চারপাশে মনোরম পাহাড় সারি, সাদা তুলোর মত মেঘের ভ্যালি আপনাকে মুগ্ধ করবেই। সাজেক এমনই আশ্চর্য্যজনক জায়গা যেখানে একই দিনে প্রকৃতির তিন রকম রূপের সান্নিধ্যে আপনি হতে পারেন চমৎকৃত। কখনো বা খুব গরম অনুভূত হবে তারপর হয়তো হটাৎ বৃষ্টিতে ভিজে যাবেন কিংবা চোখের পলকেই মেঘের ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাবে আপনার চারপাশ। প্রাকৃতিক নিসর্গ আর তুলোর মত মেঘের পাহাড় থেকে পাহাড়ে উড়াউড়ির খেলা দেখতে সাজেক আদর্শ জায়গা।

কংলাক পাহাড় হচ্ছে সাজেক ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ। আর সাজেক ভ্যালির শেষ গ্রাম কংলক পাড়া লুসাই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকা। কংলাক পাড়া থেকেই কর্ণফুলী নদী উৎপত্তিস্থল ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায়। চাইলে রুইলুই পাড়া থেকে দুই ঘন্টা ট্রেকিং করে কমলক ঝর্ণা দেখে আসতে পারবেন। সুন্দর এই ঝর্ণাটি অনেকের কাছে পিদাম তৈসা ঝর্ণা বা সিকাম তৈসা ঝর্ণা নামেও পরিচিত।

দিন কিংবা রাত সাজেক যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মত, সময় গড়ায় তবু সাজেক পুরাতন হয় না। সাজেকে গেলে অবশ্যই সকালে ভোরের সময়টা মিস করবেন না। মেঘের খেলা আর সূর্যোদয়ের আলোর মেলা এই সময়েই বসে। এই জন্যে আপনাকে খুব ভোরে উঠে চলে যেতে হবে হ্যালিপ্যাডে, সেখান থেকেই সবচেয়ে সুন্দর সূর্যোদয় দেখা যায়। বিকেলের কোন উঁচু জায়গা থেকে সূর্যাস্তের রঙ্গিন রূপ আপনাকে বিমোহিত করবেই। আর সন্ধ্যার পর আকাশের কোটি কোটি তারার মেলা, আপনার প্রাণ জুড়িয়ে দিবে নিমিষেই। আকাশ পরিস্কার থাকলে দেখা পাবেন মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথের।

ঘুরে দেখতে পারেন চারপাশ ও আদিবাসীদের জীবন যাপন। সহজ সরল এই সব মানুষের সান্নিধ্য আপনার ভাল লাগবে। আর হাতে সময় থাকলে সাজেক ভ্যালি থেকে ফেরার পথে ঢু মেরে আসতে পারেন হাজাছড়া ঝর্ণা, দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ ও দীঘিনালা বনবিহার থেকে।

কখন যাবেন


সাজেকের রূপের আসলে তুলনা হয় না। সারা বছরই বর্ণিল সাজে সেজে থাকে সাজেক। বছরের যে কোন সময় আপনি সাজেক ভ্রমণ করতে পারেন। তবে জুলাই থেকে নভেম্বর মাসে সাজেকের চারপাশে মেঘের খেলা দেখা যায় বেশি। তাই এই সময়টাই সাজেক ভ্রমণের জন্যে সবচেয়ে ভালো।

সাজেক যাবার উপায়


সাজেকের অবস্থান রাঙামাটি জেলায় হলেও খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা হয়ে সাজেক যাতায়াত অনেক সহজ। তাই প্রথমেই আপনাকে খাগড়াছড়ি আসতে হবে। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যেতে চাইলে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, সৌদিয়া, শ্যামলি, শান্তি পরিবহন, এস আলম, ঈগল ইত্যাদি বাসে করে যেতে পারবেন। নন এসি এইসব বাস ভাড়া ৬২০ টাকা। এসি বাসে যেতে চাইলে সেন্টমার্টিন হুন্দাই রবি এক্সপ্রেস, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, রিলাক্স ট্রান্সপোর্ট, শ্যামলী, দেশ ট্র্যাভেলস, ইকোনো সার্ভিস ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন। আর বাসগুলো সাধারণত রাত ১০ টার মধ্যে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

এছাড়া শান্তি পরিবহন বাস সরাসরি দীঘিনালা যায়, ভাড়া ৬৮০ টাকা। ঢাকায় গাবতলী, কলাবাগানসহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে এইসব পরিবহণের কাউন্টার। ছুটির দিন গুলোতে যেতে চাইলে আগে থেকেই টিকেট কেটে রাখা ভালো নয়তো পড়ে টিকেট পেতে ঝামেলা পোহাতে হতে পারে।

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক এর দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরের কাছ থেকে জীপগাড়ি/চাঁন্দের গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে সাজেক ভ্যালি ঘুরে আসতে পারবেন। যাওয়া আসা সহ দুইদিনের জন্যে ভাড়া নিবে ৯,০০০-১০,৫০০ টাকা। এক গাড়িতে করে ১২-১৫ জন যেতে পারবেন। তবে লোক কম থাকলে অন্য কোন ছোট গ্রুপের সাথে কথা বলে শেয়ার করে গাড়ি নিলে খরচ কম হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে সিএনজি দিয়ে সাজেক যেতে পারবেন। রিজার্ভ ভাড়া লাগবে ৪০০০-৫০০০ টাকা। তবে পাহাড়ি উঁচু নিচু রাস্তা বলে সিএনজি দিয়ে ভ্রমণ না করাই ভালো।

জীপ সমিতি ও পার্বত্য যানবাহন মালিক কল্যান সমিতি কর্তৃক খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার ভাড়ার তালিকা

যাত্রার ধরণ পিক আপ গাড়ি জীপ (চাঁদের) গাড়ী
সাজেক যাওয়া ও আসা ৬,০০০ ৬,০০০
সাজেক ১ রাত্রি যাপন ৮,৩০০ ৭,৭০০
সাজেক ১ রাত্রি যাপন, আলুটিলা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত ব্রিজ সহ ১০,৪০০ ৯,০০০
সাজেক ২ রাত্রি যাপন ১১,১০০ ৯,৬০০
সাজেক ২ রাত্রি যাপন, আলুটিলা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত ব্রিজ সহ ১৩,২০০ ১১,৪০০

এছাড়া আপনি যদি একা বা ২-৩ জন হন তাহলে খাগড়াছড়ি শাপলা চত্ত্বর থেকে অনেক গ্রুপ পাওয়া যায়, সেখানে অন্য গ্রুপের সাথে কথা বলে তাদের সাথে শেয়ার করে যেতে পারবেন অথবা জিপ সমিতির অফিসে গেলে ওরা ম্যানেজ করে দিবে অন্য কোন গ্রুপের সাথে।

এছাড়া খাগড়াছড়ি থেকে দিঘীনালায় গিয়ে সেখান থেকে সাজেক যেতে পারবেন। খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালার দূরত্ব ২৩ কিলোমিটার। খগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা বাস ভাড়া ৪৫ টাকা, মোটর সাইকেল জনপ্রতি ভাড়া ১০০ টাকা। আবার চাইলে মোটরসাইকেল রিজার্ভ করে সাজেক ঘুরে আসা যায়। যে কোন গাড়ি ঠিক করার আগে কি দেখবেন, কি করবেন এইসব ভালো মত কথা বলে নিবেন।

তবে আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, যেভাবেই যান আপনাকে দিঘীনালায় ৯টা থেকে ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। দিঘীনালা থেকে বাকি রাস্তা নিরাপত্তার জন্যে আপনাকে সেনাবাহীনির এসকোর্টে যেতে হবে। সেনাবাহিনীর এসকোর্ট দিনে দুইবার পাওয়া যায়। সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে একবার, আবার ২ টা ৩০ মিনিটে আরেকবার। সকালের এসকোর্ট মিস করলে আপনাকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, আর বিকেলের টা মিস করলে আপনাকে পরের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এসকোর্ট ছাড়া যাবার অনুমতি পাবেন না। দিঘীনালা পৌঁছে হাতে সময় থাকলে হাজাছড়া ঝর্ণা ঘুরে দেখে আসতে পারবেন।

দিঘীনালা থেকে যাবার পথে বাগাইহাট, মাচালং বাজার, তারপর রুইলুই পাড়া হয়ে পৌঁছে যাবেন সাজেকে। খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাজেক যেতে সময় লাগবে দুই থেকে তিন ঘন্টা। এই সময় আঁকাবাঁকা উঁচু নিচু পাহাড়ি রাস্তা ধরে চলার সময়টুকু আপনার জন্যে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। চারদিকে সারি সারি পাহাড় আর সবুজের সমারোহ আপনাকে ভুলিয়ে দেবে পথের সব ক্লান্তি।

চট্রগ্রাম থেকে সাজেক ভ্রমণ: চট্রগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি বা দিঘীনালা হয়ে সাজেক যেতে পারবেন। চট্রগ্রামের কদমতলী থেকে বিআরটিসি এসি বাস সারাদিনে ৪টি বাস চলাচল করে, ভাড়া ২০০টাকা । এছাড়া অক্সিজেন মোড় থেকে ১ ঘণ্টা পর পর শান্তি পরিবহনের (ভাড়া ১৯০টাকা) বাস চলাচল করে। চট্রগ্রাম থেকে বাসে করে খাগড়াছড়ি যেতে সময় লাগবে ৪-৫ ঘন্টা।

রাঙ্গামাটি থেকে সাজেক ভ্রমণ: রাঙ্গামাটি থেকে নৌপথ এবং সড়কপথ উভয়ভাবেই বাঘাইছড়ি যাওয়া যায়। রিজার্ভ বাজার লঞ্চঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৭ টা ৩০ থেকে ১০টা ৩০ এর মধ্যে লঞ্চ ছাড়ে যেতে আর সময় লাগে ৫-৬ ঘন্টা। জনপ্রতি ভাড়া ১৫০-২৫০ টাকা। রাঙ্গামাটি বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৭ টা ৩০ থেকে ৮ টা ৩০ ঘটিকার মধ্যে বাস ছাড়ে, জনপ্রতি ভাড়া নেয় ২০০ টাকা। সময় লাগে ৬-৭ ঘন্টা। এছাড়াও ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকেও সরাসরি বাঘাইছড়ি যাওয়া সম্ভব। বাঘাইছড়ি থেকে জীপ (চাদেঁর গাড়ি) অথবা মোটর সাইকেলে সাজেক ভ্যালীতে পৌঁছানো যায় এতে জনপ্রতি ভাড়া লাগে ৩০০/-টাকা।

কক্সবাজার থেকে সাজেক ভ্রমণ: কক্সবাজার থেকে খাগড়াছড়ি হয়ে সাজেক যাওয়া যায়। শান্তি পরিবহনের বাস কক্সবাজার – খাগড়াছড়ি রুটে চলাচল করে। কক্সবাজার থেকে রাত ৯ টা ও ১০টায় বাস খাগড়াছড়ির উদ্দ্যেশে ছেড়ে যায়, নন এসি এই বাসের ভাড়া ৫৫০ টাকা।

সাজেক ভ্রমণ অফার: দেশের সবচেয়ে ফিমেইল ফ্রেন্ডলি ট্যুর অর্গানাইজার “Green Belt – গ্রিন বেল্ট” এর সাথে সাজেক ভ্রমণে কর্পোরেট, গ্রুপ, কাপল বা ফ্যামিলি ট্যুরে “ভ্রমণ গাইড” রেফারেন্সে পাবেন ১০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট সুবিধা। গ্রিন বেল্ট এর সাথে ভ্রমণ করতে মেসেজ দিন তাদের ফেসবুক পেইজে। ডিসকাউন্ট পেতে হলে অবশ্যই “ভ্রমণ গাইড” রেফারেন্স দিতে হবে।

কোথায় থাকবেন


সাজেকে থাকার জন্যে প্রায় শতাধিক রিসোর্ট ও কটেজ আছে। এক রাতের জন্যে রুম নিতে রিসোর্ট ভেদে ১৫০০ টাকা থেকে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া লাগবে। ছুটির দিনে যেতে চাইলে আগে মাসখানেক আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখা ভালো, নয়তো ভালো রুম পাবার নিশ্চিয়তা কম। আর কম দামে থাকতে চাইলে আদিবাসী কটেজ গুলোতে থাকতে পারেন। এছাড়া বর্তমানে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নতুন নতুন অনেক কটেজ হয়েছে। সাজেকের সব কটেজ থেকেই মোটামুটি সুন্দর ভিউ পাওয়া যায়।

সাজেকের রিসোর্ট ও কটেজ


রিসোর্ট রুংরাং (Resort RungRang): সাজেকের বেস্ট রিসোর্ট গুলোর একটি রিসোর্ট রুংরাং। রিসোর্টে বসেই দিগন্তজোড়া সারি সারি পাহাড় এবং মেঘের উড়োউড়ি দেখার জন্য আদর্শ। নান্দ্যনিক ইন্টেরিওর ডিজাইনে সাজানো এই রিসোর্টে আছে ৪টি ডাবল এবং ৪টি কাপল রুম। ছুটির দিনে ডাবল বেড রুম ভাড়া ৩৫০০ টাকা এবং কাপল ২৮০০ টাকা।

অন্য সকল দিনে ডাবল বেড রুম ভাড়া ২৮০০ এবং কাপল ২০০০ টাকা। রুংরাং রিসোর্ট ভ্রমণ গাইড ব্যবহারকারীদের জন্যে দিচ্ছে রুম বুকিং এ ৫-১০% ডিসকাউন্ট সুবিধা। বুকিং এর সময় রেফারেন্স হিসেবে আপনি ভ্রমণ গাইড ব্যবহারকারী বলুন আর উপভোগ করুন এই স্পেশাল অফার। বুকিং এর জন্যে যোগাযোগ নাম্বার: 01884-710 723, 01869-649 817

সাজেক রিসোর্ট (Sajek Resort): বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত রিসোর্ট সাজেক রিসোর্ট। নন এসি রুম গুলোর ভাড়া ১০,০০০ – ১৫,০০০ টাকা। আছে খাবারে ব্যবস্থা। সেনাবাহিনিতে কর্মরত বা প্রথম শ্রেনীর সরকারি কর্মকর্তাদের জন্যে ডিসকাউন্ট রয়েছে। যোগাযোগ করতে পারেন এই নাম্বারেঃ 01859-025694 / 01847-070395 / 01769-302370

রুন্ময় রিসোর্ট (Runmoy Resort): মোট ৫ টি রুম আছে। প্রতিটি কক্ষে ২ জন থাকতে পারবেন। নিচ তলার রুম ভাড়া ৪৪৫০ টাকা। প্রতিটি কক্ষে ২ জন থাকতে পারবেন। ৬০০ টাকা দিয়ে অতিরিক্ত বেড নিতে পারবেন। উপরের তলায় দুইটি কক্ষ আছে ভাড়া ৪৯৫০ টাকা। প্রতিটি কক্ষে দুই জন থাকতে পারবেন। এটাতেও ৬০০ টাকা দিয়ে অতিরিক্ত বেড নিতে পারবেন। যোগাযোগ: 0186547688

মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট (Meghpunji Resort): সুন্দর ইকো ডেকোরেশনের ও আকর্ষণীয় ল্যান্ডস্কেপিক ভিউ সহ মেঘপুঞ্জিতে আছে ৪টি কটেজ, প্রতিটি কটেজে সর্বোচ্চ ৪ জন থাকা যাবে। ভাড়া ৪০০০-৪৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01815-761065, ফেসবুক পেইজ

ম্যাডভেঞ্চার রিসোর্ট (Madventure Resort): রিসোর্টের প্রতি তলায় আছে প্রশস্ত বারান্দা। ২৪ ঘন্টা ইলেকট্রিসিটি ও পানির ব্যবস্থা আছে। ম্যাডভেঞ্চার রিসোর্টে প্রিমিয়াম কাপল রুম ভাড়া ৪০০০ টাকা, কাপল ক্লাসিক রুম ভাড়া ৩৫০০ টাকা এবং ডাবল ক্লাসিক রুম ভাড়া ৩৫০০ টাকা।  যোগাযোগঃ 01885-424242, ফেসবুক পেইজ

মেঘ মাচাং (Megh Machang): সুন্দর ভিউ ও তুলনামূলক কম খরচে থাকার জন্যে মেঘ মাচাং রিসোর্ট অনেকের পছন্দ। আছে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা। মেঘ মাচাং-এ পাঁচটি কটেজ আছে । ভাড়া ৩৫০০-৪৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01822-168877, ফেসবুক পেইজ

জুমঘর ইকো রিসোর্ট (Jumghor Eco Resort): থাকার জন্যে এই রিসোর্টে পৃথক কটেজে মোট ৬টি কাপল রুম রয়েছে। প্রতিটি রুমে সর্বোচ্চ ৪ থাকার ব্যবস্থা আছে। কটেজ প্রতি ভাড়া ৪০০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01884-208060, ফেসবুক পেইজ

লুসাই কটেজ (TGB Lushai Cottage): সুন্দর ডেকোরেশন ও ভালো ল্যান্ডস্কেপিক ভিউয়ের টিজিবি লুসাই কটেজে কাপল, ফ্যামিলি কিংবা গ্রুপের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির কক্ষ রয়েছে। এসব রুমের ভাড়া ২৫০০ টাকা থেকে ৪৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01634-198005, ফেসবুক পেইজ

আলো রিসোর্ট (Alo Resort): সাজেকের একটু আগে রুইলুই পাড়ায়। ৬ টি রুমের মধ্যে ডাবল রুম ৪ টি (২টি বেড)। ভাড়া ১০০০-১৫০০ টাকা। যোগাযোগঃ 01841-000645, ফেসবুক পেইজ।

আদিবাসী ঘর: এ ছাড়া আরও কম খরচে থাকতে চাইলে আদিবাসিদের ঘরেও থাকতে পারবেন। জনপ্রতি ১৫০-৩০০ টাকায় থাকা যাবে। ফ্যামিলি বা কাপল থাকার জন্যে আদর্শ না হলেও বন্ধু বান্ধব মিলে একসাথে থাকা যাবে।

সাজেক এর খাওয়া দাওয়া


সব রিসোর্টে খাবার ব্যবস্থা আছে তাই আগেই রিসোর্টগুলোতে বলে রাখলে পছন্দমত রান্না করে দিবে সেক্ষেত্রে প্রতিবেলা প্রতিজন ১০০-২৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে আর মেনু হিসেবে পাবেন ভাত আলুভর্তা, মুরগীর মাংস ইত্যাদি। চাইলে রাতে বার বি কিউও করতে পারবেন। এছাড়া আদিবাসী ঘরেও খাওয়া যায়, আগে থেকেই বলে রাখতে হবে কি খাবেন, তাহলে রান্না করে দিবে। সাজেকে খুব সস্তায় পেঁপে, আনারস, কলা ইত্যাদি ফল পাবেন চেখে দেখতে ভুল করবেন না।

সাজেক ভ্রমণ টিপস


  • সাজেকে অনেক জায়গায় বিদুৎ নেই, সোলার পাওয়ার ব্যবস্থা আছে। সাথে করে পাওয়ার ব্যাংক রাখতে পারেন।
  • সাজেকে শুধুমাত্র রবি, এয়ারটেল ও টেলিটক এর নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায়।
  • সাজেক যাবার পথ অনেক আঁকাবাঁকা ও উঁচু নিচু, তাই এই পথ বিপদজনক। জীপের ছাঁদে ভ্রমনে সতর্ক থাকুন।
  • সাজেক যেতে গাইডের প্রয়োজন হয় না।
  • আদিবাসীদের ছবি তোলার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নিয়ে নিন। অনুমতি ছাড়া ছবি তুলবেন না।
  • আদিবাসী মানুষজন সহজ সরল তাদের সাথে ভদ্র ব্যবহার করুন ও তাদের কালচারের প্রতি সম্মান দেখান।
  • ছুটির দিনে গেলে ঝামেলা এড়াতে আগে থেকেই (মাস খানেক) রুম বুকিং দিয়ে রাখুন।
  • যাবার পথে কয়েক জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প আছে। সেখানে ভ্রমণকারী সদস্যদের কিছু তথ্য জমা দিতে হয়। নিরাপত্তার সার্থে তাদের সহযোগিতা করুন। সাথে করে নিজের জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি রাখুন।
  • দুই তিন দিনের জন্যে গেলে গাড়ি বসিয়ে না রেখে, শুধু যাবার জন্যে গাড়ি ঠিক করুন, ফিরে আসার সময় অন্য কোন গাড়িতে আসুন কিংবা দিঘীনালা থেকে ফোন করে গাড়ি পাঠিয়ে ফেরত আসতে পারবেন।