হযরত ইউনুছ (আঃ) এর একটি ঘটনা

হযরত ইউনুছ (আঃ)-কে সমুদ্রের মাছেরা যখন সমুদ্রের পাড়ে বমি করে দিয়ে রেখে গেল, তখন তাঁর শরীরের চামড়া এতটা নাদুস্সুদুস এবং পাতলা হয়ে গিয়েছিল যে, যেমন একটি নবজন্ম পাখির বাচ্চার চামড়া হয়, যার কারণে তিনি রুদ্রের তাপ সহ্য করতে পারছিলেন না, খূবই দুর্বল ছিলেন এবং অনেকক্ষন বেহুশ অবস্থায় পড়ে ছিলেন।

অতঃপর আল্লাহ তাআলার নির্দেশে কদুর গাছ বা আংগুরের গাছ চলে আসে ও তাঁকে ছাঁয়া দেয় এবং উক্ত কদু বা আংগুর গাছের পাতা দ্বারা তারঁ ক্ষুদা এবং পিপাসা নিবারণ করেন। অল্প দিনের মধ্যেই তিনি কিছুটা সতেজ ও সুস্থ হয়ে উঠেন এবং চলা-ফেরা করতে লাগেন।

অতঃপর আল্লাহ তাআলার নির্দেশে কিছু উঁইপোকা এসে কদু বা আংগুর গাছের গোড়া কেটে ফেলল, যার কারণে গাছের লতা-পাতা সুকিয়ে গেল এবং ইউনুছ (আঃ)-এর ছায়া পাওয়াও বন্ধ হয়ে গেল এবং পুনরায় সূর্যর তাপ তাঁর অসহ্য হয়ে উঠলো, তিঁনি আল্লাহ্‌র কাছে দুআ করলেন যে, ইয়া আল্লাহ! এই মরুপ্রান্তরে পিপাসা নিবারণ করার এবং ছায়া পাওয়ার একটাই উপায় ছিল তাও ধ্বংস হয়ে গেল, ইয়া আল্লাহ! আমি খূব দূঃখি, ইয়া আল্লাহ! তুমিই একমাত্র আমার সাহায্যকারী, আমায় সাহায্য কর?

আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে ইউনুছ (আঃ)-এর প্রতি ওয়াহী বা বার্তা এলো যে, হে ইউনুছ! যে কদু বা আংগুর গাছের লতা-পাতা তোমার পিপাসা মেটাত ও ছায়া দিত তা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তুমি এত দূঃখি; যার কারিকরও তুমি নও। অথচ, চল্লিশ হাজার মানুষ যারা আমার সৃষ্ট, যাদেরকে আমিই বানিয়েছি, যখন তারা তাদের উপর আযাব বা শাস্তি আসতে দেখে তখন তারা আমার দিকে ফিরে এবং তাওবা বা ক্ষমাপ্রার্থনা করে আমার দেখানো রাস্তা অবলম্বন করে। অতঃপর আমি তাদের তাওবাহ কবূল করে তাদের উপর থেকে আযাব বা শাস্তি উঠিয়ে নেই, আমি কি ভাবে আমার সৃষ্ট মানুষকে যাদের সৃষ্টিকর্তাই আমি ধ্বংস করতে পারি?

হযরত ইউনুছ (আঃ) সাথে সাথে আল্লাহ্‌র দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে সিজদায় পড়ে গেলেন, মহান রব্বুল আলামীন তাঁর তাওবাহ কবূল করে নিলেন, এমতবস্থায় তাঁর উম্মতগণ তাঁকে খুঁজতে খুঁজতে তাঁর কাছে পৌঁছে গেলো। হযরত ইউনুছ (আঃ)-এর উম্মতগনই একমাত্র উম্মত যারা আল্লাহ তাআলার আযাব বা শাস্তির নমুনা দেখেই তাওবাহ করেছে, আল্লাহ তাআলা তা কবূল করে নিয়েছেন, সে সাথে তারা আল্লাহ তাআলার নির্দেশিত সঠিক রাস্তায় চলে এসেছে।

ইউনুছ (আঃ) এক যুগ পর্যন্ত নিজের উম্মতের সাথে থেকে তাদেরকে হিদায়াতমূল ওয়ায,নাছীহাত করতে থাকেন এবং পরিশেষে তিঁনি তারঁ কওমের মাঝেই ইন্তিকাল করেন।

প্রকৃত তাওবাহ বড় থেকে বড় অবাধ্য বান্দার মাঝেও পরিবর্তন এনে দেয়, আর মহান রব! যিনি তাঁর বান্দাদেরকে নিশ্চিত নিজের মা-বাবার চেয়েও অনেক অনে……………….ক গুন বেশি ভালবাসেন।

মহান রব! আমাদেরকে প্রকৃত মনে তাওবাহ করার তাওফীক্ব দান করুন-আমীন
নিজে পড়ুন এবং শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরও পড়া বা দেখার সুযোগ করে দিন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!