আইজিপি সহ পুলিশের শীর্ষ পদগুলোতে কারা আসছেন

আইজিপিসহ পুলিশের শীর্ষ পদগুলোতে কারা আসছেন। বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পদ খালি হচ্ছে আগামী দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে। কারা এসব পদে আসছেন, তা নিয়ে এখনই জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে। এসব পদ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনা না হলেও সামনে নির্বাচন থাকায় পদগুলোর বিষয়ে অনেকেই উৎসুক হয়ে উঠেছেন।

আগামী বছর দুয়েক কীভাবে চলবে —এ নিয়ে পুলিশ প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, ইউনিট প্রধানে আসছে পরিবর্তন। সর্বশেষ ৪০ পুলিশ সুপারকে পদায়ন করা হয়েছে জেলাগুলোতে। এত দিন পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি পদের সংখ্যা ছিল ১৮, নতুন করে ৪টি পদ বাড়ায় তা দাঁড়িয়েছে ২২-এ। পুলিশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে অতিরিক্ত আইজিপি পদের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবে এসব পদ নিয়ে অলিখিত প্রতিযোগিতাও রয়েছে।

এখন যেসব পদ নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটি হলো আইজিপির পদ। অনেক দিন ধরে এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদ। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা নিয়ে এবং র‍্যাবের মহাপরিচালকের (ডিজি) চেয়ার সামলিয়ে তিনি আইজিপি হয়েছিলেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বেনজীর আহমেদকে চুক্তিভিত্তিক আইজিপি করার সম্ভাবনা কম। তা ছাড়া, তাঁর নামে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই পুলিশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই মনে করছেন, স্বাভাবিকভাবে এ পদে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা বেশি। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে র‍্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের নাম। যদিও তাঁর নামে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আছে।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন পুলিশের এ মুহূর্তে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ব্যাচের সদস্য। অষ্টম ব্যাচ বলে পরিচিত ব্যাচটি ১৯৮৯ সালে পুলিশে যোগদান করে। সেই ব্যাচের ১৩ জনের মধ্যে অবসরে গেছেন ১১ জন।

চাকরিতে আছেন র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং খাগড়াছড়িতে এপিবিএন এবং বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি আওরঙ্গজেব মাহবুব। আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের স্বাভাবিক অবসরে যাওয়ার কথা। কম সময়ের জন্য হলেও তাঁকে আইজিপি করা হতে পারে।

এই পদে আরও নাম শোনা যাচ্ছে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলামের। তাঁর স্ত্রী একটি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে আছেন। আতিকুল বিসিএসের ১২তম ব্যাচ হিসেবে ১৯৯১ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। এই ব্যাচে ৩০ জন কর্মকর্তা চাকরিতে বহাল আছেন।

আলোচনায় আরও আছেন ওই ব্যাচের মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকারী অতিরিক্ত আইজি এস এম রুহুল আমিন। তিনি এখন পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত। অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) প্রধান অতিরিক্ত আইজি কামরুল আহসানের নামও শোনা যাচ্ছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের বর্তমান কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শেষ হবে ৩০ অক্টোবর। এই পদটি পুলিশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পদে এসবির প্রধান মনিরুল ইসলাম ও ঢাকা রেঞ্জের বর্তমান ডিআইজি হাবিবুর রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে।

সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপির পদ এখন শূন্য। এই পদে থাকা ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমানের চাকরির মেয়াদ গত ৩০ জুলাই শেষ হয়েছে। অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার অথবা মোহাম্মদ আলীকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।

পুলিশ টেলিকমে অতিরিক্ত আইজিপির পদ খালি হয়েছে। এই পদে থাকা ইব্রাহীম ফাতেমী অবসরে গেছেন। এই পদে কে আসবেন, তা এখনো ঠিক হয়নি।

পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপির (প্রশাসন) চাকরির মেয়াদ আগামী ২ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। পুলিশ সদর দপ্তরের এই গুরুত্বপূর্ণ পদে কে আসছেন, সেদিকে সবার নজর রয়েছে।

র‍্যাবের মহাপরিচালকের চাকরির মেয়াদ আগামী জানুয়ারিতে শেষ হবে। এই পদে কে নিয়োগ পাবেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়নি। তবে এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে কারা নিয়োগ পাবেন, তা সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে ঠিক হবে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!