি-বুঁকি করে, কেউ খেলাধুলার মাধ্যমে, কেউ অনুকরণের মাধমে, কেউ অনুসরণের মাধ্যমে শিখতে পছন্দ করে। একেক শিশু একেকভাবে শেখে। শিশুদের এ শিখন কখনও একাকী, কখনও জুটিতে বা জোড়ায় আবার কখনও দলীয় কাজের মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে। শিখনের বিভিন্নতা শিশুদের নানান অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করে। শিক্ষক শিশুদের পছন্দের কৌশল প্রয়োগ করে শিখনে সহায়তা দিলে শিশুদের শিখন প্রাণবন্ত ও কার্যকর হয়। শিশুর পূর্ব অভিজ্ঞতা ও নিজ পছন্দের শিখন-কৌশল প্রয়োগ করার সুযোগ পেলে সে শিখনে আগ্রহী ও তৎপর হয়। সুতরাং শিখন-শেখানো কার্যাবলী পরিচালনার সময় শিশুদের শিখনের ধরন সম্পর্কে শিক্ষক ও অভিভাবকের জানা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আজকে যারা হাঁটি হাঁটি পা পা করে কাঁধে বা পিঠে বইয়ের বিশাল ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে, প্রাইভেট বা কোচিং-এ যাতায়াত করছে তারাই একদিন এদেশের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেবে। তাদের নৈতিক ও মানবিক শিক্ষা তথা সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তারা পরিপূর্ণভাবে বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। লক্ষ্য লাখতে হবে বই যেন কোমলমতি শিশুদের কাছে বোঝা না হয়। ব্যাগের ওজন দৃশ্যমান হলেও বইয়ের ওজন কিন্তু দৃশ্যমান নয়। এটা আপেক্ষিক; এটা যাচাইগত প্রক্রিয়া।

বণিক-মানসিকতার একশ্রেণির শিক্ষক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পরিচর্যা না করে, তাদের সার্বিক বিকাশের দিকে নজর না দিয়ে তারা তাদের পকেট ভারী করার অশুভ প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ফলে শিশু-শিক্ষার্থীরা শিশুবান্ধব পরিবেশ না পেয়ে বখে যাচ্ছে এবং পড়াশুনায় অমনোযোগী হচ্ছে। এমনকি অনেক শিক্ষার্থী এত চাপ সহ্য না করতে পেরে অনিশ্চয়তা ও হতাশা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ঝরে পড়ছে। কাজেই এখনই উচিত এ ধরনের ক্ষতি থেকে আমাদের কোমলমতি শিশুদের রেহাই দিতে সম্মিলিত উদ্যোগ। এ বিষয়ে সরকারের সুষ্পষ্ট নির্দেশনা ও কঠোর নজরদারীর পাশাপাশি অভিভাবক ও অংশীজনদেরও সচেতন হতে হবে।

শিক্ষার্থীদের নৈতিক, মানবিক ও সামাজিক বিকাশ ঘটাতে হলে সকল স্তরের শিক্ষাক্রমে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ সংক্রান্ত বিষয়াদি অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। সামাজিক রীতি-নীতি, কৃষ্টি-কালচারও শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ সৃষ্টিতে প্রভাব ফেলে। তাই সকল স্তরের শিক্ষায় নিয়মিত দেশের কৃষ্টি-কালচার বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক দায়িত্ববোধ ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ সম্পর্কে একটি শক্ত ভিত্ গড়ে উঠবে। ফলে তারা বিপথগামী হওয়া থেকে বিরত থাকবে। সেই সাথে তাদের মননশীলতারও বিকাশ ঘটবে। মূল্যবোধ সৃষ্টিতে ধর্মীয় জ্ঞান বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। ধর্মের প্রকৃত শিক্ষাই শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। তাছাড়া দেশের প্রতি ভালোবাসাও শিক্ষার্থীর মধ্যে মূল্যবোধ তৈরি করে। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিকতা শিক্ষা ও দেশপ্রেম বিষয়ে সপ্তাহে অন্তত একটি করে ক্লাস সব শ্রেণিতে অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে।

আজকের শিশুই আগামী দিনে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায়। শিশুকালে চরিত্র গঠনে উন্নতি না করতে পারলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সর্বত্রই। কোনো শিশু শিক্ষা জীবনের শুরুতে যদি সঠিক দিক-নির্দেশনা না পায়, তাহলে এর জন্য খেসারত দিতে হয় পুরো জাতিকেই। তাই আগামীর সুস্থ, সুন্দর ও সক্ষম জাতি গঠনের জন্য এ বিষয়ের প্রতি আমাদের সকলেরই সচেতন হওয়া জরুরি। আমাদের মতো গরিব দেশের জন্য ক্ষুধা ও দরিদ্রতা মাঝে পর্নো-আগ্রাসন এক মারাত্মক অভিশাপ।

স্যাটেলাইট চ্যানেলের ব্যাপক বিস্তার, মোবাইল ফোন-ইন্টারনেট তথা তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার, পর্নো-উপকরণসমূহের সহজলভ্যতা ও ব্যাপক বিস্তার এবং পাশর্^বর্তী দেশের নেতিবাচক কালচার আমাদের শিশুদের বিপথগামী করে তুলছে; যা আমাদের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারে। এখনই জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সময় থাকতেই সবাইকে সাবধান হতে হবে। এই আগ্রাসন থেকে সন্তানদের আগলে রাখতে হবে।

শিশুর মনের দিকে সকলেরই খেয়াল রাখা উচিত। তাদেরকে সময় দিতে হবে। বোঝার চেষ্টা করতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে তাদের মধ্যে যেন একাকিত্ব ভর না করে। তাদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে। অপরাধ করলেও তাদেরকে দূরে সরিয়ে দেয়া যাবে না। ক্ষমার দৃষ্টিতে কাছে টেনে নিতে হবে। শিশুর সুষম বিকাশের জন্য শারীরিক ও মানসিক উভয় দিকের প্রতি যত্ন নেয়া খুবই প্রয়োজন। আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশই শিশু। প্রতিটি শিশুর অধিকার রয়েছে সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার। এ অধিকার বাস্তবায়ন করা প্রতিটি দেশের সরকার ও জনগণের দায়িত্ব। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্যি, আমাদের দেশের অবুঝ কোমলমতি শিশুরা প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে নির্মম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ নির্মম-নির্যাতনে অনেক শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেÑ এমনকি অনেক শিশু ঢলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে; যার পৃথিবী থেকে অনেক কিছু নেয়ার ও দেয়ার ছিল।

মহান সৃষ্টিকর্তা সকল শিশুকেই মেধা ও বুদ্ধি দান করেছেন। কিন্তু অবস্থার প্রেক্ষাপটে তা বিভিন্ন রকম হয়। কারো মেধা অল্প সময়ে বিকশিত হয়, আবার কারো মেধা দীর্ঘদিন সুপ্ত থাকার পর বিকশিত হয়। কারো মেধা আস্তে আস্তে বিকশিত হয়, আবার কারো মেধা সঠিক যত্ন ও পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। আজকের সুস্থ, সবল ও বুদ্ধিদীপ্ত মেধাবী শিশু আমাদের ভবিষ্যৎ। তাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কর্ণধার এই শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশে পিতামাতা, পরিবার, সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মগ্রহণকারী শিশুর উপর নিজের ইচ্ছা, প্রভাব, স্বপ্ন চাপিয়ে দেয়া যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। মেধার সুষ্ঠু ও যথাযথ বিকাশের জন্য কোন্ শিশু কোন্ মেধাসম্পন্ন বা কোন্ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন তা জানা এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।

প্রতিটি শিশু যেন নিজেকে সুরক্ষিত রেখে শিক্ষা গ্রহণ ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারে আমাদের সেদিকে নজর দিতে হবে। আমাদের দেখভাল করতে হবে তারা পরিবারে বা অন্য কোথাও কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে কিনা। মাদকাসক্তি বা পর্নো-আগ্রাসনে জড়িয়ে পড়া, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার করছে কিনা ইত্যাদির মতো বিষয়গুলোর প্রতিও লক্ষ্য রাখতে হবে। আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালনা দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠন এবং উন্নয়নের ধারাকে টেকসই করতে বর্তমান প্রজন্মকে যোগ্য করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিশ্বনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সকল শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের সুযোগ নিশ্চিত করে যোগ্য, পরিচ্ছন্ন ও সুশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তারা দীপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবে নতুন সভ্যতার দিকেÑ এটাই হোক আমাদের প্রত্যাশা।

লেখক:
শরীফুল্লাহ মুক্তি
প্রাবন্ধিক, শিক্ষা-গবেষক ও ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর।

Leave a Comment

error: Content is protected !!