হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জিহাদী, ঢাকার সেক্রেটারি মামুনুল

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর মৃত্যুতে খালি হয়ে যাওয়া হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদীকে এবং ঢাকা মহানগরের সেক্রেটারি পদে আল্লামা মামুনুল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো হেফাজতে ইসলামের এক বিবৃতিতে দলটি ২০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণার কথা জানানো হয়েছে।

নতুন মহাসচিব মনোনয়ন, কমিটির আকার বৃদ্ধি এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি গঠনের এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে ২৩ ডিসেম্বর।

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলাবাদী শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে হাটাহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতের আমির, প্রধান উপদেষ্টাসহ শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে এক বিশেষ বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদীকে মনোনীত করা হয়।

এর আগে দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘হেফাজতে ইসলাম’ এর ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে, সাবেক আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে ‘হত্যার’ অভিযোগ এনে মামলা করায় মামলার বাদী শফীর শ্যালক মঈন উদ্দিন ও শফীর পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের ‍হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়।

গত ১৫ নভেম্বর সম্মেলনে মহাসচিবের পদ পাওয়া আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (৭৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ ডিসেম্বর মারা যান। তিনি প্রতিষ্ঠার পর থেকে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি ছিলেন।

ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের পদ পাওয়া আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী ১৫ নভেম্বর ঘোষিত হেফাজতের নতুন কমিটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির পদ পান। তিনি ঢাকার খিলগাঁও জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল উলূম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং হাটহাজারী মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ফোরাম শুরার সদস্য।

আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী হেফাজত আমির আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে সামনের সারিতে দেখা গেছে।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর মৃত্যুতে হেফাজতের ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতির পদটিও শূন্য হয়। ওই কমিটির সভাপতি করা হয়েছে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীবকে। আর সেক্রেটারির পদ দেওয়া হয়েছে আরেক যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হককে।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন আল্লামা মামুনুল হক। এরপর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক মাহফিলে তার অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও চট্টগ্রাম নগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের প্রতিরোধের মুখে সেই মাহফিলে অংশ নেননি আল্লামা মামুনুল হক

শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে আল্লামা আহমদ শফীর শ্যালক মঈন উদ্দিন অভিযোগ করেন, আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর দিন ঢাকার ফরিদাবাদ মাদ্রাসায় মামুনুলের অনুসারীরা আল্লামা শফীর ছোট ছেলে আনাস মাদানীর ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। আল্লামা শফীর মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায়ও আল্লামা মামুনুল হককে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে হেফাজতের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতির পদ পেয়েছেন মাওলানা তাজুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি পদ পেয়েছেন মাওলানা লোকমান হাকীম।

২৩ ডিসেম্বর যে বৈঠকে এসব রদবদল হয় তাতে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের প্রধান উপদেষ্টা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, যিনি জুনাইদ বাবুনগরীর মামা।

হেফাজতে ইসলামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওই সভায় উপদেষ্টা নোমান ফয়জী, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির তাজুল ইসলাম, মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, জসিম উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব জুনাইদ আল হাবীব, মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, অর্থ সম্পাদক মুনির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়জীসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

error: Content is protected !!