শীতে পা ফাটা ভাবনা আর নয়

শীতে পা ফাটা ভাবনা আর নয়। শীতের শুরুতেই অনেকেরই পা ফাটছে। এর কারণ পায়ের প্রতি যত্নবান না হওয়া। যেভাবে মুখের বা চুলের যত্ন নেন শীতকালে তার চেয়েও বেশি যত্ন নেওয়া উচিত পায়ের। কারণ, আপনার পা কিন্তু ধুলোবালির সংস্পর্শে বেশি আসে।

শীতের দিনে পা ফাটার একটা সমস্যা। তবে এখনও খুব দেরি হয়নি, আজ থেকেই যদি আপনি প্রচেষ্টা শুরু করেন, তা হলে তীব্র শীতেও পা থাকবে মখমলি কোমল।

যাদের পা ফাটার সমস্যা খুব বেশি ভোগায়, তাদের রাস্তায় বের হওয়া মানেই মোজার সঙ্গে পা ঢাকা জুতা পরুন। বিশেষ করে গোড়ালি ঢাকা জুতা। শীতের কয়েকটা মাস পা ঢাকা পিপ টো, ব্যালেরিনা, মোজরি বা পাম্প শুর উপর আস্থা রাখুন। স্নিকার্স তো সত্যিই ভালো অপশন।

স্নানের পর পায়ে ময়েশ্চরাইজার লাগিয়ে নেওয়া আবশ্যক, তারপর পা ঢাকা জুতা পরার আগে ভালো করে ক্রিম মেখে মোজা পরে ঢাকা জুতা পরলে সুস্থ থাকবে গোড়ালি।

  1. প্রতিদিন কাজকর্মের শেষে বাড়িতে ফিরে অন্তত মিনিট ২০ পা ডুবিয়ে রাখুন শ্যাম্পু মেশানো উষ্ণ পানিতে।
  2. তুলে পামিস স্টোন বা ঝামাপাথর দিয়ে ঘষে নিয়ে একবার ধুয়ে নিন, তার পর ক্রিম মেখে, চটি পরে নিন।
  3. রাতে সোয়ার সময় ডিপ ময়েশ্চরাইজার লাগিয়ে নিন।
  4. পায়ের ত্বকের মৃত কোষ প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে, জমতে দিলেই কিন্তু কড়া পড়ার আশঙ্কা বাড়বে।
  5. চালের গুঁড়া, মধু, লেবুর রস, দুধের সর দিয়ে ঘরোয়া স্ক্রাব তৈরি করে নিন। ফুটবাথ নেওয়ার পর এই প্যাক লাগিয়ে খানিকক্ষণ রাখুন।
  6. শুকিয়ে গেলে ঘষে ঘষে তুলবেন।

শীতে পা ফাটা রোধ করবে ৫ উপায়

শীতে পায়ের পাতা ফেটে যাওয়ার কারণের অনেকেই জটিল সমস্যায় ভোগেন। এমনকি চামড়া ফেটে গিয়ে রক্ত বের হওয়ার ঘটনাও ঘটে। তাদের ক্ষেত্রে শীতে কিছু সাবধনতা অবলম্বন করতে হবে।

মোজা পরে থাকা: শীত অল্প পড়লেও মোজা পরার অভ্যেস করতে হবে। কারণ এতে করে ঠান্ডা, দূষণ, ধুলোবালি সব কিছুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। মোজা যে শুধু পায়ের সুরক্ষা দেবে তা নয় পোশাকের সাথে মিলিয়ে মোজা পরলে নিজস্ব স্টাইলও তৈরি হবে।

লবণ পানিতে পা ভেজানো: অর্ধেক বালতি ঈষদুষ্ণ জলে এক চিমটি লবণ দিয়ে যদি পা ২০ থেকে ২৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখা যায় তবে বেশ আরাম পাওয়া যাবে। শুধু যাদের পা ফাটার সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে পা ভালো রাখতেও খুব কার্যকর লবণ পানি।

স্ক্রাবিং: বাজারে পিউমিস কিনতে পাওয়া যায়। পিউমিস দিয়ে পা স্ক্রাব করলে পায়ে সহজে ময়লা জমে না।

তেল ও ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার: গোসলের আগে এবং পরে ভালো করে তেল ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এতে করে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

স্টেরয়েড ক্রিম লাগানো: যদি এর পরেও পা ফাটা না কমে, তখন স্টেরয়েড ক্রিম দেন চিকিৎসকেরা। টানা এক বা দেড় মাস ওই ক্রিম লাগালে অনেকটাই উপকার পাওয়া যায়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনও এ ধরনের ক্রিম ব্যবহার করা উচিত নয়।

পা ফাটার এই সমস্যাগুলির অধিকাংশই আগেভাগে সতর্ক হলে এড়ানো সম্ভব। ওষুধ খাওয়ার মতো বাড়াবাড়ি পর্যায়ে তা খুব কম ক্ষেত্রেই পৌঁছায়। তবে পা ফাটা আদৌ চর্মরোগ না কি শীতের ফাটা, সে সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি।

জেনে নিন শীতে পা ফাটা সমাধানের উপায়

শুরু হচ্ছে শীত মৌসুম। শীতে অনেক সমস্যার মধ্যে পা ফাটা একটি প্রধান সমস্যা । পা ফাটলে হাঁটতে অসুবিধা হয়। তবে পা ফাটার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। ঘরে বসেই সমাধান করতে পারেন এই সমস্যার । চলুন সেগুলো জেনে নিই-

শক্ত জুতা নয়

শীতকালে শক্ত নয়, নরম জুতা পরুন। অবশ্যই ঢাকা জুতা পরবেন। পা খোলা থাকে এমন জুতা বা স্যান্ডেল এড়িয়ে চলুন। পারলে মোজা পরুন। মোজা পরার আগে পায়ে কোনো ক্রিম লাগিয়ে নিতে পারেন।

 

পা ঘষুন

প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে গরম পানিতে পা ভেজান। এবার একটু সাবান লাগিয়ে ঝামা পাথর বা ফুট ব্রাশ দিয়ে পা ভালো করে ঘষে নিন। এতে মরা কোশ, ময়লা সব উঠে আসবে। সেই সঙ্গে গোড়ালিও থাকবে পরিষ্কার।

লেবু ও গরম পানি

হালকা গরম পানিতে লেবুর রস ও এক চিমটি খাবার সোডা মিশিয়ে ১৫ মিনিট তার মধ্যে পা ডুবিয়ে রাখুন। এরপর ফুট ব্রাশ দিয়ে পা পরিষ্কার করে ফেলুন। নিয়ম করে এটি করলে পা ফাটার সমস্যা থাকবে না।

গোলাপজল আর গ্লিসারিন

গোলাপজল আর গ্লিসারিনের মিশ্রণ পায়ের ফাটা, চামড়ার ক্ষয় অনেকটাই সারিয়ে তুলতে পারে।কারণ গ্লিসারিন আপনার রুক্ষ শুকনো চামড়াকে এমনিতেই নরম করে,এবং গোলাপজলে থাকা ভিটামিন এ, বি৩,সি, ডি,ই আর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আপনার পাকে মসৃণ করে তোলে।

কলা-মধুর মিশ্রণ

গরম পানিতে পা ডুবিয়ে সাবান দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। এবার পাকা কলা আর মধু দিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। ওই পেস্ট পায়ে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। শুকিয়ে এলে গরম পানি দিয়েই ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’দিন করলে ভালো ফল পাবেন।

ভেজিটেবল অয়েল

পা ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। এবার ভেজিটেবল অয়েল বা নারকেল তেল ভালো করে লাগিয়ে নিন। মোজা পরে শুড়ে পড়ুন। দেখবেন পা নরম থাকবে সেই সঙ্গে ফাটা দাগও মিলিয়ে যাবে।

শীত পড়তেই পায়ের পাতা আর গোড়ালি ফাটছে?
জেনে নিন ৩টি অব্যর্থ সমাধান

শীতকাল এলেই সর্দি-কাশির সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এই সময় ময়শ্চারাইজার ব্যবহার না করলে ত্বক ফাটতে পারে। একই কারণে পায়ের গোড়ালি বা পায়ের তলাও ফেটে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। ফাটা পায়ের তলা বা গোড়ালি নিয়ে হাঁটা চলা করাটাও বেশ কষ্টকর। ফাটা গোড়ালি নিয়ে রাস্তাঘাটে হাঁটা চলা করতে গিয়ে ত্বকের ফাটা অংশে ধুলো লেগে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে।

এর জন্য বাজারে নানা রকমের ক্রিম পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলিতে ব্যবহৃত রাসায়নিকের জন্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ঘরোয়া পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে পায়ের ফাটা গোড়ালির সমস্যা থেকে সহজেই রেহাই পাওয়া যেতে পারে। আসুন সেগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

১) নারকেল ও কলার ফুট মাস্ক: পা ফাটার সমস্যা মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে এই ফুট মাস্কটি ব্যাবহার করার চেষ্টা করুন। সমস্যার সমাধান হবে খুব দ্রুত।

উপকরণ: টুকরো করে কাটা কলা, লম্বা করে কাটা ৩-৪ টুকরো নারকেল।

পদ্ধতি: একটি কলা টুকরো করে নিয়ে এর সঙ্গে টাটকা ৩-৪ টুকরো নারকেল একসঙ্গে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন বা ভাল করে বেটে নিন। এর পর এই মিশ্রণটি পায়ের ফাটা জায়গায় ভাল করে লাগিয়ে নিন। প্যাক শুকিয়ে গেলে সামান্য উষ্ণ গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। যদি হাতের কাছে তাজা নারকেল না-ও পান তবে একটি কলা চটকে নিয়ে তাতে ২-৩ চামচ নারকেল তেল দিয়ে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করেও লাগাতে পারেন। উপকার পাবেন।

২) চাল বাটা ও তেল: পা ফাটার সমস্যার সমাধানে সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে প্রাকৃতিক স্ক্রাবার ব্যাবহার। ঘরোয়া ভাবে তৈরি এই স্ক্রাবটি প্রতিদিন ব্যাবহার করে খুব দ্রুত পা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

উপকরণ: ২-৩ চামচ চাল, অলিভ অয়েল, সাদা ভিনেগার ও মধু।

পদ্ধতি: প্রথমে চাল একটু ভিজিয়ে রেখে ভাল করে বেটে নিন। খুব মিহি করে বাটবেন না। এর পর এর সঙ্গে ৩ চামচ ভিনেগার আর ২ চামচ মধু দিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন।

এ বার একটি বড় পাত্রে সামান্য উষ্ণ গরম জলেতে ১০-১৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন। এর পর ভেজা পায়ে ঘন পেস্টটি ভাল করে মালিশ করুন। মালিশ করার পর ১০ মিনিট রেখে দিন। এর পর সামান্য উষ্ণ গরম জল দিয়ে ধুয়ে ভাল করে পা মুছে নিন। এর পর সামান্য অলিভ অয়েল গরম করে নিয়ে পায়ে মালিশ করুন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই প্যাক ব্যবহার করলে পা ফাটায় দ্রুত ভাল ফল পাবেন।

৩) গ্লিসারিন ও গোলাপ জলের ফুট মাস্ক: ফাটা গোড়ালি সমস্যায় প্রাথমিক পর্যায়ে এই ফুট মাস্ক ব্যবহার করে দ্রুত উপকার পাওয়া যেতে পারে।

উপকরণ: ফুট মাস্কের জন্য আপনার লাগবে নুন, লেবুর রস, গ্লিসারিন, গোলাপ জল ও সামান্য উষ্ণ জল।

পদ্ধতি: একটি বড় পাত্রে ২ লিটার সামান্য উষ্ণ গরম জল নিয়ে তাতে ১ চামচ নুন, ১ টি গোটা লেবুর রস, ১ কাপ গোলাপ জল দিয়ে এতে অন্তত ১০-১৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন। এর পর খসখসে কিছু একটা দিয়ে যেমন, পেডিকিউরের পিউমিস স্টোন দিয়ে পায়ের গোড়ালি ভাল করে ঘষে শক্ত, মোটা ও মরা চামড়া তুলে পা ধুয়ে ফেলুন।

এর পর ১ চামচ লেবুর রস, ১ চামচ গ্লিসারিন ও ১ চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে পায়ে লাগান। এ ভাবে সারা রাত রেখে দিন। সকালে উঠে সামান্য উষ্ণ গরম জল দিয়ে পা ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার ব্যাবহারে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই পা ফাটা একেবারে সেরে যাবে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!