বিবিসির ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় নান্দাইলের সানজিদা

বিবিসির ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় নান্দাইলের সানজিদা। বিবিসির তৈরি করা বিশ্বের ১০০ জন অনুপ্ররণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি ওয়েব সাইটে।

গত মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাজনীতি ও শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া, অ্যাক্টিভিজম ও অ্যাডভোকেসি, স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান ৪ টি ক্যাটাগরিতে ১০০ জন নারীর তালিকা প্রকাশ করেন। এতে অ্যাক্টিভিজম ও অ্যাডভোকেসি ক্যাটাগরিতে বাল্যবিবাহ রোধে বাংলাদশের সানজিদা ইসলাম ছোঁয়া স্থান পেয়েছে ২১তম।

সানজিদা ইসলাম ছোঁয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের ঝাউগড়া গ্রামের বাসিন্দা। মো. আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া সোহেল ও লিজা আক্তার দম্পতির কন্যা ৷ সে বর্তমানে কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারী কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষে ব্যবস্থাপনা বিভাগে পড়াশোনা করছেন।

২০১৪ সালে নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে পড়াশোনা অবস্থায় ৭জন সহপাঠিকে নিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আন্দোলন গড়ে তুলে ব্যাপক সাড়া পেলে দিয়েছিল। ৭ সহপাঠি নিয়ে গড়ে তুলে সংগঠন ঘাসফড়িং। সেখান থেকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। তবে বর্তমানে সবাই আলাদা আলাদা কাজ করছেন।

এই তালিকায় ২০২২ সালে বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ স্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা নারীদের তুলে আনা হয়েছে। ইরানে পটপরিবর্তনের দাবীতে সাহসীকতার সাথে বিক্ষোভ করে যাওয়া নারী থেকে শুরু করে ইউক্রেন ও রাশিয়ায় সংঘাত ও প্রতিরোধে ভূমিকা রাখা নারীমুখ এবারের তালিকায় স্থান পেয়েছেন।

তালিকায় সানজিদা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত সহকারে বলা হয়েছে- বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বাল্যবিবাহ-প্রবণ দেশ, তবে সানজিদা ইসলাম ছোঁয়া এই ধারা বদলানোর চেষ্টা করছেন। তার মায়েরও বিয়ে হয়েছিল অল্প বয়সে। স্কুলে বাল্যবিবাহের প্রভাব নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন দেখে বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হন তিনি।

ছোয়া ও বন্ধুরা, শিক্ষক ও সহযোগীরা নিজেদের ঘাসফড়িং হিসেবে পরিচয় দেন। বাল্যবিবাহের কোন ঘটনা জানলে তারা পুলিশকে জানান। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হয়েও ছোয়া ঘাসফড়িংয়ের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেন তিনি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ টি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ভুমিকা রেখেছে ঘাসফড়িং।

সানজিদা ইসলাম ছোঁয়া বলেন, বিবিসির ১০০ নারীর মধ্যে আমি নিজেও একজন। এ কারনে আমি খুবই আনন্দিত এটি আমার সবচেয়ে বড় পাওনা। বিদ্যালয়ের একটি উপস্থাপনায় অনুপ্রাণিত হয়ে বাল্যবিবাহ রোধে আমার কাজ শুরু হয়। বাল্যবিবাহের খবর পেলেই বন্ধু ও পুলিশ নিয়ে কীভাবে মেয়েদের রক্ষা করা যায় তা চেষ্টা করি। আমি মনে করি অল্প বয়সে বিয়ে করা খাঁচায় বন্দি জীবনের মত।

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবুল মনসুর বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে ছোঁয়াকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। যে ধরনের সহযোগিতা দরকার আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করবো। আমরা সবাইকে এই ধরনের কর্মকান্ড জড়িত হওয়ার জন্য আহবান জানাই।

Leave a Comment

error: Content is protected !!