ডায়াপার ব্যবহারে শিশুর যেসব ক্ষতি হয়

0
641
ডায়াপার ব্যবহারে শিশু

শিশুর ডায়াপার ব্যবহারের যেমন সুবিধা রয়েছে। তেমনিই আবার অসুবিধাও রয়েছে। শিশুর কোমল সংবেদনশীল ত্বক যখন বেশ কিছু সময় ধরে অথবা বারবার প্রস্রাব ও পায়খানার সংস্পর্শে আসে, তখন আর্দ্রতার কারণে ত্বকের তৈলাক্ত প্রাকৃতিক স্তরের প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে।

এতে ত্বকের ওপর লাল চাকার মতো হয়ে ফুলে ওঠে। অর্থাৎ ত্বকে ফুসকুড়ির মতো দেখা যায়। এতে শিশুরা অনেক যন্ত্রণা ভোগ করে থাকে। চলুন তবে জেনে নিন, এমনটি হলে কী করবেন-

পেট্রোলিয়াম জেলির ব্যবহার ডায়পার জনিত ফুসকুড়ি থেকে শিশুকে বাঁচাতে পারে। এজন্য শিশুর ডায়পার খুলে হালকা গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে তারপর পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।

> দিনের কিছুটা সময় শিশুকে ডায়পার ছাড়া রাখাই সবচেয়ে ভালো। এতে বায়ু চলাচলের কারণে আরও দ্রুত ফুসকুড়ি নিরাময় হবে।

যদি আপনার শিশুর ডায়পার জনিত ফুসকুড়ি হয়ে থাকে তবে তাকে খুব টাইট, রবার বা সিন্থেটিক জাতীয় কিছু পরানো এড়িয়ে চলুন। বরং ঢিলেঢালা সুতির কাপড় পরান।

> আক্রান্ত স্থানে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন। এতে শিশুর ডায়াপার র্যাশের সমস্যা কমে যাবে।

> শিশুর ওয়াইপস কেনার সময় খেয়াল রাখুন যাতে কোনো সুগন্ধ বা অ্যালকোহল না থাকে।

> ডায়পার জনিত ফুসকুড়ি এবং জ্বালা হলে সেক্ষেত্রে টক দই ব্যবহার করা যেতে পারে।

> নারকেল তেল দুর্দান্ত ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। শিশুর আক্রান্ত স্থানে নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন।

গোসলের পানিতে ভিনেগার মিশিয়ে শিশুর পশ্চাৎদেশসহ নিম্নাঙ্গের অংশটুকু পরিষ্কার করে নিন।

 

আজকাল মায়েদের কাছে ডায়াপার এর জনপ্রিয়তা এবং এর চাহিদা ব্যাপক। আর এর কারণ ডায়াপার হাতের কাছে পেলেই যেন মায়েরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, ডায়াপার বাচ্চাদের জন্য কি পরিমাণ ক্ষতির কারণ? নিজের অজান্তেই আপনি আপনার সন্তানের কি পরিমাণ ক্ষতি করছেন!

শিশুদের প্রায়ই ডায়াপারজনিত র‌্যাশ বা এ্যালার্জি এমনকি প্রদাহ পর্যন্ত হতে দেখা যায়। ডায়াপারে ঢাকা অংশটুকু কখনও লাল, ফোলা ফোলা বা দানাদার দেখা গেলে এবং সেখানে ছোঁয়া লাগলে ব্যথায় শিশু কেঁদে উঠলে বুঝতে হবে ডায়াপার র‌্যাশ হয়েছে। তবে এর সঙ্গে জ্বর, ফুসকুড়ি বা ফোসকা বা সাদা পুঁজ নিগর্ত হতে দেখলে সংক্রমণ নির্দেশ করে এবং জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা দরকার।  সাধারণত নয় থেকে ১২ মাস বয়সী শিশুদের এই সমস্যা বেশি হয়।

দীর্ঘ সময় ধরে ডায়াপার পরে থাকা, বিশেষ করে মলত্যাগ করার পর, নতুন ধরনের খাবার দেয়ার কারণে মলের প্রকার পরিবর্তনের সময়, ডায়াপারের প্লাস্টিক এবং ত্বক পরিষ্কারের রাসায়নিক ও সুগন্ধিযুক্ত টিস্যুর প্রতি এ্যালার্জি, অতিরিক্ত আঁটসাঁট ডায়াপার ইত্যাদি হলো এই সমস্যার প্রধান কারণ। ডায়াপার র‌্যাশ প্রতিরোধ করতে হলে ঘন ঘন ও নিয়মিত শিশুদের ডায়াপার পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে মলত্যাগ করার পর পরই। যতটা সম্ভব বাড়িতে ডায়াপারবিহীন অবস্থায় খোলা রাখা উচিত। যাদের র‌্যাশ হয়, তাদের মোছার জন্য সুগন্ধি বা রাসায়নিকযুক্ত টিস্যু ব্যবহার করবেন না।

অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান নিওনেটোলোজি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ, ঢাকা শিশু হাসপাতালের এমএকে আজাদ চৌধুরীর মতে, ডায়াপার ব্যবহার করা বাচ্চাদের জন্য মায়েদের অবশ্যই সচেতন এবং সতর্ক থাকতে হবে। কারণ ডায়াপার হতে বাচ্চার অস্বস্তি ও র‌্যাশ বা এ্যালার্জি এমনকি প্রদাহ পর্যন্ত হতে পারে যা সত্যিই আমাদের কাম্য নয়। আর একটি বিশেষ কথা হচ্ছে অনেক মায়েরা রাতে ঘুমের সময় একবার ডায়াপার পরালে সকালে সেটা খুলে দেন মায়েরা সারারাত নিশ্চিত থাকেন যে, বিছানাপত্র কিছু নষ্ট হলো না যদি এই রকম প্রতিদিনই করে থাকেন তাহলে সেটা অচিরেই বন্ধ করুন। কারণ আপনার বাচ্চার ক্ষতি আপনি নিজেই করছেন। তাই আমি বলব যে অন্তত রাতে ডায়াপার পরানোর পর দু’একবার পরিবর্তন করা উচিত।

প্রতিটি মা ডায়াপার ব্যবহারে সচেতন হোন, নিজের সন্তানকে সুস্থ রাখার জন্য ডায়াপারের সঠিক ব্যবহার করুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here