খুলনা ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পরে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। খুলনা জেলা এবং খুলনা বিভাগের সদর দপ্তর এই খুলনা শহরে অবস্থিত। খুলনা বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে রূপসা এবং ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত।
খুলনা | ||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মহানগরী | ||||||||
উপর হতে: খুলনা শহর, গল্লামারী বধ্যভূমি, খান জাহান আলী সেতু ,
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা মেডিকেল কলেজ, খুলনা নগর ভবন |
||||||||
ডাকনাম: শিল্পনগরী, সাদা সোনার শহর, বাংলার কুয়েত সিটি, সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার | ||||||||
খুলনার অবস্থান
|
||||||||
স্থানাঙ্ক: ২২°৪৯′০″ উত্তর ৮৯°৩৩′০″ পূর্বস্থানাঙ্ক: ২২°৪৯′০″ উত্তর ৮৯°৩৩′০″ পূর্ব | ![]() |
||||||||
দেশ | বাংলাদেশ | |||||||
প্রশাসনিক জেলা | খুলনা জেলা | |||||||
পৌর পদমর্যাদা অর্জন | ১৯৮৪ | |||||||
সিটি কর্পোরেশন অর্জন | ১৯৯০ | |||||||
সরকার | ||||||||
• মেয়র | তালুকদার আব্দুল খালেক (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) | |||||||
আয়তন | ||||||||
• মহানগরী | ৩৬.২১ কিমি২ (১৩.৯৮ বর্গমাইল) | |||||||
জনসংখ্যা (২০০৮ প্রতিষ্ঠা) | ||||||||
• মহানগরী | ১০,০০,০০০ | |||||||
• জনঘনত্ব | ১৪৩৬৪/কিমি২ (৩৭২০০/বর্গমাইল) | |||||||
• মহানগর | ১৫,০০,০০০ | |||||||
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) | |||||||
জাতীয় কলিং কোড | +৮৮০ | |||||||
কলিং কোড | ০৪১ | |||||||
শিক্ষার হার | ৫৯.১% | |||||||
পুলিশ | খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ | |||||||
বিমানবন্দর | খান জাহান আলী বিমানবন্দর | |||||||
ভাষা(সমূহ) | বাংলা(দাফতরিক) | |||||||
ওয়েবসাইট | http://www.khulnacity.org |
বাংলাদেশের প্রাচীনতম নদী বন্দরগুলোর মধ্যে খুলনা অন্যতম। খুলনা বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় খুলনাকে শিল্প নগরী হিসেবে ডাকা হয়। খুলনা শহর থেকে ৪৮ কি.মি. দূরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলা সমুদ্র বন্দর অবস্থিত। পৃথিবী বিখ্যাত উপকূলীয় বন সুন্দরবন খুলনা জেলার দক্ষিণাংশে অবস্থিত।
খুলনাকে সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার বলা হয়। রাজধানী ঢাকা থেকে খুলনা শহরের দূরত্ব সড়কপথে ৩৩৩কি.মি.। রাজধানী সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সংগে স্থলপথ, আকাশপথ, জলপথ ব্যবহার করা যায়। ১৯১২ সালে থেকে অত্র অঞ্চলে নদীপথে স্টিমার (স্টিমবোট) চলাচল করে।
নামকরণ
খুলনা সদরের নামে খুলনা বিভাগের নামকরণ করা হয়েছে। প্রচলিত মতানুসারে খুলনা শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ভৈরব নদীর তীরে খুল্লেনেশ্বরী দেবীর মন্দির ছিলো এবং এই দেবীর নামানুসারে খুলনা অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছে।
মেট্রোপলিটন থানা
- জিরো পয়েন্ট, খুলনা
- দৌলতপুর থানা
- খালিশপুর থানা
- খান জাহান আলী থানা
- সোনাডাঙ্গা থানা
- খুলনা সদর
- লবণচরা থানা
- আড়ংঘাটা থানা
- হরিণটানা থানা
আবহাওয়া ও জলবায়ু
গ্রীষ্মকালে খুলনার আবহাওয়া কিছুটা আর্দ্র এবং শীতকালে মনোরম। খুলনার বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ২৬.৩ °সে (৭৯.৩ °ফা) এবং মাসের তাপমাত্রা জানুয়ারীতে ১২.৪ °সে (৫৪.৩ °ফা) এবং মে মাসে ৩৪.৩ °সে (৯৩.৭ °ফা) এর মাঝে থাকে। খুলনায় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১,৮০৯.৪ মিলিমিটার (৭১.২৪ ইঞ্চি) । বছরের মোট বৃষ্টিপাতে ৮৭ ভাগ সংঘটিত হয় মে এবং অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে।
শিক্ষা
খুলনা শহরে ১৯০২ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারী বি. এল কলেজ এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার চাহিদা মিটিয়ে আসছে। ১৯৯১ সালে খুলনাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়। ২০০৩ সালে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় যা পূর্বে বাংলাদেশ ইনিষ্টিটিউট অব টেকনোলজি, খুলনা নামে পরিচিত ছিল।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২০১২ সালে সর্বপ্রথম নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করে। এছাড়া দৌলতপুর দিবা-নৈশ কলেজ, আজম খান কমার্স কলেজ, মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজ, সুন্দরবন কলেজ, শাহপুর মধুগ্রাম কলেজ, খুলনা পাবলিক কলেজ, পল্লিমঙ্গল বয়েজ ও গার্লস স্কুল, খুলনা জিলা স্কুল, করনেশন গার্লস স্কুল, পাইওনিয়ার কলেজ, আফিল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাইওনিয়ার স্কুল, মন্নুজান স্কুল, রটারি স্কুল, সেন্ট জোসেফ স্কুল, সেন্ট জেভিয়ারস স্কুল, খুলনা কলেজিয়েট স্কুল, ইকবাল নগর গারলস স্কুল, এছাড়া মাদ্রাসার মধ্যে দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা-খুলনা, খুলনা সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা খুলনার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম।
মাধ্যমিক শিক্ষার পর কারিগরি শিক্ষার জন্য খুলনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ও সিটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট আছে।খুলনা পাবলিক কলেজ এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাউথ-ইস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ,খুলনা অত্র অঞ্চলের বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
রাস্তাঘাট
খুলনার রাস্তাঘাট মোটামুটি ভাল এবং অনেক প্রশস্ত। এই শহরটি যানজট এর হাতে এখনও পড়েনি। তবে খুলনা থেকে যশোর যেতে আপনাকে একটু সমস্যা পোহাতে হতে পারে। এদিকের রাস্তাঘাট অনেক বেশিই খারাপ। শিল্প কল কারখানা গুলো ফুলতলায় গড়ে ওঠায় এই রাস্তাটি বেশ ভাঙাচোরা।
শিল্প
একসময় খুলনা শিল্পশহর হিসাবে বিখ্যাত হলেও বর্তমানে এখানকার বেশিরভাগ শিল্পই রুগ্ন। পূর্বে খুলনাতে দেশের একমাত্র নিউজপ্রিন্ট ও হার্ডবোর্ড মিল ছিল যা এখন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। খুলনার বেশির ভাগ পাটকলগুলোও একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।তবে সাগর জুট স্পিনিং মিলস (সেনহাটি ) ৫ দশ তার উৎপাদন ,রপ্তানি ও বাজারজাতকরণ ধরে রেখেছে সুনামের সাথে । বর্তমানে খুলনার উল্লেখযোগ্য শিল্প হল বেসরকারী উদ্যোগে গড়ে ওঠা রপ্তানীযোগ্য মাছ শিল্প। দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত তারশিল্প কারখানা বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেড খুলনায় অবস্থিত।
খুলনাকে এক সময় বলা হত রুপালি শহর। এর কারণ এই এলাকাতে প্রচুর পরিমাণ চিংড়ী উৎপাদন করা হত। এখনও হয়, যদিও কিছুটা কমে গেছে। আপনি খুলনার দৌলতপুরের মহসিন মোড় থেকে যতই পথ অতিক্রম করতে থাকবেন ততই দেখতে থাকবেন রাস্তার দূ ধার দিয়ে শুধু বিল আর মাছের ঘের। এসব ঘেরে সাদা মাছের সাথে চাষ হয় প্রচুর চিংড়ী। এবং খুলনার পাইকগাছা , দাকোপ , কয়রা উপজেলাতে লোনা পানি ঘের দেখা যায় সেখানে প্রচুর পরিমানে বাগদা চিংড়ি হয়। খুলনা অঞ্চলের ডুমুরিয়ার কিছু গ্রামে মৃৎশিল্পের অস্থিত্ব বিদ্যমান।এখানে মাটির টব কলসি হাড়ি পতিল তৈরি করে কুমোরেরা।
খুলনার দর্শনীয় স্থান সমূহ
- খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর
- খানজাহান আলী সেতু
- জাহানাবাদ বনবিলাস চিড়িয়াখানা ও শিশু পার্ক
- শহীদ হাদিস পার্ক
- জাতিসংঘ পার্ক
- রাজা ভরতের “ভরত ভায়না”, ভায়না,যশোর
- গল্লামারী লিনিয়ার পার্ক
- কবি কৃষ্ণ চন্দ্র ইনস্টিটিউট
- দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স
- গল্লামারী বধ্যভূমি ও স্মৃতিসৌধ
- বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি
- সোনাডাঙ্গা সোলার পার্ক
উল্লেখযোগ্য ব্যাক্তিবর্গ
- খান জাহান আলী (রঃ)
- বিজ্ঞানী প্রফুল্ল চন্দ্র রায়
- হরপ্রসাদ শাস্ত্রী – চর্যাপদের আবিষ্কর্তা
- নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
- কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
- নকশাল আন্দোলন সংঘটক সুশীতল রায় চৌধুরী
- বিপ্লবী ইন্দুভূষণ রায়
- সাহিত্যিক আনিস সিদ্দীকী
- মো. রফিকুল ইসলাম, সম্পাদক : পার্লামেন্ট ওয়াচ
- ঔপন্যাসিক কাজী আকরাম হোসেন
- মৃণালিনী দেবী (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহধর্মিনী)
- চিত্রনায়িকা মৌসুমী
- চিত্রনায়িকা পপি
- ক্রিকেটার শেখ সালাহউদ্দিন
- ক্রিকেটার আব্দুর রাজ্জাক
- রুমানা আহমেদ একজন বাংলাদেশী মহিলা ক্রিকেটার
- জাহানারা আলম একজন বাংলাদেশী মহিলা ক্রিকেটার
- মনোহর মৌলি বিশ্বাস
- শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বাঙালি সাহিত্যিক ও সম্পাদক
- মেহেদী হাসান মিরাজ ক্রিকেটার