উপকূলে শতাধিক গোলা ছুড়ল উত্তর কোরিয়া

0
66
উপকূলে শতাধিক গোলা ছুড়ল উত্তর কোরিয়া

উপকূলে শতাধিক গোলা ছুড়ল উত্তর কোরিয়া:দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর দাবি। এক বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, গোলাবর্ষণের ঘটনায় আমাদের সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়াকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে। এ ধরনের ঘটনা ফের ঘটলে চুপ থাকবে না ইওন সুক ইওল প্রশাসন। খবর রয়টার্স

সামরিক মহড়া থেকে নিজেদের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলীয় সমুদ্র এলাকায় প্রায় ১৩০টি কামানের গোলা নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। যৌথ সীমান্তের কাছে সর্বশেষ সামরিক মহড়া থেকে এসব গোলা ছুড়েছে পিয়ংইয়ং। সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী এ তথ্য জানায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর দাবি, উত্তর কোরিয়ার ছোড়া কিছু গোলা সমুদ্র সীমানার কাছের বাফার জোনে এসে পড়ে। তাছাড়া এ মহড়াকে ২০১৮ সালে সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী যে কোনো ধরনের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করে সই হওয়া আন্তঃকোরীয় সামরিক চুক্তির লঙ্ঘন বলে দাবি করছে সিউল। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ গোলাবর্ষণের ঘটনায় আমাদের সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়াকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে।

পরবর্তীকালে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে চুপ থাকবে না ইওন সুক ইওল প্রশাসন। এদিকে গোলা নিক্ষেপের বিষয়ে তাত্ক্ষণকি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি পিয়ংইয়ং। তবে ওয়াশিংটন ও সিউলের যৌথ সামরিক বিমান মহড়াকে কেন্দ্র করে অক্টোবর ও নভেম্বর মাস জুড়ে যুদ্ধবিমান উড়ানো, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ও মহড়াসহ ধারাবাহিক সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে উত্তর কোরিয়া। অন্যদিকে, কিম জং উনের এমন আগ্রাসি মনোভাবের প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রও এ বছর কোরীয় উপদ্বীপে সামরিক মহড়া বৃদ্ধি করেছে। মিত্র দেশ দুটি বলছে, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত উত্তর কোরিয়াকে ঠেকাতে নিয়মিত যৌথ মহড়া চালানো দরকার।

২০১৮ সালে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার তত্কালীন প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়। বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সামরিক চুক্তি সই হয়। এ চুক্তির পর উত্তর কোরিয়া কিছুটা শান্ত হলেও, দুই কোরিয়ার সম্পর্কের অচলাবস্থা অবসানের উদ্যোগ থেমে গেছে।

তাছাড়া, উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক মহড়া ও বাফার জোনে শক্তি প্রদর্শন ২০১৮ সালে হওয়া চুক্তিগুলোর ভবিষ্যেক প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের ক্রমবর্ধমান ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ফলে ২০১৭ সালের পর দেশটি আবারও পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে।

গত ২ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় শহর উলসানের জলসীমায় দুটি পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। যদিও সিউল সে সময় দাবি করেছিল, এ তথ্য পুরোপুরি মিথ্যা। উলসান কিংবা আশপাশের এলাকায় কোনো ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত হয়নি।

উত্তর কোরিয়া সেদিন প্রায় ২৩টি ক্ষেপণাস্ত্র উেক্ষপণ করেছিল, যার মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উত্তর সীমারেখার ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণে গিয়ে পড়ে। ঐ জায়গাটি দুই কোরিয়ার মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক সামুদ্রিক সীমানা হিসেবে কাজ করে। ১৯৫৩ সালে কোরিয়ান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর প্রথমবারের মতো ঐ স্থানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

গত দুই মাসে উত্তর কোরিয়া ৫০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগ স্বল্পপাল্লার হলেও, আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষাকে নিজেদের জন্য সরাসরি হুমকি বলে মনে করছে। কারণ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের যে কোনো স্থানে হামলা চালানোর সক্ষমতা রাখে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here