বিশ্বমানের আলেম ও মুখলিস দাঈ হতে চাই: তাকরিম

বিশ্বমানের আলেম ও মুখলিস দাঈ হতে চাই: তাকরিম। দেশের জন্য সম্মান ও গৌরব বয়ে আনা ১৩ বছরের কিশোর হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম। সম্প্রতি সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ৪২তম বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় চতুর্থ বিভাগে তৃতীয় স্থান অর্জন করে সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়।

বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সংবর্ধনা ও পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করে। তাকরিম ও তার শিক্ষক মুফতি হোসাইন আহমদ রহমানী মুখোমুখি হয়েছেন একটি সাক্ষাৎকারে।

তাকরিম, তোমার ও তোমার পরিবার সম্পর্কে বলো।

তাকরিম: আমি হাফেজ সালেহ আহমদ তাকরিম। জন্ম ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বাবা হাফেজ আবদুর রহমান মাদ্রাসাশিক্ষক। মা গৃহিণী। আমরা তিন ভাই এক বোন। আমাদের টানাপোড়েনের সংসার। একেবারে নিম্নবিত্ত বলা যায়।

কত বছর বয়সে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছ এবং কত বছরে হিফজ সম্পন্ন করেছ?

তারকিম: আমার বাবা নিজেও হাফেজ এবং কোরআনের শিক্ষক। তাই ৬ বছর বয়সে আমি তাঁর মাদ্রাসায় ভর্তি হই। তাঁর কাছেই দুই বছরের মধ্যে কায়দা, আমপারা ও নাজেরা শেষ করে হিফজের প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করি। তারপর হিফজ সম্পন্ন করা এবং এ বিষয়ে উচ্চতর পড়ালেখার জন্য বাবা আমাকে মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী ঢাকায় ভর্তি করান। এখানেই আমি হিফজ সম্পন্ন করি এবং এ বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা অর্জন করি।

বর্তমানে কোন বিষয়ে পড়াশোনা করছ?

তাকরিম: মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী ঢাকার কিতাব বিভাগের প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছি।

ভবিষ্যতে কী হওয়ার স্বপ্ন দেখো?

তাকরিম: বিশ্বমানের আলেম ও দ্বীনের মুখলিস দাঈ হতে চাই।

এই সম্মাননা অর্জনে তোমার অনুভূতি কী?

তাকরিম: সৌদি আরবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীদের মধ্যে বাংলাদেশের পতাকা সমুন্নত করতে পেরে আমি আনন্দিত। এর জন্য প্রথমে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। এরপর যাঁদের অসামান্য অবদানে আমি এত দূর আসতে পেরেছি, আমার শ্রদ্ধাভাজন বাবা-মা ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

দেশে-বিদেশে তোমাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত মানুষের উদ্দেশে কিছু বলো?

তাকরিম: আপামর জনসাধারণ আমার এই বিজয়ে উচ্ছ্বসিত হওয়া দেশপ্রেমেরই বহিঃপ্রকাশ। আমি মনে করি, আমার বিজয় লাল-সবুজের বিজয়, ১৭ কোটি বাঙালির জয়। সবার কাছে আমি দোয়া চাই, আল্লাহ যেন আমাকে দ্বীনের একনিষ্ঠ খাদেম হওয়ার তাওফিক দেন।

আর কোন কোন দেশ থেকে সম্মাননা অর্জন করেছ?

তাকরিম: আমি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রথমে কুয়েতের জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হলেও করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে সেই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়নি। এরপর ইরান আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রথম স্থান অর্জন করি। এরপর লিবিয়ায় সপ্তম স্থান অর্জন করি। এরপর এই অর্জন।

এই সম্মাননা অর্জনে সবচেয়ে বেশি অবদান কার বলে মনে করো?

তাকরিম: এই সম্মান অর্জনে সবচেয়ে বেশি অবদান আমার পিতৃতুল্য শিক্ষক মারকাযু ফয়জিল কুরআন আল ইসলামী ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজী মাসুম সাহেবের। এরপর আমার মাদ্রাসার হিফজ বিভাগীয় প্রধান হাফেজ কারি আবদুল্লাহ আল মামুন সাহেবসহ অন্য শিক্ষকদের।

Leave a Comment

error: Content is protected !!