চট্টগ্রাম (/tʃɪtəɡɒŋ/ Chôṭṭôgram; ঐতিহাসিক নাম: পোর্টো গ্র্যান্ডে এবং ইসলামাবাদ) বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বন্দরনগরী নামে পরিচিত শহর, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত। বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত পাহাড়, সমুদ্রে এবং উপত্যকায় ঘেরা চট্টগ্রাম শহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে বিখ্যাত।
ঢাকার পর বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ শহর হচ্ছে চট্টগ্রাম। এখানে দেশের সর্ববৃহৎ বন্দর ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি এশিয়ায় ৭ম এবং বিশ্বের ১০ম দ্রুততম ক্রমবর্ধমান শহর।
চট্টগ্রাম | |||||
---|---|---|---|---|---|
মহানগরী | |||||
উপরের বাম দিক থেকে: শাহ আমানত সেতু, চট্টগ্রাম বন্দর, কোর্ট হাউস, ভাটিয়ারী হ্রদ, কমনওয়েলথ ওয়ার সেমেট্রি, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস, চেরাগী পাহাড়, কর্ণফুলী চ্যানেল
|
|||||
ডাকনাম: জ্বালনধারা, চাটিগাঁও, চাটগাঁ, ইসলামাবাদ, চট্টলা বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী | |||||
বাংলাদেশে চট্টগ্রামের অবস্থান |
|||||
স্থানাঙ্ক: ২২°২২′০″ উত্তর ৯১°৪৮′০″ পূর্বস্থানাঙ্ক: ২২°২২′০″ উত্তর ৯১°৪৮′০″ পূর্ব | ![]() |
|||||
দেশ | ![]() |
||||
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ | ||||
জেলা | চট্টগ্রাম জেলা | ||||
প্রতিষ্ঠা | ১৩৪০ | ||||
শহরের মর্যাদা প্রাপ্তি | ১৮৬৩ | ||||
সরকার | |||||
• ধরন | মেয়র-কাউন্সিল | ||||
• শাসক | চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন | ||||
• নগর মেয়র | আ জ ম নাছির উদ্দিন | ||||
আয়তন | |||||
• মহানগরী | ১৬৮.০৭ কিমি২ (৬৪.৮৯ বর্গমাইল) | ||||
জনসংখ্যা (২০১১) | |||||
• মহানগরী | ২৫,৮১,৬৪৩ | ||||
• জনঘনত্ব | ১৫৩৪৫/কিমি২ (৩৯৭৪০/বর্গমাইল) | ||||
• মহানগর | ৪০,০৯,৪২৩ | ||||
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) | ||||
ডাক কোড | ৪০০০ | ||||
জিডিপি (২০০৫) | ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার | ||||
কলিং কোড | ৩১ | ||||
ওয়েবসাইট | চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন |
ব্যুৎপত্তি
চট্টগ্রামের ব্যুৎপত্তি অনিশ্চিত। একটি ব্যাখ্যার কৃতিত্ব প্রথম আরব ব্যবসায়ীদের শাত (ব-দ্বীপ) ও গঙ্গা (গঙ্গা) আরবি শব্দসমূহের সমন্বয়ের জন্য।
ইতিহাস
ঐতিহাসিক ল্যাসেনের ধারণা সেখানে উল্লিখিত পেন্টাপোলিশ আসলে চট্টগ্রামেরই আদিনাম। মৌর্য সাম্রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত নয় তবে পূর্ব নোয়াখালির শিলুয়াতে মৌর্য যুগের ব্রাহ্মী লিপিতে একটি মূর্তির পাদলিপি পাওয়া গেছে। তিব্বতের বৌদ্ধ ঐতিহাসিক লামা তারানাথের একটি গ্রন্থে চন্দ্রবংশের শাসনামলের কথা দেখা যায় যার রাজধানী ছিল চট্টগ্রাম। এর উল্লেখ আরাকানের সিথাং মন্দিরের শিলালিপিতেও আছে। তারানাথের গ্রন্থে দশম শতকে গোপীনাথ চন্দ্র নামের রাজার কথা রয়েছে।
সে সময় আরব বণিকদের চট্টগ্রামে আগমন ঘটে। আরব ভূগোলবিদদের বর্ণনার ‘সমুন্দর’ নামের বন্দরটি যে আসলে চট্টগ্রাম বন্দর তা নিয়ে এখন ঐতিহাসিকরা মোটামুটি নিশ্চিত। সে সময় পালবংশের রাজা ছিলেন ধর্মপাল। পাল বংশের পর এ অঞ্চলে একাধিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের সৃষ্টি হয়। ৯৫৩ সালে আরাকানের চন্দ্রবংশীয় রাজা সু-লা-তাইং-সন্দয়া চট্টগ্রাম অভিযানে আসলেও কোন এক অজ্ঞাত কারণে তিনি বেশি দূর অগ্রসর না হয়ে একটি স্তম্ভ তৈরি করেন। এটির গায়ে লেখা হয় ‘চেৎ-ত-গৌঙ্গ’ যার অর্থ ‘যুদ্ধ করা অনুচিৎ’।
সে থেকে এ এলাকাটি চৈত্তগৌং হয়ে যায় বলে লেখা হয়েছে আরাকানি পুঁথি ‘রাজাওয়াং’-এ। এ চৈত্তগৌং থেকে কালক্রমে চাটিগ্রাম, চাটগাঁ, চট্টগ্রাম, চিটাগাং ইত্যাদি বানানের চল হয়েছে। চন্দ্রবংশের পর লালবংশ এবং এরপর কয়েকজন রাজার কথা কিছু ঐতিহাসিক উল্লেখ করলেও ঐতিহাসিক শিহাবুদ্দিন তালিশের মতে ১৩৩৮ সালে সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের চট্টগ্রাম বিজয়ের আগ পর্যন্ত ইতিহাস অস্পষ্ট।
এ বিজয়ের ফলে চট্টগ্রাম স্বাধীন সোনারগাঁও রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। সে সময়ে প্রায় ১৩৪৬ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম আসেন বিখ্যাত মুর পরিব্রাজক ইবনে বতুতা। তিনি লিখেছেন – “বাংলাদেশের যে শহরে আমরা প্রবেশ করলাম তা হল সোদকাওয়াঙ (চট্টগ্রাম)। এটি মহাসমূদ্রের তীরে অবস্থিত একটি বিরাট শহর, এরই কাছে গঙ্গা নদী- যেখানে হিন্দুরা তীর্থ করেন এবং যমুনা নদী একসঙ্গে মিলেছে এবং সেখান থেকে প্রবাহিত হয়ে তারা সমুদ্রে পড়েছে।
গঙ্গা নদীর তীরে অসংখ্য জাহাজ ছিল, সেইগুলি দিয়ে তারা লখনৌতির লোকেদের সঙ্গে যুদ্ধ করে। …আমি সোদওয়াঙ ত্যাগ করে কামরু (কামরূপ) পর্বতমালার দিকে রওনা হলাম।” ১৩৫২-১৩৫৩ সালে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের পুত্র ইখতিয়ার উদ্দিন গাজী শাহকে হত্যা করে বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ বাংলার মসনদ দখল করলে চট্টগ্রামও তার করতলগত হয়। তার সময়ে চট্টগ্রাম বাংলার প্রধান বন্দর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর হিন্দুরাজা গণেশ ও তার বংশধররা চট্টগ্রাম শাসন করেন। এরপরে বাংলায় হাবশি বংশের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৪৯২ সালে আলাউদ্দিন হোসেন শাহ বাংলার সুলতান হন। চট্টগ্রামের দখল নিয়ে তাকে ১৪১৩-১৪১৭ সাল পর্যন্ত ত্রিপুরার রাজা ধনমানিক্যের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকতে হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রাজা ধনমানিক্যের মৃত্যুর পর হোসেন শাহের রাজত্ব উত্তর আরাকান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। তার সময়ে উত্তর চট্টগ্রামের নায়েব পরবগল খানের পুত্র ছুটি খানের পৃষ্ঠপোষকতায় শ্রীকর নন্দী মহাভারতের একটি পর্বের বঙ্গানুবাদ করেন।
পর্তুগিজদের আগমন ও বন্দরের কর্তৃত্ব লাভ
১৫১৭ সাল থেকে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে আসতে শুরু করে। বাণিজ্যের চেয়ে তাদের মধ্যে জলদস্যুতার বিষয়টি প্রবল ছিল। বাংলার সুলতান প্রবলভাবে তাদের দমনের চেষ্টা করেন। কিন্তু এ সময় আফগান শাসক শের শাহ বাংলা আক্রমণ করবেন শুনে ভীত হয়ে গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ পর্তুগিজদের সহায়তা কামনা করেন। তখন সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ১৫৩৭ সালে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে। একই সঙ্গে তাদেরকে বন্দর এলাকার শুল্ক আদায়ের অধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ১৫৩৮ সালে শের শাহের সেনাপতি চট্টগ্রাম দখল করেন। তবে ১৫৮০ সাল পর্যন্ত আফগান শাসনামলে সবসময় ত্রিপুরা আর আরাকানিদের সঙ্গে যুদ্ধ চলেছে।
নবাবি শাসনামল
১৭২৫ সালে প্রায় ৩০ হাজার মগ সৈন্য চট্টগ্রামে ঢুকে পড়ে চট্টগ্রামবাসীকে বিপদাপন্ন করে তোলে। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলার নবাব তাদের তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। এই সময় বাংলার নবাবদের কারণে ইংরেজরা চট্টগ্রাম বন্দর কোনভাবেই দখল করতে পারেনি। বাংলার নবাবরা পার্বত্য এলাকার অধিবাসীদের সঙ্গে, বিশেষ করে চাকমা সম্প্রদায়ের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে সদ্ভাব বজায় রাখেন।
মুঘল শাসনামল
১৬৬৬ সালে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খানকে চট্টগ্রাম দখলের নির্দেশ দেন। সুবেদারের পুত্র উমেদ খানের নেতৃত্বে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় আরাকানিদের পরাজিত করেন এবং আরাকানি দুর্গ দখল করেন। যথারীতি পর্তুগিজরা আরাকানিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে মুঘলদের পক্ষ নেয়। মুঘল সেনাপতি উমেদ খান চট্টগ্রামের প্রথম ফৌজদারের দায়িত্ব পান। শুরু হয় চট্টগ্রামে মুঘল শাসন। তবে মুঘলদের শাসনামলের পুরোটা সময় আরাকানিরা চট্টগ্রাম অধিকারের চেষ্টা চালায়। টমাস প্রাট নামে এক ইংরেজ আরাকানিদের সঙ্গে যোগ দিয়ে মুঘলদের পরাজিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
কোলকাতার গোড়াপত্তনকারী ইংরেজ জব চার্নকও ১৬৮৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দখলের ব্যর্থ অভিযান চালান। ১৬৮৮ সালে ক্যাপ্টেন হিথেরও অনুরূপ অভিযান সফল হয় নি। ১৬৭০ ও ১৭১০ সালে আরাকানিরা চট্টগ্রামের সীমান্তে ব্যর্থ হয়।
আরাকানি শাসন
১৫৮১ সাল থেকে ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সম্পূর্ণভাবে আরাকানের রাজাদের অধীনে শাসিত হয়। তবে পর্তুগিজ জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য এ সময় খুবই বৃদ্ধি পায়। বাধ্য হয়ে আরাকান রাজা ১৬০৩ ও ১৬০৭ সালে শক্ত হাতে পর্তুগিজদের দমন করেন। ১৬০৭ সালেই ফরাসি পরিব্রাজক ডি লাভাল চট্টগ্রাম সফর করেন। তবে সে সময় পর্তুগিজ জলদস্যু গঞ্জালেস সন্দ্বীপ দখল করে রেখেছিলেন। পর্তুগিজ মিশনারি পাদ্রি ম্যানরিক ১৬৩০-১৬৩৪ সময়কালে চট্টগ্রামে উপস্থিতকালে চট্টগ্রাম শাসক আলামেনের প্রশংসা করে যান। ১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম মুঘলদের হস্তগত হয়। চট্টগ্রামে আরাকানি শাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
চট্টগ্রাম আরাকানিদের কাছ থেকে অনেক কিছুই গ্রহণ করে। জমির পরিমাণে মঘী কানির ব্যবহার এখনো চট্টগ্রামে রয়েছে। মঘী সনের ব্যবহারও দীর্ঘদিন প্রচলিত ছিল। সে সময়ে আরাকানে মুসলিম জনবসতি বাড়ে। আরকান রাজসভায় মহাকবি আলাওল, দৌলত কাজী এবং কোরেশী মাগন ঠাকুর এর মতো বাংলা কবিদের সাধনা আর পৃষ্ঠপোষকতায় সেখানে বাংলা সাহিত্যের প্রভূত উন্নতি হয়। পদ্মাবতী আলাওলের অন্যতম কাব্য।
পলাশীর যুদ্ধ ও ইংরেজদের কাছে চট্টগ্রাম হস্তান্তর
পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর ইংরেজরা চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য নবাব মীর জাফরের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। তবে, মীর জাফর কোনভাবেই ইংরেজদের চট্টগ্রাম বন্দরের কর্তৃত্ব দিতে রাজি হন নি। ফলে, ইংরেজরা তাকে সরিয়ে মীর কাশিমকে বাংলার নবাব বানানোর ষড়যন্ত্র করে। ১৭৬১ সালে মীর জাফরকে অপসারণ করে মীর কাশিম বাংলার নবাব হয়ে ইংরেজদের বর্ধমান, মেদিনীপুর ও চট্টগ্রাম হস্তান্তরিত করেন।
চট্টগ্রামের শেষ ফৌজদার রেজা খান সরকারিভাবে চট্টগ্রামের শাসন প্রথম ইংরেজ চিফ ভেরেলস্ট-এর হাতে সমর্পণ করেন। শুরু হয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন। কোম্পানির শাসনামলে চট্টগ্রামবাসীর ওপর করারোপ দিনে দিনে বাড়তে থাকে। তবে ১৮৫৭ সালের আগে চাকমাদের বিদ্রোহ আর সন্দ্বীপের জমিদার আবু তোরাপের বিদ্রোহ ছাড়া ইংরেজ কোম্পানিকে তেমন একটা কঠিন সময় পার করতে হয়নি। সন্দ্বীপের জমিদার আবু তোরাপ কৃষকদের সংগঠিত করে ইংরেজদের প্রতিরোধ করেন। কিন্তু ১৭৭৬ সালে হরিষপুরের যুদ্ধে তিনি পরাজিত ও নিহত হলে সন্দ্বীপের প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ে।
অন্যদিকে ১৭৭৬ থেকে ১৭৮৯ সাল পর্যন্ত চাকমারা প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সম্মুখ সমরে চাকমাদের কাবু করতে না পেরে ইংরেজরা তাদের বিরুদ্ধে কঠিন অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে শেষ পর্যন্ত চাকমাদের কাবু করে। ইংরেজরা আন্দরকিল্লা জামে মসজিদকে গোলাবারুদের গুদামে পরিণত করলে চট্টগ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। মসজিদের জন্য নবাবি আমলে প্রদত্ত লাখেরাজ জমি ১৮৩৮ সালের জরিপের সময় বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরে চট্টগ্রামের জমিদার খান বাহাদুর হামিদুল্লাহ খান কলিকাতায় গিয়ে গভর্নরের কাছে আবেদন করে এটি উদ্ধার করার ব্যবস্থা করেন।
ভূগোল
বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বে ২০°৩৫’ থেকে ২২°৫৯’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°২৭’থেকে ৯২°২২’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ বরাবর এর অবস্থান। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের উপকূলীয় পাদদেশকে বিস্তৃত করে। কর্ণফুলী নদী চট্টগ্রাম শহর সহ ব্যবসায় জেলা দক্ষিণ তীর ধরে বয়ে চলেছে। নদীটি বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে এবং ১২ কিলোমিটার মোহনা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মুল শহর বিস্তুৃত। সীতাকুন্ড পাহাড় চট্টগ্রাম জেলার সর্বোচ্চ শিখর, যার উচ্চতা ৩৫১ মিটার (১,১৫২ ফুট)। বাটালি পাহাড় শহরের মধ্যকার সর্বোচ্চ স্থান, যার উচ্চতা ৮৫.৩ মিটার (২৮০ ফুট। চট্টগ্রামে অনেকগুলি হ্রদ রয়েছে যা মুঘল আমলে নির্মিত হয়েছিল।
১৯২৪ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং দল ফয়েস হ্রদটি খনন করেছিল। চট্টগ্রামের উত্তরে সিলেট বিভাগ এবং ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্য এবং মেঘনা নদী, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য, ত্রিপুরা ও মায়ানমার এবং পশ্চিমে মেঘনা নদী, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ। এছাড়াও চট্টগ্রামের পূর্বে পার্বত্য জেলাসমূহ এবং দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা রয়েছে। চট্টগ্রাম শহর উত্তরে ফৌজদারহাট, দক্ষিণে কালুরঘাট এবং পূর্বে হাটহাজারী পর্যন্ত বিস্তৃত।
প্রশাসনিক বিভাগ
চট্টগ্রাম শহর এলাকা ১৬টি থানার অধীনঃ
- চান্দগাঁও
- বায়জীদ বোস্তামী
- বন্দর
- ডবলমুরিং
- পতেঙ্গা
- কোতোয়ালী
- পাহাড়তলী
- পাঁচলাইশ
- বাকলিয়া
- কর্ণফুলী
- হালিশহর
- খুলশী থানা এবং নবগঠিত চকবাজার
- আকবরশাহ
- সদরঘাট ও ইপিজেড
চট্টগ্রাম শহরে রয়েছে ৪১টি ওয়ার্ড এবং ২৩৬টি মহল্লা। শহরের মোট এলাকা হলো ১৬৮.০৭ বর্গ কিলোমিটার।
নগর প্রশাসন
১৮৬৩ সালের ২২শে জুন চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালিটি’র যাত্রা শুরু। তবে এর প্রশাসন ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৮ জন কমিশনার সমন্বয়ে পরিষদ গঠন করা হয় ১৮৬৪ সালে। ঐসময়ে চট্টগ্রাম শহরের সাড়ে চার বর্গমাইল এলাকা মিউনিসিপ্যালিটির আওতাধীন ছিল। প্রথমে ৪টি ওয়ার্ড থাকলেও ১৯১১ সালে ৫টি ওয়ার্ড সৃষ্টি করা হয়। চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালিটি ১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সিটি কর্পোরেশনে রুপান্তরিত হয়। বর্তমানে ওয়ার্ড সংখ্যা ৪১টি।
চট্টগ্রাম শহর এলাকা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-এর অধীনস্থ। শহরবাসীদের সরাসরি ভোটে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং ওয়ার্ড কমিশনারগণ নির্বাচিত হন। বর্তমানে এই শহরের মেয়র আ.জ.ম নাছির। শহরের আইন-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য নিযুক্ত রয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর সদর দপ্তর দামপাড়ায় অবস্থিত। চট্টগ্রামের প্রধান আদালতের স্থান লালদীঘি ও কোতোয়ালী এলাকায় ঐতিহাসিক কোর্ট বিল্ডিং এ।
জনসংখ্যা
চট্টগ্রাম শহরের জনসংখ্যা ২৫০০০০ জনেরও বেশি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার জনসংখ্যা ৪,০০৯,৪২৩ জন। ২০০২ সালের তথ্য অনুযায়ী মোট জনসংখ্যা ৫৪.৩৬% হল পুরুষ এবং ৪৫.৬৪% হল মহিলা, এবং শহরে সাক্ষরতার হার ৬০% শতাংশ ছিল। মুসলমানরা ৮৬% জনসংখ্যার বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং বাকী ১২% হিন্দু এবং ২% অন্যান্য ধর্ম লোক বসবাস করে। বাংলায় সুলতানি ও মুঘল শাসনামলে চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীর একটি বিরাট পরিবর্তন সাধিত হয়। সপ্তম শতাব্দীর প্রথমদিকে মুসলিম অভিবাসন শুরু হয়েছিল এবং মধ্যযুগীয় সময়ে উল্লেখযোগ্য মুসলিম জনবসতি গড়ে উঠেছিল।
পারস্য ও আরব থেকে আগত মুসলিম ব্যবসায়ী, শাসক এবং প্রচারকরা প্রথমদিকে মুসলমান বসতি স্থাপন করেছিলেন এবং তাদের বংশধররা এই শহরের বর্তমান মুসলিম জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ। শহরে ইসমাইলিস এবং যাযাবর শিয়া সহ অপেক্ষাকৃত ধনী এবং অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবিত শিয়া মুসলিম সম্প্রদায় রয়েছে। এই শহরে অনেক জাতিগত সংখ্যালঘুও রয়েছে, বিশেষত চাকমা, রাখাইন এবং ত্রিপুরী সহ চট্টগ্রাম বিভাগের সীমান্তবর্তী পাহাড়ের আদিবাসী গোষ্ঠীর সদস্য; এবং তার পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থীও রয়েছে। বারুয়াস নামে পরিচিত এ অঞ্চলের বাংলাভাষী থেরবাদী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা চট্টগ্রামের অন্যতম প্রাচীন সম্প্রদায় এবং বাংলাদেশের বৌদ্ধধর্মের সর্বশেষ অবশেষ।
প্রায়শই ফায়ারিংস নামে পরিচিত, পর্তুগিজ জনগোষ্ঠীর বংশোদ্ভূত চট্টগ্রামের প্রাচীন ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়, যারা পাতেরঘাটা পুরানো পর্তুগিজ ছিটমহলে বাস করেন। এখানে একটি ছোট্ট উর্দুভাষী বিহারি সম্প্রদায়ও রয়েছে, যারা বিহারি কলোনি নামে পরিচিত জাতিগত ছিটমহলে বসবাস করে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য প্রধান নগর কেন্দ্রগুলির মতো, এ মহানগরেরও ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ অঞ্চল থেকে শহরাঞ্চলমুখি মানুষের ঢলের ফলস্বরূপ চট্টগ্রামের বস্তিগুলোর অবিচ্ছিন্নভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের দারিদ্র্য বিমোচনের প্রকাশনার তথ্য অনুসারে, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১,৮১৪ টি বস্তি রয়েছে, যাতে প্রায় ১৮০,০০০ বস্তিবাসী বসবাস করে, যা রাজধানী ঢাকার পরে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বস্তিবাসীরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রায়শই উচ্ছেদের মুখোমুখি হন এবং তাদের সরকারি জমিতে অবৈধ আবাসনের জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
সাহিত্য
চট্টগ্রামে বাংলা সাহিত্যের বিকাশ শুরু হয় ষোড়শ শতকে। সে সময়কার চট্টগ্রামের শাসক পরাগল খাঁ এবং তার পুত্র ছুটি খাঁর সভা কবি ছিলেন কবীন্দ্র পরমেশ্বর ও শ্রীকর নন্দী।[২৩] কবীন্দ্র পরমেশ্বর মহাভারতের অশ্বমেধ পর্বের একটি সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ করেন। আর শ্রীকর নন্দী জৈমিনি সংহিতা অবলম্বনে অশ্বমেধ পর্বের বিস্তারিত অনুবাদ করেন।
চট্টগ্রামের মধ্যযুগের কবি
- কবি শাহ মোহাম্মদ ছগির
- রহিমুন্নিসা
- আলী রজা
- মুহম্মদ মুকিম
- কবি মুজাম্মিল
- কবি আফজাল আলী
- সাবিরিদ খান
- কবীন্দ্র পরমেশ্বর
- শ্রীকর নন্দী
- দৌলত উজির বাহরাম খান
- হাজী মুহম্মদ কবির
- কবি শ্রীধর
- সৈয়দ সুলতান
- শেখ পরান
- মোহাম্মদ নসরুল্লা খাঁ
- মুহাম্মদ খা
- নওয়াজিশ খান
- করম আলী
- কবি কাজি হাসমত আলী।
আরাকানের রাজসভায় চট্টগ্রামের কবি
- দৌলত কাজী
- মহাকবি আলাওল
- কোরেশী মাগন ঠাকুর
- কবি মরদন
- আব্দুল করিম খোন্দকার।
অষ্টম শতক থেকে পরবর্তীকালের উল্লেখযোগ্য কবি ও সাহিত্যিক
- কবি আবদুল হাকিম
- রামজীবন বিদ্যাভূষণ
- ভবানী শঙ্কর দাস
- নিধিরাম আচার্য
- মুক্তারাম সেন
- কবি চুহর
- হামিদুল্লা খান
- আসকর আলী পন্ডিত
- রঞ্জিত রাম দাস
- রামতনু আচার্য
- ভৈরব আইচ
- নবীন চন্দ্রদাস
- নবীনচন্দ্র সেন
- শশাঙ্ক মোহন সেনগুপ্ত
- আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ
- মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী
- বেন্দ্রকুমার দত্ত
- হেমেন্দ্র বালা দত্ত
- পূর্ণচন্দ্র চৌধুরী
- আশুতোষ চৌধুরী
- রমেশ শীল
- সতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণ।
আধুনিক যুগের কবি-সাহিত্যিক
- মাহাবুব উল আলম
- আবুল ফজল (সাহিত্যিক)
- সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ
- ওহীদুল আলম
- ডক্টর আবদুল করিম
- আহমদ শরীফ
- আইনুন নাহার
- নুরুন নাহার
- সুচরিত চৌধুরী
- আবদুল হক চৌধুরী
- কবি-কথাসাহিত্যিক আহমদ ছফা
- ড. মোহাম্মদ আমীন (১৯৬৪-)
- কবি সর্বানন্দ বড়ুয়া
- কবি নবীন দাশ
- ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া
- কবি কাফি কামাল
- চৌধুরী জহুরুল হক
- কবি আব্দুল হাকিম
- আজহার মাহমুদ (প্রাবন্ধিক)
শিক্ষা
চট্টগ্রামে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে ভারতের অন্যান্য স্থানের মতো ধর্ম ভিত্তিক তিন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। আরবি নির্ভর মুসলমানদের জন্য মক্তব-মাদ্রাসা, সংস্কৃত ভাষা নির্ভর হিন্দুদের জন্য টোল-পাঠশালা-চতুষ্পাঠী এবং বৌদ্ধদের জন্য কেয়াং বা বিহার। সে সময় রাষ্ট্রাচারের ভাষা ছিল ফার্সি। ফলে হিন্দুদের অনেকে ফার্সি ভাষা শিখতেন।
আবার রাষ্ট্র পরিচালনা এবং জনসংযোগের জন্য মুসলিম আলেমদের সংস্কৃত জানাটা ছিল দরকারী। এ সকল প্রতিষ্ঠানে হাতে লেখা বই ব্যবহৃত হতো। ইংরেজদের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার আগ পর্যন্ত এই তিন ধারাই ছিল চট্টগ্রামের শিক্ষার মূল বৈশিষ্ট্য। ১৭৬০ সালে কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠত হলেও ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারের কোন উদ্যোগ দেখা যায় নি, সমগ্র ভারত বর্ষে।
১৭৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতা মাদ্রাসা ছাড়া শিক্ষা বিস্তারে কোম্পানির আর কোন উদ্যোগ ছিল না। ১৮১৩ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারতে শিক্ষা বিস্তারের জন্য আইন পাশ করে। এর পর ভারতের বিভিন্ন স্থানে মিশনারী স্কুলের সংখ্যা বাড়ে তবে ১৮৩৬ এর আগে চট্টগ্রামে সে মাপের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে নি। ১৮৩৬ সালে জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন চট্টগ্রাম জেলা স্কুল নামে প্রথম ইংরেজি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান চালু করে। এলাকার খ্রীস্টান মিশনারীরা ১৮৪১ সালে সেন্ট প্লাসিড্স হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৪৪ সালে ভারতের বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জ রাজকার্যে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ইংরেজি জানা আবশ্যক ঘোষণা করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ে। ১৮৫৬ ও ১৮৭১ সালে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হলেও সেগুলো ছিল স্বল্পস্থায়ী। ১৮৬০ খ্রীস্টাব্দে মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল প্রতিষ্ঠত হয়। ১৮৮৫ সালে শেখ-ই-চাটগাম কাজেম আলী চিটাগাং ইংলিশ স্কুল নামে একটি মধ্য ইংরেজি স্কুল (অর্থাৎ ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৮৮ সালে এটি হাই স্কুলে উন্নীত হয়। চট্টগ্রাম অঞ্চলের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), যা শহরের ২২ কিলোমিটার উত্তরে চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র হাটহাজারী থানায় অবস্থিত।
- চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এ কারিগরি ও প্রকৌশলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা প্রদান করা হয়।
- চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (চিভাসু) দেশের একমাত্র ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়।
- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
- বাংলাদেশ মেরিন ফিশারীজ একাডেমী
- বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে রয়েছে
- বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ (বিজিসিটাব),
- ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি)
- আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম,
- প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়,
- চট্টগ্রাম ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ)।
- সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
- ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম মা-ও-শিশু হাপাতাল মেডিক্যাল কলেজ শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র।
এছাড়া শহরে বেসরকারী মেডিকেল কলেজ ইউএসটিসি, বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, মা ও শিশু হাস্পাতাল মেডিকাল কলেজ, সাউদার্ন মেডিক্যাল কলেজ, চট্টগ্রাম ডেন্টাল কলেজ রয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয় গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
- বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম
- খাজা আজমেরী কে.জি এবং উচ্চ বিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ
- সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়
- ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ
- চট্টগ্রাম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়
- বাকলিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়
- ডা. খাস্তগীর সরকারী বালিকা বিদ্যালয়
- বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়
- সেন্ট প্লাসিড্স হাই স্কুল
- সেন্ট স্কলাসটিকা
- পি এইচ আমীন একাডেমী
- নাসিরাবাদ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম সেনানিবাস উচ্চ বিদ্যালয়
- হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয়
- চ.বি. স্কুল এন্ড কলেজ
- অপর্ণাচরণ সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ
- মহসিন স্কুল
- রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
- হাতে খড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ,
- কলকাকলি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়,
- গোসাইলডাঙ্গা কে.বি.দোভাষ সিটিকর্পোরেশন বালিকা বিদ্যালয়,
- বারিক মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়,
- জে.আর.কে উচ্চ বিদ্যালয়,
- আগ্রাবাদ বালিকা বিদ্যালয়,
- কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়,
- উত্তর মাদার্শা উচ্চ বিদ্যালয়,
- ফতেয়াবাদ আদর্শ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়,
- এ.এল.খান উচ্চ বিদ্যালয়
- অ্যামবিশন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ইত্যাদি।
উল্লেখযোগ্য কলেজের মধ্যে রয়েছে-
- চট্টগ্রাম কলেজ,
- সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ,
- সরকারি কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম,
- সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম,
- বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম ,
- চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ
- চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ,
- সরকারী কমার্স কলেজ,
- বাকলিয়া সরকারি কলেজ,
- ফতেপুর মঞ্জুরুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা,
- বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল ও কলেজ,
- ইসলামিয়া কলেজ, চট্টগ্রাম,
- আশেকানিয়া আউলিয়া কলেজ
- ডাঃ ফজলুল-হাজেরা কলেজ,
- হাটহাজারী কলেজ
- আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ
ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে আছে সানশাইন গ্রামার স্কু্ল, চিটাগাং গ্রামার স্কুল, বে ভিউ, লিটল জুয়েলস, সামাফিল্ডস স্কুল, রেডিয়্যান্ট স্কুল, সাউথ পয়েন্ট স্কুল, সাইডার ইন্টা্ন্যাশনাল স্কুল,মাস্টারমাইন্ড স্কুল,চাইল্ড হেভেন স্কুল, প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। শহরের একমাত্র আমেরিকান কারিকুলাম ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উইলিয়াম কেরি একাডেমি।
এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুন্নি আক্বিদা ভিত্তিক মাদ্রাসা জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসা চট্টগ্ৰামে অবস্থিত। আরেকটি উল্লেখযোগ্য মাদ্রাসা হলো বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা |
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
- ড: জামাল নজরুল ইসলাম
- প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
- বিনোদবিহারী চৌধুরী
- ড. অনুপম সেন
- মুহাম্মদ ইউনূস
- সূর্য সেন
- একে খান
- খান বাহাদুর বদি আহমদ চৌধুরী
- ড.আব্দুল করিম
- ড.অছিয়র রহমান
- প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী
- সৈয়দ আহমদুল্লাহ মাইজভান্ডারী
- মুহাম্মদ ইব্রাহিম (পদার্থবিজ্ঞানী)
- নুরুল ইসলাম
- ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক
- আল্লামা এম. এ. মান্নান
- আ জ ম নাছির উদ্দিন
- এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী
- আবদুল হক (বীর বিক্রম)
- আবদুল করিম (বীর বিক্রম)
- এম হারুন-অর-রশিদ (বীর প্রতীক)
- আবদুল গফুর হালী
- সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
- আবুল ফজল (সাহিত্যিক)
- আহমদ ছফা
- আহমদ শরীফ
- মাহবুব উল আলম চৌধুরী (কবি)
- মাহাবুব উল আলম (সাহিত্যিক)
- শাবানা
- শাহ মুহম্মদ সগীর
- শেফালী ঘোষ
- শ্যামসুন্দর বৈষ্ণব
- আসকর আলী পন্ডিত
- রমেশ শীল
- সত্য সাহা
- কুমার বিশ্বজিৎ – শিল্পী
- আইয়ুব বাচ্চু – শিল্পী
- তামিম ইকবাল – ক্রিকেটার
- আফতাব আহমেদ – ক্রিকেটার
- পার্থ বড়ুয়া – গায়ক,শিল্পী
- সুকুমার বড়ুয়া – লেখক
- সুব্রত বড়ুয়া – লেখক
- সুজন বড়ুয়া – লেখক
দর্শনীয় স্থান
- পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত,
- ফয়’স লেক,
- চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা,
- হযরত শাহ আমানত (র:) এর মাজার,
- হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (র:) এর দরগাহ,
- জাতিতাত্ত্বিক যাদুঘর,
- ওয়ার সিমেট্রি,
- জাম্বুরী পার্ক,
- ডিসি হিল,
- বাটালি হিল,
- কোর্ট বিল্ডিং (জেলা প্রশাসকের কার্যালয়),
- বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক (সীতাকুন্ড),
- চন্দ্রনাথ পাহাড় (সীতাকুন্ড),
- বাঁশখালী ইকোপার্ক,
- বাঁশখালী খানখানাবাদ সমুদ্র সৈকত,
- বাঁশখালী চা বাগান,
- পারকি সমুদ্র সৈকত (আনোয়ারা),
- মহামায়া লেক,
- মহুরি প্রজেক্ট,
- খৈইয়াছরা ঝরনা (মিরসরাই),
- বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত,
- গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত(সীতাকুণ্ড)।
- বাটারফ্লাই পার্ক
- সিআরবি
- মাইজ ভান্ডার দরবার শরীফ (ফটিকছড়ি)
- হযরত মিনকিন শাহ (রহঃ) চকবাজার
- হযরত গরীব উল্ল্যাহ শাহ (রহঃ) জিসি মোড়
- হযরত কালু শাহ (রহঃ) ফকিরহাট
- হযরত বদর শাহ (রহঃ) পাথরঘাটা
- হযরত মনির উদ্দিন রুহুল্লাহ (রহঃ) হালিশহর
- হযরত বশির শাহ (রহঃ) মাইজভাণ্ডারী, হালিশহর
- হযরত আব্দুল আলী শাহ (রহঃ, খাজা মঞ্জিল, দক্ষিণ কাট্টলী, নছর উল্ল্যাহ চৌধুরী বাড়ি, ফইল্ল্যাতলী বাজার সংলগ্ন, পাহাড়তলি, চট্টগ্রাম।
- হযরত শাহ মোহসেন আউলিয়া (রহঃ) আনোয়ারা
- হযরত শের এ বাংলা শাহ (রহঃ) অক্সিজেন
- হযরত মঈন উদ্দিন শাহ (রহঃ) কার্নেল হাট
- হযরত আলী শাহ (রহঃ) হালিশহর
- হযরত আফজাল ফকির (রহঃ)
- হযরত নুর আলী শাহ (রহঃ) আব্দুর পাড়া, হালিশহর।
ভ্রমণব্যবস্থা
ঐতিহাসিক স্থানসমূহঃ
- লালদিঘী ও লালদিঘী ময়দান,
- বদর আউলিয়ার দরগাহ
- ((হযরত শাহ আমানত শাহ(রা:)এর দরগাহ))
- বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার,
- চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ভবন,
- আদালত ভবন,
- চেরাগী পাহাড়,
- জে এম সেন হল,
- প্রীতিলতার স্মৃতি স্মারক,পাহাড়তলী।
পার্ক , বিনোদন ও প্রাকৃতিক স্থানঃ
- ফয়েজ লেক,
- জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর,
- মুসলিম হল,
- স্বাধীনতা পার্ক,
- ডিসি হিল,
- কর্ণফুলী শিশুপার্ক,
- পতেঙ্গা সমূদ্র সৈকত,
- পতেঙ্গা বাটারফ্লাই পার্ক,
- ফয়েজ লেক ওয়াটার ল্যান্ড,
- কাজির দেউরি জাদুঘর,
- বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি,
- বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্ক, সীতাকুণ্ড,
- ভাটিয়ারী গল্ফ ক্লাব,
- জাম্বুরি পার্ক
- চুনতি অভয়ারণ্য – জাতিসংঘ পুরষ্কার প্রাপ্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি,
- লোহাগাড়া,
- রাঙ্গামাটি,
- বান্দরবান,
- খাগড়াছড়ি,
- বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার,
- সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ।
স্মৃতিসৌধ ও স্মারকঃ
- কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার,
- কমনওয়েলথ ওয়ার সেমেট্রি চট্টগ্রাম।