মওদুদ আহমেদ

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ (জন্ম: ২৪ মে ১৯৪০) বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিএনপির ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। সাবেক সাংসদ ও অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ
বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ – ডিসেম্বর ১৯৯০
রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ
পূর্বসূরী একেএম নুরুল ইসলাম
উত্তরসূরী শাহাবুদ্দিন আহমেদ
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৭ মার্চ ১৯৮৮ – ১২ আগস্ট ১৯৮৯
রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ
পূর্বসূরী মিজানুর রহমান চৌধুরী
উত্তরসূরী কাজী জাফর আহমেদ
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম ২৪ মে ১৯৪০ (বয়স ৮০)
নোয়াখালী, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (১৯৭৮–১৯৮৪),(১৯৯৬-বর্তমান)
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
জাতীয় পার্টি (১৯৮৪–১৯৯৬)
দাম্পত্য সঙ্গী হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ
প্রাক্তন শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ধর্ম ইসলাম

জন্ম

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ২৪ মে ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ।

শিক্ষা

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান পাশ করে বৃটেনের লন্ডনস্থ লিঙ্কন্স ইন থেকে ব্যারিস্টার-এ্যাট-ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে পড়াশুনা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি ব্লান্ড ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলনে।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এ ইয়াহিয়া খান কর্তৃক আহুত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ছিলেন।

রাজনীতি

১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমান নিহত হন এবং এক বছরের ভেতর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৮৫ এর নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ সালে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাঁচবার মওদুদ আহমেদ নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন।

মন্ত্রীত্ব

জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলে মওদুদ আহমেদ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।

  • শিল্প মন্ত্রণালয়
  • পরিকল্পনা, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়
  • বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়
  • পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়
  • বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়
  • যোগাযোগ ও রেলযোগাযোগ মন্ত্রণালয়
  • সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রণালয়
  • টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন মন্ত্রণালয়

অষ্টম জাতীয় সংসদে মওদুদ আহমেদ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক দল সংগঠন

মন্ত্রীত্ব ছাড়াও মওদুদ আহমেদ জিয়াউর রহমানকে বিএনপি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন। এই দলের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এরশাদের জাতীয় পার্টির সংগঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!