যমজ ভাইদের পরিবারে যমজ বোনদের সংসার

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার সন্ধ্যা নদীর পশ্চিম তীরের গ্রাম মাঝিবাড়ি। বুধবার বিকেলে এ গ্রামের কর্মকারবাড়ি গিয়ে দেখা গেল শতাধিক নারী-পুরুষের ভিড়। সবাই চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক নিয়ে আলোচনা করছিলেন সজল-সোনালী এবং কাজল-রূপালীর নতুন সংসার নিয়ে।

মাঝিবাড়ি গ্রামের মৃত নিখিল চন্দ্র কর্মকারের যমজ দুই ছেলে সজল কর্মকার ও কাজল কর্মকারের সঙ্গে সোমবার রাতে বিয়ে হয় যমজ দুই বোনের। তারা হলেন বরিশাল নগরীর নাজিরমহল্লা এলাকার বাসিন্দা স্বপন কর্মকারের মেয়ে সোনালী কর্মকার ও রূপালী কর্মকার। সোনালীর সঙ্গে সজল কর্মকারের ও সোনালীর বোন রূপালী কর্মকারের সঙ্গে কাজল কর্মকারের বিয়ে হয়। সজল-কাজল স্বরূপকাঠির ইন্দেরহাট বন্দরে স্বর্ণের ব্যবসা করেন। সোনালী বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী এবং রূপালী এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন।

যমজ দুই ভাইয়ের পরিবারিক সূত্র জানায়, মাস কয়েক আগে দুই পরিবারের মধ্যে বিয়ের আগের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। সোমবার রাতে নির্ধারিত দিনে সোনালী-রূপালীর বাবার বাড়িতে জাঁকজমক আয়োজনে ধর্মীয় রীতিতে বিয়ে হয়।

যমজ দুই বরের বাড়িতে এখন চলছে বৌভাতের আয়োজন। শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠিত হবে বৌভাত। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীসহ ৫০০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সজল কর্মকার।

সজল-কাজল যমজ দুই বোনকে বিয়ে করে বাড়ি ফেরার পর থেকেই প্রতিবেশীসহ আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ আসছেন

তাদের দেখতে। এ বিয়ে নিয়ে পুরো সোহাগদল ইউনিয়নে হই চই পড়ে গেছে।

সজল-কাজলের মা পুতুল কর্মকার বলেন, ঈশ্বরের ইচ্ছায় তাদের বিয়ে হয়েছে। আমার মেয়ে নেই; একসঙ্গে দুই মেয়ে পেয়েছি। তাদের জন্য সবাই আশীর্বাদ করবেন। সজল কর্মকার বলেন, ৬ বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর ভাই কাজলকে নিয়ে ব্যবসার হাল ধরি। বিয়ে করে মাকে খুশি করতে পেরেছি। আমরা দুই ভাই বন্ধুর মতো। সারাজীবন একসঙ্গে থাকব। সজলের স্ত্রী সোনালী কর্মকার বলেন, আমাদের দুই বোনের জন্ম একসঙ্গে, সাতপাকে বাঁধাও পড়েছি একসঙ্গে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের একই ঘরে পাঠিয়েছেন। এ জন্য আমরা খুব খুশি।

যমজ কনের বাবা স্বপন কর্মকার বলেন, সৃষ্টিকর্তা মেয়েদের একটি ভালো ঘর দিয়েছেন। তারা জন্ম থেকে বড় হয়েছে একসঙ্গে; স্বামীর ঘরও একসঙ্গে করতে পারবে। একে অন্যের সহযোগিতায় পাশে থাকবে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!