আকাবীরে দেওবন্দ: সাইয়েদ আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী

দেওবন্দের অনেক আলেমই হলেন আমাদের আকাবীর যাদের অবদান অনস্বীকার্য ৷ আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে দ্বীনের জন্য করে গেছেন অনেক কিছু ৷ একাই এক দলের ভূমিকা রেখে গেছেন ৷ এমনই একজনের নাম: সাইয়েদ আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী রহ.

তাঁর গৌরবময় ইতিহাস

১- জীবদ্দশায়-ই ২৫টি থিসিস বা পি.এস.ডি হয়েছে তাঁর জীবন ও কর্মের উপর ৷
২- তিনি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা ৷
৩- তাঁর জীবদ্দশায়-ই রাসুলে আরাবীর শহর মদীনায় তাঁর নামে সড়কের নাম করণ করা হয় ৷
৪- তাঁর লিখিত দুই শতাধিক গ্রন্হ প্রাচ্য ও প্রাশ্চাত্যে পৃথিবীর প্রধান প্রধান সকল ভাষায় অনুদিত হয়েছে ৷
৫- কাবা শরীফের চাবী তাঁর হাতে তুলে দিয়ে বিরল সম্মান জানানো হয়েছিল তাঁকে ৷ নিজ হাতে দরজা খুলে এর ভিতরে প্রবেশ করে তিনি মহান রবের শুকুর আদায় করেছেন ৷

৬- একজন বিরল প্রজন্মের শিক্ষাবিদ হিসাবে সারা পৃথিবী ব্যাপী তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। তাঁর জীবদ্দশাই তাঁর চেয়ে বড় কোন পন্ডিতের নাম পৃথিবীজুড়ে শুনা যায়নি বললেই চলে ৷
৭- ইউরোপের শ্রেষ্ট বিদ্যাপীঠ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ সেন্টারের তিনি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ৷
৮- ইসলামিক সেন্টার জেনেভা, ইউ এস এ আরবী একাডেমি, লন্ডনের ইসলামিক সেন্টার সহ ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের তিনি প্রাণপুরুষ ছিলেন ৷
৯- ছিলেন ভিজিটিং প্রফেসার, রাবেতা আলমে ইসলামীর পুরোধা, রাবেতা আল আদব আর ইসলামী বিশ্ব সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ৷

১০- একেবারে মামুলী বিছানায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী চন্দ্র শেখর থেকে বাজপেয়ী পর্যন্ত বড় বড় প্রধানমন্ত্রী আর রাজনীতিবিদ তাঁর পাশে বসে পরামর্শ নিতেন ৷
১১- ভারত সরকারের সম্মান সুচক সবকটি পদক তিনি পেয়েছেন ৷
১২- ১৯৯৮ সালে শতাব্দীর এই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্বকে আরব আমিরাত সরকার রাজকীয় সংবর্ধনা প্রদান করেন ৷ তিনি যেতে অস্বীকার করলে তাঁকে জানানো হয় আরব প্রজন্মের বুদ্বিজীবী ছাত্র তরুণরা আপনাকে দেখতে চায় ৷
(ঐ দিন হিন্দুস্তান টাইমস লিড নিউজ করে একজন ভারতীয় মনীষীর জন্য বিমানের সিডিউল পরির্বতন ৷ আকাশে নিরাপত্তা ব্যবস্হা পুনঃবিন্যাস ৷
শুধু তাই নয়; এই মনীষীকে বহন করার জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে দামি বিমান পাঠানো হয় সরাসরি উত্তর ভারতের লাখনৌতে ৷

১৩- উম্মুল মাদারিস দারুল উলুম দেওবন্দের আজীবন সভাপতি ছিলেন।
১৪- বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান নদওয়াতুল উলামার প্রধান পরিচালক ছিলেন ৷
১৫-দাওয়াতে তাবলীগের অন্যতম মূরব্বী ছিলেন।
ইন্দোনেশিয়া থেকে মরোক্ক পর্যন্ত পৃথিবীর সকল আলেমরা তাকে ভালোবাসেন।

মুসলিম বিশ্বের প্রখ্যাত এই দা’ঈ, মশহুর বুযূর্গ, ইসলামী চিন্তাবিদ ও ইতিহাস গবেষক আল্লামা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. ১৯৯৯ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর /২২ রমজান, রোজ শুক্রবার ১১.৫০ মিনিটে পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াতরত অবস্হায় পরম প্রভুর আহবানে তাঁর প্রিয় সান্যিধ্যে গমন করেন।

ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজি’উন। আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে সু-উচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!